বিদেশি ভ্লগারকে হেনস্তাকারী সেই ভিক্ষুক আটক
ঢাকায় অস্ট্রেলীয় ভ্লগার লুক ডামান্টকে হেনস্তা করা সেই ভিক্ষুককে আটক করেছে ট্যুরিস্ট পুলিশ। সোমবার (৩ এপ্রিল) আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ট্যুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) নাদিয়া ফারজানা।
তিনি বলেন, আমরা প্রাণান্তকর চেষ্টা করে যাচ্ছি যেন বিদেশি পর্যটক আসে আমাদের দেশে। আর সবকিছু ভণ্ডুল করার জন্য কিছু লোক বসে আছে। এজন্যই সকল সচেতন মানুষকে খেয়াল রাখতে হবে যেন আমাদের চোখের সামনে কেউ কোনো বিদেশি পর্যটককে যন্ত্রণা না করে। বিদেশি পর্যটকদের আমাদের এখানে আসা যে কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা বুঝতে হবে।
এদিকে তাকে গ্রেফতার করায় ট্যুরিস্ট পুলিশকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন লুক ডামান্ট। তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এ খবর জানিয়ে লিখেছেন, সকল দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য বাংলাদেশ ট্যুরিস্ট পুলিশকে বিশেষ ধন্যবাদ।
তিনি বলেন, এই ভিডিওটি পোস্ট করার পর থেকে, আমি বাংলাদেশের জনগণের কাছ থেকে ১০০০টির মতো বার্তা পেয়েছি। তারা আমার অভিজ্ঞতার জন্য দুঃখপ্রকাশ করেছে।
বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত কাটানো মুহূর্তগুলো অবিশ্বাস্য ছিল, কিন্তু প্রতিটি দেশেই সবসময় কিছু খারাপ লোক থাকবে। এই কয়েকজন ব্যক্তি কোটি কোটি সহৃদয়, অতিথিপরায়ণ এবং যত্নশীল বাঙালিদের প্রতিনিধিত্ব করে না।
আমি বাংলাদেশের সব জায়গা ঘুরে দেখতে এবং আশ্চর্যজনক সংস্কৃতিকে গ্রহণ করতে পেরে উত্তেজিত।
লুক ডামান্ট ওই ভিক্ষুককে আঘাত না করার অনুরোধ জানিয়ে লিখেছেন, আপনি যদি লোকটিকে বাংলাদেশে দেখেন, আমার অনুরোধ- দয়া করে তাকে আঘাত করবেন না বা খারাপ কিছু বলবেন না। প্রত্যেকেই জীবনে ভুল করে এবং তার পরিণতির মুখোমুখি হতে হবে।
সম্প্রতি হোটেল থেকে বেরিয়ে রাজধানীর একটি এলাকায় হাঁটছিলেন লুক ডামান্ত। সে সময় অনেকটা সাবলিল ইংরেজিতে লুক ডামান্টকে স্বাগত জানান ওই ব্যক্তি। তারপর রাস্তার পাশের ডিম কেক খাওয়ার সময় এই ভ্লগারের সঙ্গে কথা বলতে থাকেন ওই ভিক্ষুক। শেষ পর্যন্ত তার কাছ থেকে ২৫০ টাকাও চেয়ে নেন।
এরপরও বিদেশি ভ্লগারের সঙ্গে যেতে থাকেন তিনি। অনেকবার স্যার বলে সম্বোধন করেও তাকে ছাড়াতে পারেননি লুক ডামান্ট। শেষে তার কাছে অনুনয় বিনয় করে সাহায্য চান বয়স্ক ওই ব্যক্তি। এক পর্যায়ে তা অতিমাত্রায় পৌঁছায়। এ সময় লুক ডামান্ট মোবাইলে কল করার অভিনয় করে তার থেকে নিষ্কৃতি পান। শেষে তিনি এর জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন ও ওই ব্যক্তিকে এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেন।
এই ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে রীতিমত ভাইরাল হয়। এরপরই বাংলাদেশি নেটিজেনরা এই ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেন। অনেকে ওই ব্যক্তিকে গ্রেফতারের আবেদন জানান।