December 23, 2024
জাতীয়বিশেষ সংখ্যা

বিজয়ের মাস ডিসেম্বর

দ: প্রতিবেদক

আজ বিজয়ের মাস ডিসেম্বরের তৃতীয় দিন। যদিও একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে ডিসেম্বরের প্রতিটি দিনই ছিল বাঙালির বিজয়ের দিন। একেকটি দিন যাচ্ছে আর একটি করে বিজয়ের বার্তা আসছে স্বাধীনতাকামী বাঙালির কাছে। ইতোমধ্যেই লাখ লাখ বাঙালি উদ্বাস্তু হয়ে নিজ বাসভূমি ছেড়ে আশ্রয় নেয় ভারতে। এ সময় মুক্তিবাহিনীর প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয় ভারতীয় সেনাবাহিনী। ভারতের বিরুদ্ধে আকস্মিক যুদ্ধ শুরু করে পাকিস্তান। পাকিস্তানি ঘাঁটিগুলোতে আক্রমণ শুরু করে ভারতীয় বিমানবাহিনী। এ অবস্থায় হানাদার পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে একাত্তরের ৩ ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে কমান্ড বুঝে নেয় বাংলাদেশ-ভারত মিত্রবাহিনী। যৌথ আক্রমণে ধরাশায়ী হতে থাকে দখলদার বাহিনী।

বিপুল শক্তি নিয়ে মিত্রবাহিনীর সেনারা ঝাঁপিয়ে পড়ে পাকবাহিনীর ওপর। ডিসেম্বরে ভারতীয় সেনাবাহিনীর ইস্টার্ন কমান্ডের সদর দফতর কলকাতার ফোর্ট উইলিয়াম থেকে সংকেত পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মুক্তিবাহিনী ও ভারতীয় বাহিনী চারদিক দিয়ে বাংলাদেশে ঢুকে পড়ে। ভারতীয় সেনাবাহিনীর চৌকস সেনারা সব বাধা অতিক্রম করে এগিয়ে যেতে শুরু করে বাংলাদেশের ভেতরে। ভারতের নবম ডিভিশন এগিয়ে যায় গৌরীপুর ও জগন্নাথপুর দিয়ে যশোর-ঢাকা মহাসড়কের দিকে, চতুর্থ ডিভিশন কালীগঞ্জ-ঝিনাইদহের দিকে। ২০তম ডিভিশন তাদের দায়িত্ব দুই ভাগ করে একটি অংশ যায় হিলির পাক-ঘাঁটির মোকাবিলা করার জন্য, আরেক অংশ যায় পুবদিকে। ষষ্ঠ ডিভিশন তিন ভাগ হয়ে একটি তেঁতুলিয়া ও ঠাকুরগাঁওয়ের দিকে, আরেকটি পাটগ্রাম থেকে ঠাকুরগাঁওয়ের দিকে এবং অন্যটি কোচবিহার থেকে নাগেশ্বরী কুড়িগ্রামের দিকে এগিয়ে যায়। উত্তরে মেঘালয়ের দিকে দুটি ব্রিগেড তৈরি করা হয়। তারাও ৩ ডিসেম্বর রাতে দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে এগিয়ে যায়।

পাকিস্তানের বিমানবাহিনী ভারতীয় বিমানবাহিনীর ১১টি স্থাপনা ও রাডার স্টেশনে হামলা চালায়। নিজেদের জন্য আরও বিপদ ডেকে আনে তারা। ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী দ্রুততার সঙ্গে জাতির উদ্দেশে বেতার ভাষণ দেন। জরুরি অবস্থার ঘোষণা দিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের যুদ্ধ এখন ভারতের বিরুদ্ধে যুদ্ধ হয়ে উঠেছে।

ঢাকা ও এর আশপাশে পাকিস্তানি সামরিক লক্ষ্যবস্তুর ওপর হামলা চালায় ভারতীয় বিমানবাহিনী। আকাশে ভারতীয় বিমান আর স্থলভাগে দুই বাহিনীর সম্মিলিত আক্রমণ। এ সময় বাংলাদেশ বাহিনীর বহরে যোগ হয় আধুনিক যুদ্ধসরঞ্জাম। ফলে পাকিস্তানি প্রতিরক্ষাব্যূহ ভেঙে পড়তে থাকে। বিজয়ের অপেক্ষায় উজ্জীবিত হয়ে ওঠে অবরুদ্ধ ঢাকার মানুষ। বিচলিত হয়ে পড়ে পাকিস্তান বাহিনী। গ্রাম-জনপদে দেখা যায় মুক্তির আনন্দ।

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *