January 10, 2025
আঞ্চলিকলেটেস্ট

বিজেএমসি’র বিলুপ্তি চায় শ্রমিকরা

 

* পাটকল শ্রমিকদের কর্মবিরতির ১১তম দিন অতিবাহিত

 

দ: প্রতিবেদক

বিজেএমসি শ্রমিকদের পিতৃতুল্য প্রতিষ্ঠান, শ্রমিকরা দীর্ঘদিনে মজুরী না পেয়ে অনাহারে দিনাতিপাত করছে  আর এ প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা নিজেরা খেয়ে পরে শ্রমিকরদের অনাহারে রেখেছে। তাই এ প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজন নাই বলে মন্তব্য করেছেন রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল শ্রমিক লীগের খুলনা-যশোর অঞ্চলের আহŸায়ক মোঃ মুরাদ হোসেন।

তিনি আরও বলেন, প্রতিশ্রæতি দিয়ে চুক্তিকরে সে চুক্তি বাস্তবায়ন না করে শ্রমিকদে রাস্তায় নামিয়েছে। অনাহারী শ্রমিকদের এখন দেওয়ালে পিঠ ঠেকেছে তাই তাদের আরা যাবার জায়গা একটি, সেটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি (প্রধানমন্ত্রী) হয় দাবী পূরন করুন, না হয় আমাদের (শ্রমিকদের) মেরে ফেলুন বলে জানিয়েছে তিনি। এদিকে মজুরী  না পেয়ে শ্রমিক পরিবারে চলছে চরম হাহাকার।

ক্রিসেন্ট জুট মিলের শ্রমিক শফিক জানায়, পবিত্র রমজান মাস ছেলে মেয়েদের সামনে একদিনও ইফতারি দিতে পারি নাই বলে দুঃখ প্রকাশ করেন এ শ্রমিক। এভাবে প্রতিটি শ্রমিক পরিবারে চলছে চরম দুরাবস্থা। অসুস্থদের চিকিৎসা দেয়রও কোন সংঙ্গতিনেই তাদের।

বকেয়া পাওনা পরিশোধসহ ৯ দফা দাবিতে খুলনা-যশোর অঞ্চলের রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলের শ্রমিকরা কর্মবিরতির পাশাপাশি ৩ ঘন্টা রাজপথ-রেলপথ অবরোধ কর্মসূচি পালন করেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার ভোর ৬টায় স্ব স্ব কর্মস্থলে না যেয়ে পাটকলের প্রায় অর্ধলাখ শ্রমিকরা আন্দোলনের টানা ১১তম দিনে এ কর্মসূচি পালন করে।

পাটকল শ্রমিক লীগের ডাকে দীর্ঘদিন শ্রমিকরা রাজপথে আন্দোলন করছে। গতকাল কর্মবিরতির ১১দিনে ভোর ৬টায় শ্রমিকরা নিজ নিজ কর্মস্থলে না যেয়ে এ কর্মসূচি পালন করে। দুপুর সাড়ে ৩টায় ক্রিসেন্ট, প্লাটিনাম, খালিশপুর, দৌলতপুর, ষ্টার, আলীম, ইষ্টার্ণ, কার্পেটিং ও জেজেধাই জুট মিলের শ্রমিকরা থালা হাতে নিয়ে স্ব স্ব মিল গেটে সমবেত হয়। পরে বিকাল ৪টায় বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে নতুন রাস্তা মোড়, আটরা ও রাজঘাটের খুলনা-যশোর মহাসড়ক অবস্থান করে। পাওনার দাবিতে শ্রমিকরা মহাসড়ক ও রেললাইনের উপর বিক্ষোভ করতে থাকে। এ সময় শ্রমিকরা রাজপথে জামাতের সাথে আসরের নামাজ আদায় করে।

পরে  আন্দোলনকারীরা মহাসড়কের সকল যান ও রেললাইনে ট্রেন চলাচল বন্ধ করে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত রাজপথ রেলপথ অবরোধ কর্মসূচিতে অংশ নেয়। ফলে নতুন রাস্তা, আটরা ও নওয়াপাড়া শিল্প এলাকার প্রায় এক কিলোমিটার সড়ক জুড়ে যানজটের সৃষ্টি হয়। এতে চরম দূর্ভোগে পড়ে যাত্রীরা। ক্রিসন্টে, প্লাটিনাম, খালিশপুর, দৌলতপুর ও দিঘলিয়ার ষ্টার জুট মিলের শ্রমিকরা খালিশপুর নতুন রাস্তা মোড়, আটরা শিল্প এলাকার আলীম, ইর্ষ্টাণ জুট মিলের শ্রমিকরা আলীম মিল গেট খুলনা-যশোর মহাসড়ক এবং নওয়াপাড়ার কার্পেটিং ও জেজেআই জুট মিলের শ্রমিকরা রাজঘাট  শিল্প এলকায় অবরোধ স্থানেই বসে ইফতার করেন।

পরে পৃথক ৩ স্থানে খুলনা-যশোর মহাসড়কে মাগরিবের নামাজ পড়ে অবরোধ শেষ করে আন্দোলনকারীরা। অবরোধ চলাকালে এক সমাবেশে অনুষ্ঠিত হয়। এ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন পাটকল শ্রমিক লীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সরদার মোতাহার উদ্দীন, শ্রমিক নেতা মোঃ মুরাদ হোসেন, মোঃ সোহরাব হোসেন, শাহানা শারমিন, হুমায়ুন কবির, আবু দাউদ দ্বীন মোহাম্মদ, সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহীম হেমায়েত উদ্দীন আজাদী, আবু জাফর, মোঃ পান্নু মিয়া, খলিলুর রহমান, মোঃ তরিকুল ইসলাম, পাটকল শ্রমিক লীগ নেতা মাহমুদুল হাসান, এস এম আজম, আবু হানিফ, আব্দুল মজিদ বকুল, মোঃ সেলিম শিকদার, সরদার আলী আহম্মেদ, মোঃ সাহিদুল ইসলাম সাহিদ, আইয়ুব আলী, বেলায়েত হোসেন ও আবু হানিফ। আটরা ও নওয়াপাড়া শিল্প এলাকার আলীম, ইষ্টার্ণ, কার্পেটিং, জেজেআই জুট মিলের শ্রমিকদের সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সিবিএ-নন সিবিএ ও পাটকল শ্রমিক লীগের নেতারা এ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন।

শ্রমিক নেতা সোহরাব হোসেন জানান, বিজেএমসির অদক্ষ অযোগ্য কর্মকর্তাদের কারণে রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল আজ এ দুর্দশা গ্রস্থ হয়ে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে পৌছেছে। যাদের কারণে শ্রমিকরা আজ চরম অর্থনৈতিক সঙ্কটে পড়েছে। শ্রমিকদের ঘামে আর রক্তে অর্জিত অর্থ দিয়ে বিজেএমসি’র কর্মকতারা ভোগ-বিলাস করছে। আর শ্রমিকরা অনাহারে দিনাতিপাত করছে। তামাশা করা হচ্ছে শ্রমিকদের সাথে বলে তিনি মন্তব্য করেন। যে বিজেএমসি পাটকল ধ্বংস করেছে এমন বিজেএমসি চাইনা বলে তিনি জানান।

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *