বিজিবির গুলি: ক্ষতিপূরণ চেয়ে হাই কোর্টে রিট
দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক
ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুরে গরু জব্দ করা নিয়ে সংঘর্ষের মধ্যে বিজিবির গুলিতে নিহত ও ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর জন্য ক্ষতিপূরণ চেয়ে হাই কোর্টে রিট আবেদন করেছেন সুপ্রিম কোর্টের এক আইনজীবী। বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের হাই কোর্ট বেঞ্চ থেকে অনুমতি নিয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় জনস্বার্থে এই রিট আবেদন করেন আইনজীবী তনয় কুমার সাহা। তিনি বলেন, আগামী সপ্তাহে আবেদনটি শুনানির জন্য তোলা হবে।
জেলা প্রশাসনের ভাষ্য অনুযায়ী, চোরাই গরু ঢুকেছে সন্দেহে বিজিবি সদস্যরা গত মঙ্গলবার হরিপুর উপজেলার বকুয়া ইউনিয়নের বহরমপুর গ্রামে অভিযান চালিয়ে কয়েকটি গরু জব্দ করে ট্রাকে তুললে গ্রামবাসীর সঙ্গে সংঘর্ষ বাঁধে। বিজিবি সদস্যরা তখন গুলি চালালে দুই কৃষক এবং একজন এসএসসি পরীক্ষার্থী নিহত হন, আহত হন অন্তত ২০ জন।
বিজিবির দাবি, জব্দ করা গরু বিওপিতে নেওয়ার সময় চোরা কারবারিরা ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। ওই পরিস্থিতিতে বিজিবি সদস্যরা গুলি চালাতে বাধ্য হয়। তবে স্থানীয়দের অভিযোগ, তাদের ঘরের গরু বিক্রির জন্য বাজারে নেওয়ার সময় বিজিবি সেগুলো জব্দ করে ট্রাকে তোলে। ওই গ্রামে এক মাস ধরে বিজিবি সদস্যরা গৃহস্থের গরুও নিয়ে যাচ্ছিল বলে গ্রামবাসীর অভিযোগ।
বিজিবির অভিযানে ‘নিরস্ত্র’ সাধারণ মানুষের উপর গুলি চালিয়ে তিন জনকে হত্যা এবং কমপক্ষে ২০ জনকে গুরুতর আহত করা ‘কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না’- তা জানতে রুল চাওয়া হয়েছে তনয় কুমার সাহার রিট আবেদনে।
এছাড়া ওই ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ দিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না এবং ওই অভিযানে জড়িত বিজিবি সদস্যদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না- সেই প্রশ্নেও রুল চাওয়া হয়েছে। স্বারাষ্ট্র সচিব, বিজিবি মহাপরিচালক এবং ঠাকুরগাঁও ৫০ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল তুহিন মো. মাসুদকে বিবাদী করা হয়েছে এই রিটে।
আবেদনে বলা হয়েছে, দেশের সীমান্ত রক্ষা ও সীমান্তের নিরাপত্তার কাজে নিয়োজিত বিজিবি সদস্যরা চোরাচালানের গরু উদ্ধারের নামে অত্যন্ত বেআইনিভাবে নিরস্ত্র গ্রামবাসীর উপর প্রকাশ্যে গুলি চালিয়েছে, যা সংবিধানসিদ্ধ মানুষের বেঁচে থাকার মত মৌলিক অধিকারকে লঙ্ঘন করেছে। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দেওয়ার পাশাপাশি এই পাশবিক অভিযানের সঙ্গে জড়িত বিজিবি কর্মকর্তাদের আইন অনুযায়ী দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া দরকার।