December 23, 2024
জাতীয়

বিচার যা হোক, জামিনটা যেন হয় : শাজাহান খান

দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক

সড়কের নতুন আইন সংশোধনের ক্ষেত্রে জামিন অযোগ্য ধারাটি বাদ দেওয়াকে অগ্রাধিকার দিচ্ছেন পরিবহন শ্রমিকরা। গতকাল রবিবার সচিবালয়ে জাতীয় সড়ক নিরাপত্তা কাউন্সিলের সভা শেষে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি শাজাহান খান সাংবাদিকদের বলেন, নতুন আইনে জামিন অযোগ্য ধারাটি বাতিল হলে এই আইনে বিচার মেনে নিতেও প্রস্তুত তারা।

পরিবহন শ্রমিক নেতারা বলছেন, আইনে জামিন অযোগ্য ধারা থাকায় সড়ক দুর্ঘটনা ঘটলে জেলে যাওয়ার ভয়ে পরিবহন চালক ও শ্রমিকরা স্বন্ত্রস্ত হয়ে আছেন। শাজাহান খান বলেছেন, জামিন অযোগ্য ধারার কারণে পরিবহন শ্রমিকদের পরিবারে সঙ্কট তৈরি হওয়ার পাশাপাশি চালকেরও ঘাটতি দেখা দেবে।

তিনি বলেন, একজন ড্রাইভার তার সীমিত আয় দিয়ে সংসার পরিচালনা করে। মাসে ১৫ দিনের বেশি গাড়ি চালাতে পারে না, ১৫ দিনের আয় দিয়ে তাকে এক মাস সংসার পরিচালনা করতে হয়। আমরা সরকারের কাছে দাবি করেছি, একজন ড্রাইভার যদি দুর্ঘটনা ঘটান, সে যদি দীর্ঘদিন জামিন না পান, তবে ড্রাইভারের ঘাটতি পড়ে যাবে। এক বছরে সারাদেশে ৩ থেকে ৪ হাজার দুর্ঘটনা হয়, তাহলে ৩ থেকে ৪ হাজার ড্রাইভারের ঘাটতি পড়ে যাচ্ছে। আমরা এখনও কিন্তু ৩ থেকে ৪ হাজার ড্রাইভার প্রাতিষ্ঠানিক প্রশিক্ষণ দিয়ে তৈরি করতে পারছি না, আমাদের সেই ক্যাপাসিটি নেই।

এ কারণেই বলেছি, দুর্ঘটনা ঘটালে তদন্ত করে বিচার হবে সেই বিচারে যা হওয়ার হবে, কিন্তু সে যেন জামিনটা পায়। এতে ঘাটতির জায়গাটা পূরণ হবে। জেল যা আছে, সেটা নিয়ে আমাদের কোনো আপত্তি নেই, বলেন শাজাহান খান।

অপরাধ জামিনযোগ্য করা হলে দুর্ঘটনা আরও বাড়ার শঙ্কা তৈরি হবে কি না- প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, এটা ঠিক নয়। কেউ যদি একবার অপরাধ করে, সেই কিন্তু অপরাধ ইচ্ছা করে করে না, করতে চায় না।

গত বছর ঢাকার সড়কে দুই কলেজ শিক্ষার্থীর মৃত্যুর পর শিক্ষার্থীদের নজিরবিহীন আন্দোলনের মুখে শাস্তি আরও কঠোর করে সড়ক পরিবহন আইন প্রণয়ন করে সরকার।

শুরু থেকে এই আইনের বিভিন্ন ধারা নিয়ে আপত্তি জানিয়ে আসছিলেন পরিবহন শ্রমিকরা। গত সপ্তাহে আইনটি পুরোপুরি কার্যকর হলে বিভিন্ন জেলায় পরিবহন শ্রমিকরা ধর্মঘটে চলে যান।

কবে শাজাহান খান বলেন, নানা অপপ্রচারে বিভ্রান্ত হয়ে পরিবহন শ্রমিকরা কাজ বন্ধ করলেও কোনো ধর্মঘট ডাকা হয়নি।

রাস্তায় আবার অচলাবস্থা হবে কি না- প্রশ্নে তিনি বলেন, আমরা কেউ ধর্মঘট ডাকিনি। স্বতঃস্ফূর্তভাবে…আপনারা যেটা বলেছেন ফাঁসি হবে, এই হবে সেই হবে, এ সমস্ত অপপ্রচারের কারণে শ্রমিকরা ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে এই অচলাবস্থা করেছে।

সড়কে গাড়ির কমে যাওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ফিটনেসবিহীন গাড়িগুলো নামছে না বলে তা মনে হচ্ছে। ওই আইনের কারণে রাস্তায় গাড়ির সংখ্যা কম। এই বাস্তবতাটা আপনারা (সাংবাদিকরা) লেখেন না, লেখেন স্বাভাবিক হয়নি। আমি মনে করি, সবই স্বাভাবিক চলছে।

তবে ট্রাক ও কভার্ডভ্যান মালিক-শ্রমিকরা আনুষ্ঠানিকভাবে ধর্মঘট ডাকলে নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে তাদের দাবি বিবেচনার আশ্বাস দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। রবিবারের বৈঠকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীও ছিলেন।

শাজাহান খান বলেন, বাস্তবতাটা হল এই, লাইসেন্সের কথা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলছেন অনেক ঘাটতি আছে, লাইসেন্স দিতে পারছে না বিআরটিএ। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের বলেন, বিভিন্ন ধরনের গাড়ির ফিটনেস, কাগজপত্র হালনাগাদের নতুন সময় দেওয়া হলেও নতুন সড়ক পরিবহন আইনের কোনো অংশ স্থগিত করা হয়নি।

 

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *