November 29, 2024
জাতীয়লেটেস্ট

বিএনপি রাজনীতিতে দেউলিয়া হয়ে যাওয়ায় তাদের আন্দোলনের ডাকে জনগণ সাড়া দেয় না : ওবায়দুল কাদের

(বাসস) : আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি নেতিবাচক রাজনীতি করে দেউলিয়া হয়ে যাওয়ায় জনগণ তাদের কোন আন্দোলনের ডাকেই সাড়া দেয় না।
তিনি বলেন, ‘আন্দোলন করতে না পারাটা বিএনপির দূর্বলতা, আওয়ামী লীগের কিছু করার নেই। বিরোধীদল রাজপথে আন্দোলন করতে ব্যর্থ হলে সরকার সে দায় নিতে পারে না।’
ওবায়দুল কাদের আজ দুপুরে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের এক কর্মী সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দানকালে বিএনপির নেতাদের বক্তব্যের জবাবে এ কথা বলেন।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল হাসনাতের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কর্মীসভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ, সহ-সভাপতি আবু আহম্মেদ মন্নাফি, নুরুল আমিন রুহুল এমপি, আবুল বাশার, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক কামাল চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী মোর্শেদ কামাল, প্রচার সম্পাদক আকতার হোসেন ও উপ-দপ্তর সম্পাদক মিরাজ হোসেন প্রমুখ।
সরকারের জন্য বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি হচ্ছে না বিএনপির নেতাদের এমন দাবীর জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেয়া বা না দেয়া আইনের বিষয়। দেশের বিচার বিভাগ স্বাধীনভাবে কর্তৃত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
তিনি বলেন, বিএনপি তাকে (খালেদা জিয়া) আন্দোলন করে মুক্ত করে আনতে পারে। কিন্তু সরকার তাকে মুক্তি দিতে পারে না। বাস্তবে তারা কোন আন্দোলন করার সক্ষমতা দেখাতে পারেন নি।
দেশে গণতন্ত্র সংকটে আছে বিএনপি নেতা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এমন অভিযোগের জবাবে সেতুমন্ত্রী কাদের বলেন, দেশে গণতন্ত্র আছে, সে গণতন্ত্র সংকটে নেই, গণতন্ত্র সংকটে আছে বিএনপিতে। কারণ মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জাতীয় নির্বাচনে জয়লাভ করেও শপথ গ্রহন করলেন না। আবার সেই আসনের উপ-নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী মনোনয়ন দিলেন। তাই দেশে নয়, বিএনপিতে গণতন্ত্র সংকটে আছে।
তিনি বলেন, দেশের জনগণের প্রতি আওয়ামী লীগের দায়বদ্ধতা রয়েছে। আমরা দেশের জনগণের স্বার্থে কাজ করি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সমস্ত কাজ জনস্বার্থে পরিচালিত হয়।
তিনি আরো বলেন, যারা জনগণের স্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়ে নেতিবাচক রাজনীতি করে জনবিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে তাদের মুখেই বলা সম্ভব দেশে গণতন্ত্র নেই।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাদের বলেন, বিএনপি আন্দোলন ও নির্বাচনে ব্যর্থ হয়ে তারা অপপ্রচারের রাজনীতি শুরু করেছে। তাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে এবং প্রতিরোধ করতে হবে।
তিনি বলেন, দেশের নিজস্ব অর্থায়নে নির্মিতব্য পদ্মাসেতু নিয়ে বিভিন্ন ধরনের গুজব তাদের সেই অপপ্রচারেরই অংশ। সরকারকে বিপদে ফেলার জন্য দেশে-বিদেশে নানা ধরনের অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। তারা পদ্মাসেতুকে সহ্য করতে পারছে না।
সেতুমন্ত্রী কাদের বলেন, পদ্মাসেতুর জন্য লক্ষ মানুষের মাথা দরকার বলে গুজব ছড়ানো হচ্ছে। উম্মাদের মত এ ধরনের অপপ্রচার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়া হচ্ছে।
এ ধরনের অপপ্রচারের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সক্রিয় হওয়ার জন্য দলীয় নেতা-কর্মীদের প্রতি আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, এ ধরনের সকল অপপ্রচার ও গুজবের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক যুদ্ধে লিপ্ত হতে হবে। রাজপথেই শুধু আন্দোলন করলে চলবে না, সাইবার যুদ্ধেও নামতে হবে।
তিনি বলেন, সাইবার অপপ্রচারকে সফলভাবে মোকাবেলা করতে সমর্থ হওয়ার জন্যই আমরা জাতীয় নির্বাচনে ব্যাপকভাবে জয়লাভ করতে সমর্থ হয়েছি।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাদের বলেন, দেশে যে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বিরাজমান রয়েছে তা সব সময় অব্যাহত থাকবে বলে মনে করলে ভুল হবে। কারণ শ্রীলংকায় তামিল বিদ্রোহ দমনের পর সেদেশে রক্তাক্ত ট্রাজেডি হতে পারে তা তারা ভাবতেই পারেন নি।
তিনি বলেন, সে ধরনের ঘটনা এদেশেও যে ঘটবে না, তা ভাবার অবকাশ নেই। রাজধানীর গুলশানের হলি আর্টিজানের ভয়াবহ হামলা থেকে আমাদের শিক্ষা গ্রহন করতে হবে। আমাদের সতর্ক থাকতে হবে।
আওয়ামী লীগের প্রাথমিক সদস্য সংগ্রহ অভিযানের বিষয়ে সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, জাতীয় নির্বাচনে যারা দলের জন্য কাজ করেছে, আওয়ামী লীগকে সমর্থন দিয়েছে ও নৌকা মার্কায় ভোট দিয়েছে সেই নবীনদের দলে অন্তভূক্ত করা হবে।
তিনি বলেন, আবার যাকে তাকে দলের প্রাথমিক সদস্য পদ দেয়া যাবে না। কারণ জাতীয় নির্বাচনের সময় জোয়ারের পানির মত অনেকেই দলের প্রচার ও প্রচারণায় অংশ নিয়েছে। তাদের সকলকে দলে একামোডেট করতে পারব না। দলের নীতি ও আদর্শের সঙ্গে তাদের কতটা সম্পৃক্তা রয়েছে তাও দেখা হবে।
কাদের বলেন, কোন চিহ্নিত সন্ত্রাসী, দুর্নীতিবাজ, স্বাধীনতা বিরোধী ও সাম্প্রদায়িক চিন্তা-চেতনায় বিশ্বাসী কাউকে দলের প্রাথমিক সদস্য পদ দেয়া যাবে না।কারণ দুষ্ঠু গরুর চেয়ে শূন্য গোয়াল ভাল। কোয়ালিটিকে অগ্রাধিকার দেয়া হবে।

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *