বিএনপির মুখে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের কথা শোভা পায় না: কাদের
গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ও মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নস্যাৎ করে যাদের রাজনীতির যাত্রা হয়েছে, তাদের মুখে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের কথা শোভা পায় না। দেশবাসী ভালো করেই জানে, বিএনপি নামক রাজনৈতিক দলটি এদেশের সাম্প্রদায়িক রাজনীতির ভরকেন্দ্র।
বুধবার (৫ অক্টোবর) আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্যের নিন্দা জানিয়ে এক বিবৃতি দিয়েছেন।
তিনি বলেন, বিএনপি যতবারই ক্ষমতায় এসেছে, ততবারই সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে পৃষ্ঠপোষকতা করেছে। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পর বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সামরিক স্বৈরাচার জিয়াউর রহমান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় লালিত বাংলাদেশকে পাকিস্তানি ভাবধারায় পেছনের দিকে নিয়ে যায়।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ১৯৭২ সালে প্রণীত সংবিধানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধ করেছিলেন। কিন্তু অসাংবিধানিক ও অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারী জিয়াউর রহমান সংবিধান সংশোধন করে রাজনীতিতে ধর্মের অপব্যবহারের বৈধতা দিয়েছিল। সেই দলের নেতা হিসেবে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের মুখে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের কথা কুমিরের মায়াকান্না মাত্র।
তিনি বলেন, অসাম্প্রদায়িকতা ও গণতন্ত্রের জন্য বিএনপি মহাসচিবের ছদ্মবেশ ধারণ দেশের জনগণের সঙ্গে এক ধরনের পরিহাস। এদেশের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠা পেয়েছে আওয়ামী লীগের হাত ধরে। তাই গণতন্ত্র বিকাশ ও তা সমুন্নত রাখতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগই সর্বোচ্চ কাজ করে যাচ্ছে। বিপরীতে বিএনপি কখনই জনগণের শক্তিকে পরোয়া করে না; সর্বদা অগণতান্ত্রিক পন্থায় ক্ষমতা দখল করে রাখার বা করার অপতৎপরতা চালিয়ে যায়।
‘ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, বিএনপি ক্ষমতায় গেলে বাংলাদেশ সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়। তারা ক্ষমতাসীন হয়ে সন্ত্রাসী ও উগ্রবাদী গোষ্ঠীকে পৃষ্ঠপোষকতার মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় ফ্যাসিবাদ কায়েম করেছিল। বিরোধী মতকে দমন করতে ২১ আগস্টের নারকীয় হত্যাযজ্ঞের পাশাপাশি সবধরনের অপচেষ্টা চালিয়েছিল। গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে জবাবদিহি ও দায়বদ্ধতার টুটি চেপে ধরে দুর্নীতিকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়েছিল। আর আজ বাংলাদেশের উন্নয়ন ও গণতন্ত্রকে বাধাগ্রস্ত করার লক্ষ্যে সুগভীর ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে।’
কাদের বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এক যুগেরও বেশি সময় ধরে উন্নয়ন ও অগ্রগতির মহাসড়কে। বঙ্গবন্ধু কন্যার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকার এদেশের জনগণের ভাগ্য উন্নয়নে নিরলস কাজ করে যাচ্ছে। আওয়ামী লীগ এদেশের গণমানুষের প্রতিনিধিত্ব করে; আর শেখ হাসিনা হলেন তার কেন্দ্রবিন্দু।
‘সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ স্থানীয় দৈনিক ওয়াশিংটন পোস্টের একটি নিবন্ধে বাংলাদেশে নারীদের বিস্ময়কর অগ্রগতি, শিক্ষা ও দারিদ্র্য নিরসন, সন্ত্রাসবাদ দমনের পাশাপাশি বিশ্বমঞ্চে বলিষ্ঠ নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য সফল রাষ্ট্রনায়ক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভূয়সী প্রশংসা করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা জনগণের ক্ষমতায়নে বিশ্বাস করে এবং জনগণের ওপরই আস্থা রাখে। তাই শেখ হাসিনা স্পষ্ট ভাষায় বলতে পারেন ‘জনগণ ভোট দিলে ক্ষমতায় থাকবো, না দিলে আফসোস নেই’।’
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার সরকার আছে বলেই বাংলাদেশ একের পর এক উন্নয়নের মাইলফলক অর্জন করছে; বিশ্ব সভায় প্রশংসিত হচ্ছে। শেখ হাসিনা আছেন বলেই দেশে গণতন্ত্রের সুবাতাস বইছে। এদেশের গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সমুন্নত রাখতে পিতা মুজিবের মতো তিনিও বদ্ধপরিকর। তাই আমরা দৃঢ়ভাবে বলতে চাই, কোনো অশুভ শক্তি ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে এদেশের গণতান্ত্রিক সংস্কৃতিকে নস্যাৎ করতে চাইলে তাদের দাঁতভাঙা জবাব দেওয়া হবে।