November 24, 2024
জাতীয়লেটেস্ট

বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় সমাবেশ ঘিরে উত্তেজনা, সতর্ক অবস্থায় পুলিশ

বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় সমাবেশকে কেন্দ্র করে অনেকটাই থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে রাজধানীতে। পুলিশের পক্ষ থেকে এলাকাভিত্তিক বাসাবাড়ি ছাড়াও হোটেলে হোটেলে চলছে তল্লাশি। তবে সবচেয়ে বেশি সতর্কতা অবলম্বন করা হয়েছে নয়াপল্টনে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ আশপাশের এলাকায়।

রোববার (৪ ডিসেম্বর) নয়াপল্টনের বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় ছাড়াও আশপাশের এলাকায় ঘুরে বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন থাকতে দেখা গেছে। সেই সঙ্গে হোটেল ভিক্টরির সামনে সারিবদ্ধভাবে পালাক্রমে দায়িত্ব পালন করতে দেখা গেছে প্রায় ২০ জনের মতো পুলিশ কনস্টেবলকে। যাদের মনিটরিং করছেন কর্মকর্তারা।

একই চিত্র নাইটিঙ্গেল মোড়েও। এই এলাকাকে ঘিরে পুলিশের অন্তত ৩০ থেকে ৪০ জন সদস্যকে দায়িত্ব পালন করতে দেখা গেছে।

দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা জানিয়েছেন, সমাবেশকে ঘিরে অপ্রীতিকর কোনো পরিস্থিতি তৈরির আশঙ্কা থেকেই তারা সতর্ক অবস্থায় আছেন। বিশেষ করে শনিবার (৩ ডিসেম্বর) নয়াপল্টনে ককটেল বিস্ফোরণের পর আরও বেশি সতর্ক অবস্থায় রয়েছে পুলিশ।
দলীয় প্রধান বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ছাড়াও নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহার, আন্দোলন চলাকালে নেতাকর্মী নিহত হওয়ার ঘটনার বিচার দাবিসহ নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে ইতোমধ্যেই বিভাগীয় পর্যায়ে সমাবেশ করেছে বিএনপি। এই কর্মসূচির অংশ হিসেবেই আগামী ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় বিভাগীয় মহাসমাবেশ করবে দলটি। তবে বিএনপি নয়াপল্টনে সমাবেশ করতে চাইলেও গত ২৯ নভেম্বর পুলিশ তাদের ২৬ শর্তে সোহরাওয়ার্দীতে সমাবেশের অনুমতি দিয়েছে। অবশ্য, বিএনপির দাবি- নয়াপল্টন ছাড়া অন্য কোনো ভেন্যু তারা চায়নি।

এদিকে, সমাবেশের স্থান এখনো নির্ধারণ না হলেও অন্য সময়ের চেয়ে নয়াপল্টনে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের বেশ উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। এরমধ্যে রোববার যুবদল সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু ছাড়াও সহ-সভাপতি নুরুল ইসলাম নয়নকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে নয়াপল্টনে বিক্ষোভও করেছে যুবদলের নেতাকর্মীরা। এ দিন সকাল থেকে কর্মসূচি পালন করে রাত অবধি তারা সেখানেই অবস্থান করেন।

অন্যদিকে, সমাবেশ নিয়ে রোববার দুপুরেও বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সংবাদ সম্মেলনেও নেতাকর্মীদের বেশ উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে।

এসবের মাঝেই যে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি মোকাবিলায় গত ১ ডিসেম্বর থেকে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করছে পুলিশ। সারাদেশে চলমান এই বিশেষ অভিযানের অংশ হিসেবে গত ২৪ ঘণ্টায় এক হাজার ৩৫৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এই সময় মোট দুই হাজার ৩২১টি অভিযান পরিচালিত হয়েছে। পুলিশের দাবি সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতেই তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে।

রোববার রাতে পুলিশ সদর দফতরের এআইজি (মিডিয়া অ্যান্ড পিআর) মো. মনজুর রহমান এই তথ্য জানিয়েছেন।

পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, গত ২০ নভেম্বর ঢাকা সিএমএম আদালত এলাকায় পুলিশ হেফাজত থেকে দণ্ডপ্রাপ্ত দুই জঙ্গিকে ছিনিয়ে নেওয়ার প্রেক্ষাপট বিবেচনায় নিয়ে ও মহান বিজয় দিবস, বড়দিন এবং থার্টি ফাস্ট নাইট উদযাপন নিরাপদ ও নির্বিঘ্ন করার লক্ষ্যে চলমান অভিযানের পাশাপাশি ১ থেকে ১৫ ডিসেম্বর বিশেষ অভিযান পরিচালনার নির্দেশ দিয়েছে পুলিশ সদর দফতর।

যদিও বিএনপির অভিযোগ- গত ৩০ নভেম্বর থেকে শনিবার রাত পর্যন্ত তাদের এক হাজার ৩১ জন নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

সার্বিক বিষয়ে পুলিশের মতিঝিল জোনের শীর্ষ এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘যেহেতু তাদের (বিএনপি) কর্মসূচি আছে, সে কারণে লোকজনের আনাগোনা বেশি। যাতে কোনো সমস্যা না হয়, অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সে কারণে আমরা সতর্ক অবস্থায় আছি। তাদের সঙ্গে আমাদের তো ব্যক্তিগত রেষারেষি নেই। নেতাকর্মীরা তাদের মতো আছে, আমাদের সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছে। এরচেয়ে বেশি কিছু নেই।

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *