বাল্যবিয়ে বন্ধের জেরে শিক্ষক-ইমাম নির্যাতন: গ্রেফতার ১
দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক
নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার দুর্গম চর এক নম্বর হরণি ইউনিয়নের পূর্ব রসুলপুরে বাল্যবিয়ে বন্ধ করায় এক মাদ্রাসা শিক্ষক ও মসজিদের এক ইমামকে নির্যাতন করার ঘটনায় এক আসামিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
গতকাল সোমবার সকাল ১০টায় এ ঘটনায় দায়ের করা মামলার প্রধান আসামি আবদুল কাদেরকে উপজেলার হরণি ইউনিয়নের হাতিয়া বাজার এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত আবদুল কাদের ওই এলাকার আবদুল খালেকের ছেলে।
হাতিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুজ্জামান শিকদার জানান, ১২/১৩ আসামির মধ্যে আবদুল কাদেরকে গ্রেফতার করে থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। বাকি আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
উলেখ্য, ২৯ জানুয়ারি পূর্ব রসুলপুরের দারুল আরকাম ইবতেদায়ি মাদ্রাসার তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী স্থানীয় সাবের আহম্মদের ১৩ বছরের মেয়ে নাজমা আক্তারের সঙ্গে স্থানীয় এক রাজমিস্ত্রির বিয়ের আয়োজন করা হয়। বিষয়টি জানতে পেরে ওই দিনই মাদ্রাসার শিক্ষক তারিকুল মাওলা ন্যাশনাল হেল্পলাইন ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ নূর-এ-আলমকে জানান। পরে ইউএনও’র হস্তক্ষেপে মেয়েটির বিয়ে বন্ধ হয়ে যায়।
পরে ওই দিন বিকেলে মাদ্রাসা শিক্ষক তারিকুল মাওলা স্থানীয় পূর্ব রসুলপুর জামে মসজিদের ইমাম মিনহাজুল ইসলামের সঙ্গে হাতিয়া বাজারে যাচ্ছিলেন। এসময় পূর্ব রসুল গ্রামের মৃত আবদুল খালেকের ছেলে আবদুল কাদের, আবদুল কাদেরের ছেলে মোহাম্মদ আলী মহব্বত, আবদুল জিলানীর ছেলে এনায়েত হোসেন বেচু, সমির উদ্দিন, বাবলু ও কালামসহ ১০-১২ জন তাদের ওপর হামলা চালান। একপর্যায়ে হামলাকারীরা তাদের নাজমাদের বাড়িতে নিয়ে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন করেন। এসময় তারা তাদের সঙ্গে থাকা তিনটি মোবাইল ফোন, একটি টর্চ লাইট, ৫৩০০ টাকা, একটি ভিসা কার্ড, মাদ্রসার শিক্ষক পরিচিতি কার্ড ও জাতীয় পরিচয়পত্র নিয়ে যান। পাশাপাশি তাদের কাছ থেকে জোর করে তিনটি স্ট্যাম্প ও দু’টি নীল কাগজে স্বাক্ষরও নেওয়া হয়। পরে, আহত অবস্থায় স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে। চিকিৎসা শেষে ২ ফেব্র“য়ারি আবদুল কাদেরকে প্রধান আসামি করে ছমির উদ্দিন, মোহাম্মদ আলী মহব্বত, এনায়েত হোসেন বেচু, বাবলু, আবুল কালাম, মো. দুলাল ও এমরান হোসেনের নাম উলেখসহ ১২/১৩ জনকে আসামি করে হাতিয়া থানায় মামলা করেন তারিকুল।