বাল্যবিয়ে: ইউএনওর উপস্থিতি টের পেয়ে বরের চম্পট
দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক
অসুস্থ খালার আবদার মেটাতে খালাত ভাইয়ের সাথে দশম শ্রেণি পড়ুয়া মেয়েকে (১৫) বিয়ে দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছিলেন বাবা। বাল্যবিয়ের ওই আয়োজনের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে হাজির হন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। তার উপস্থিতি টের পেয়ে সঙ্গীসাথীদের নিয়ে পালিয়ে যান বর। আর মেয়ের বাবা নাবালক মেয়েকে বিয়ে না দেওয়ার মুচলেকা দিয়ে পার পান।
এই ঘটনা ঘটেছে চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার ফকিরহাট বাজার এলাকায়। বাল্য বিয়ে থেকে রক্ষা পাওয়া মেয়েটি হাটহাজারী বলিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী। তার বাবা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী। উপজেলার ফকিরহাট বাজার এলাকায় তাদের বাড়ি।
হাটহাজারীর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রুহুল আমিন বলেন, সকালে উপজেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে স্থানীয় পর্যায়ে এসডিজি বাস্তবায়ন বিষয়ক কর্মশালা চলছিল। সেখানে বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে করণীয় নিয়ে আলোচনা হচ্ছিল। এসময় স্থানীয় এক ব্যক্তি ফোন করে ফকিরহাট মসজিদে দুপুরে বাল্যবিয়ে আয়োজনের বিষয়টি জানায়। সঙ্গে সঙ্গে তিনি ইমাম, কাজী, হাটহাজারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও প্রধান শিক্ষককে মসজিদে আসতে বলেন, সভা থেকে বেরিয়ে তিনিও মসজিদের দিকে যান।
ইউএনও রুহুল আমিন বলেন, ইউএনও আসছেন খবর পেয়ে বিয়ে করতে আসা বর ও তার পক্ষের লোকজন মাইক্রোবাস নিয়ে পালিয়ে যায়। মেয়ের বাবা বলেন, আমার মেয়েকে আমি বিয়ে দেব আপনি কে? তখন উনাকে বলি- বিয়ে দিলে আপনাকে জেলে দেওয়া হবে। এ কথা বলার পর তিনি শান্ত হন। পরে তাকে বুঝিয়ে বলি। তিনি মেয়েকে লেখাপড়া করাতে সম্মত হয়েছেন। বিয়ে দেবেন না বলেও মুচলেকা দিয়ে গেছেন।
অপ্রাপ্তবয়স্ক ওই ছাত্রীর বিয়ে আয়োজন বিষয়ে ইউএনও রুহুল আমিন বলেন, মেয়ের বাবা জানিয়েছেন যার সাথে বিয়ে ঠিক হয়েছিল সে মেয়ের খালাত ভাই। তার খালা অসুস্থ। সেজন্য ছেলেকে বিয়ে করাতে চান এবং তার মেয়েকে পছন্দ করেছেন। কেউ অসুস্থ হলেই তার ইচ্ছে পূরণের জন্য মেয়েকে বিয়ে দিতে হবে কী না জানতে চাইলে তিনি (মেয়ের বাবা) বলেন, ভুল হয়ে গেছে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ছাত্রীটির লেখাপড়ার দিকে খেয়াল রাখবেন বলে আশ্বস্ত করেছেন ইউএনওকে।