বাবা দিবসে ফেলে যাওয়া বাবার দাফন হলো বেওয়ারিশ হিসেবে
বিশ্ব বাবা দিবসে রোববার বিকেলে হতভাগ্য এক বাবার মরদেহ আঞ্জুমানে মফিদুল ইসলাম দাফন করেছে বেওয়ারিশ হিসেবে।
এর আগে শনিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে স্থানীয়রা জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ কল করার পর পুলিশ নগরীর বাদুরতলাস্থ নবাব ফয়জুন্নেচ্ছা সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের বিপরীতে একটি ডাস্টবিনের কাছ থেকে খোরশেদ আলম (৬০) নামের ওই বৃদ্ধকে উদ্ধার করে। সন্তানরা অসুস্থ অবস্থায় তাকে ডাস্টবিনের পাশে ফেলে চলে যায় বলে ওই বাবা পুলিশকে জানায়। কিন্তু হাসপাতালে ভর্তির কিছুক্ষণ পর তিনি মারা যান।সন্তানরা বাবার মরদেহ নিতে না আসায় দীর্ঘ অপেক্ষার পর পুলিশ মরদেহ আঞ্জুমানে হস্তান্তর করে।
কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশের এসআই শাহাব উদ্দিন জানান, শনিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে ৯৯৯ এর মাধ্যমে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি রাস্তায় পড়ে চিৎকার করছে ওই বৃদ্ধ। এ সময় ওই বৃদ্ধের খুব শ্বাসকষ্ট হচ্ছিলো। ভালোভাবে কথা বলতে পারছিলেন না। তার দু’চোখ বেয়ে অশ্রু ঝড়ছিল। এ সময় তিনি বাঁচার খুব আকুতি জানাচ্ছিলেন। কিন্তু তিনি করোনায় আক্রান্ত কিনা এসব চিন্তা না করেই বিষয়টি সিনিয়র অফিসারদের জানিয়ে বৃদ্ধকে অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাই।
তিনি আরও জানান, হাসপাতালে ভর্তির আগে অ্যাম্বুলেন্সে শুয়ে ওই বৃদ্ধ তার সন্তানরা তাকে ডাস্টবিনের পাশে ফেলে গেছেন বলে জানায়। তবে তিনি এতটাই অসুস্থ ছিলেন যে তাৎক্ষণিকভাবে তার নাম ঠিকানা নিশ্চিত হওয়া সম্ভব হয়নি। তবে তার গ্রামের বাড়ি নোয়াখালী জেলায় বলে জানিয়ে ছিলেন। কিন্তু আমরা তাকে বাঁচাতে পারিনি। চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাতেই ওই বৃদ্ধের মৃত্যু হয়।
কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আনোয়ারুল হক জানান, ওই বৃদ্ধ তার গ্রামের বাড়ি নোয়াখালী এলাকায় বললেও বিস্তারিত পরিচয় না পাওয়ায় রোববার মরদেহ আঞ্জুমানে মফিদুল ইসলামের মাধ্যমে বেওয়ারিশ হিসেবে দাফন করার জন্য পাঠানো হয়েছে। বিকেলে আঞ্জুমানে মফিদুল ইসলামের কুমিল্লা শাখার সহকারী পরিচালক সাজ্জাদ হোসেন জানান, কোতোয়ালি পুলিশের অনুরোধে পরিচয় শনাক্ত না হওয়ায় বৃদ্ধ খোরশেদ আলমের মরদেহ বিকেলে বেওয়ারিশ হিসেবে দাফন করা হয়েছে।