বাণিজ্যমেলা বন্ধের সিদ্ধান্ত হয়নি
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের আরোপিত বিধিনিষেধের মধ্যেই স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে রাজধানীর পূর্বাচলে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা চলছে। ব্যাপকহারে করোনা সংক্রমণ বাড়ায় বাণিজ্যমেলা বন্ধ করা এবং বইমেলার মতো আয়োজন পেছানোর সুপারিশ করেছে কোভিড-১৯ জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি। তবে এখনো বাণিজ্যমেলা বন্ধের সিদ্ধান্ত হয়নি।
মঙ্গলবার (২৫ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সচিব ও মেলার পরিচালক মো. ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী এ কথা জানান।
তিনি বলেন, যেকোনো সিদ্ধান্ত হলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় আমাদের জানাবে। আমরা মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করবো। তবে এখনো মেলা বন্ধের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। মন্ত্রণালয় বন্ধ করলে বন্ধ, চালু করলে চালু। মেলার আর ছয়দিন বাকি, আমরা স্বাস্থ্যবিধি যথাযথ অনুসরণের চেষ্টা করছি। সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মানতে বলা হচ্ছে। এখনো ভ্রাম্যমাণ আদালতের কার্যক্রম চলছে।
এর আগে গত শুক্রবার (২১ জানুয়ারি) করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে পাঁচ দফা জরুরি নির্দেশনা জারি করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
নির্দেশনায় বলা হয়, বাজার, মসজিদ, বাসস্ট্যান্ড, লঞ্চঘাট, রেলস্টেশনসহ সব ধরনের জনসমাবেশে অবশ্যই মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। প্রশাসন বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিষয়টি মনিটর করবে।
বাণিজ্যমেলা ও বইমেলা প্রশ্নে পরামর্শক কমিটির সভাপতির ‘ব্যক্তিগত মত’
এদিকে করোনাভাইরাসের অব্যাহত সংক্রমণ বৃদ্ধির বর্তমান পরিস্থিতিতে বাণিজ্যমেলা বন্ধ করে দেওয়া উচিত বলে মনে করছেন কোভিড-১৯ নিয়ন্ত্রণে গঠিত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. মো. শহীদুল্ল্যাহ। একইসঙ্গে অমর একুশে বইমেলা আরও পিছিয়ে দেওয়ার পক্ষে তিনি।
বিকেলে জাগো নিউজকে তিনি বলেন, কারিগরি পরামর্শক কমিটির পক্ষ থেকে আগেই সংক্রমণ রোধে সব ধরনের জনসমাবেশ বন্ধ করার সুপারিশ করা হয়েছে। সে অর্থে বাণিজ্যমেলা বা বইমেলাও জনসমাবেশের মধ্যেই পড়ে। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি সংক্রমণ রোধে বাণিজ্যমেলা অবিলম্বে বন্ধ করা এবং বইমেলা পিছিয়ে দেওয়া উচিত।
জাগো নিউজের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, ‘কমিটির পক্ষ থেকে বানিজ্য মেলা বন্ধ কিম্বা বইমেলা পেছানোর পরামর্শ দেয়া হয়নি। কমিটি থেকে বলা হয়েছে সব কিছু বন্ধ থাকবে। আমরা মোটা দাগে বলেছি যে সভাসমাবেশ সব কিছু যেন বন্ধ থাকে।’
অধ্যাপক ডা. মো. শহীদুল্ল্যাহ বলেন, ব্যক্তিগতভাবে আমি মনে করি অবশ্যই বাণিজ্যমেলা বন্ধ থাকা উচিত। কমিটির পক্ষ থেকে বলা না হলেও ব্যক্তিগতভাবে আমি বাণিজ্যমেলা বন্ধ ও বইমেলা পেছানোর পক্ষে। এগুলো খোলা রেখে কোনো লাভ হচ্ছে না, তাহলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ কেন?
এর আগে গত ১০ জানুয়ারি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে ১১ দফা নির্দেশনা দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। দেওয়া হয় গণজমায়েতে নিষেধাজ্ঞা, গণপরিবহনে অর্ধেক যাত্রী পরিবহনের নির্দেশনা। যদিও পরে ট্রেন ছাড়া অন্য যানবাহনে আসনের সমান যাত্রী বহন করতে বলা হয়। এরপর ২১ জানুয়ারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সশরীরে ক্লাস বন্ধের আদেশ আসে। এ অবস্থায়ও বাণিজ্যমেলা অব্যাহত রয়েছে।