বাঘাইছড়িতে নিহত প্রত্যেকের পরিবার পাচ্ছে সাড়ে ৫ লাখ টাকা
দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক
রাঙামাটির বাঘাইছড়িতে নির্বাচনকর্মীদের ওপর হামলায় নিহতদের প্রত্যেকের পরিবারকে সাড়ে পাঁচ লাখ টাকা করে অনুদান দিচ্ছে নির্বাচন কমিশন। আহতদের চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়েছে ইসি। তাদের পরিবারকেও সাময়িক সহযোগিতা হিসেবে ৫০ হাজার থেকে এক লাখ করে টাকা দেওয়া হবে। এছাড়া নিহতদের পরিবারের কেউ যদি চাকরিযোগ্য থাকে এবং নির্বাচন কমিশনে সুযোগ থাকলে তাদের চাকরি দেওয়া হবে।
গতকাল বৃহস্পতিবার আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনের মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে হতাহতদের সহায়তার এই ঘোষণা দেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা। সোমবার উপজেলা নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শেষে রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার তিনটি কেন্দ্র থেকে নির্বাচনকর্মীরা ফেরার পথে তাদের ওপর সশস্ত্র হামলা হয়।
বাঘাইছড়ি-দিঘিনালা সড়কের নয় মাইল এলাকায় ওই হামলায় দুই পোলিং কর্মকর্তা, চার আনসার-ভিডিপি সদস্যসহ সাতজন নিহত হন, গুলিবিদ্ধ হন আরও অন্তত ১১ জন। পার্বত্য জেলাটিতে এই ঘটনা আঞ্চলিক সমস্যার বহিঃপ্রকাশ বলে মনে করছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার।
নূরুল হুদা বলেন, আমরা এখনও পর্যন্ত মনে করি, এটা আঞ্চলিক সমস্যার বহিঃপ্রকাশ অথবা যারা নির্বাচনে প্রতিদ্ব›িদ্বতা করেছে তারা এটা করে থাকতে পারে। এটা আমাদের ধারণা।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমাদের দেশে বা সব দেশেই গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় নির্বাচন বর্জন করার রীতি আছেই। বর্জন করে ফেলে। বর্জন করে পরবর্তীতে এ রকম অবস্থা হবে এটা তো ধারণা করা সম্ভব হয়নি।
হামলাকারীদের চিহ্নিত করা হয়েছে কি না জানতে চাইলে সিইসি বলেন, না। এখনও তদন্তাধীন আছে। এখনো সুনির্দিষ্টভাবে চিহ্নিত করা সম্ভব হয়নি। তিনি বলেন, এগুলো চোরাগুপ্তা হামলা। এ জাতীয় ঘটনা ঘটবে এটা তো কেউ আশঙ্কা করে না। সতর্কতামূলক হিসেবে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছিল। যার ফলে সারা দিন নির্বাচনে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।
যদিও তারা কোথাও কোথাও অপচেষ্টা চালিয়েছিল। সার্বক্ষণিক টহলদারির কারণে তারা নির্বাচন ব্যাহত করার চেষ্টা করেও সফল হতে পারেনি। রাতের অন্ধকারে অত বড় পাহাড়ি অঞ্চলে কোথায়, কীভাবে এ জাতীয় আক্রমণ হয়- এটা অনুমান করা সম্ভব নয়।
দায়িত্ব পালনে কারও গাফিলতি ছিল না দাবি করে সিইসি বলেন, এ রকম হামলা স্থায়ী হয় না। এক মিনিট বা দুই মিনিট হামলা করে তারা চলে যায়। এক-দেড় মিনিটের মধ্যে একটা বাহিনী প্রস্তুতি নিয়ে আবার কাউন্টার অ্যাটাক করা এটা সম্ভব নয়। হামলার পর বিজিবির যে গাড়ি ছিল তারা সেখানে গিয়ে উদ্ধার করা, আহতদের ওখান থেকে সরিয়ে নেওয়া, কমিশনকে খবর দেওয়া, হেলিকপ্টারের ব্যবস্থা করা। এ সকল কাজ তারা করেছে।
আহতদের মধ্যে সাত জন ঢাকা সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে এবং বাকিদের চট্টগ্রামে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালহস অন্যান্য হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে বলে জানান প্রধান নির্বাচন কমিশনার। সংবাদ সম্মেলনে ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ ও যুগ্ম সচিব এসএম আসাদুজ্জামান উপস্থিত ছিলেন।