বাগেরহাটে আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে দোকান দখল, আটক ৪
বাগেরহাট প্রতিনিধি
বাগেরহাটে আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ঔষধের দোকান দখল ও লুটপাটের অভিযোগে নারীসহ ৪ জনকে আটক করেছে পুলিশ। আটককৃতরা হলেন মোরেলগঞ্জ উপজেলার জোকা গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক কবির হোসেন (৬২), তার স্ত্রী লাইজু বেগম, কবিরের সহযোগী আছাদুজ্জামান বাদল ও সালমা বেগম। গতকাল শুক্রবার সকালে মোরেলগঞ্জ উপজেলার দৈবজ্ঞহাটি বাজারের জিয়া মেডিকেল হল ও জুলু এ্যান্ড কোং ফার্মেসি দখল ও মালামাল লুটের অভিযোগে ওই ঔষধের দোকান থেকে তাদেরকে আটক করা হয়।
এদিকে জিয়া মেডিকেল হল ও জুলু এ্যান্ড কোং ফার্মেসি জোরপূর্বক দখল ও লুটপাটের প্রতিবাদ ও বিচারের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার বেলা ১১টায় দৈবজ্ঞহাটি বাজার ব্যবসায়ীরা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে এই মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেন।
জিয়া মেডিকেল হলের স্বত্তাধীকারী জিয়াউল হক ও তার ভাই জুলু এ্যান্ড কোং ফার্মেসির স্বত্তাধীকারী জুলফিকার সরদার বলেন, পাকিস্তান আমল থেকে আমাদের দাদা আব্দুল কাদের সরদার এই জমি ভোগ দখল করে আসছিলেন। আমার পিতা আমজাদ আলী সরদারও এ জমি ভোগ দখল করেছেন। ১৯৯০ সাল থেকে আমরা এই জায়গায় ব্যবসা করছি। কিন্তু হঠাৎ করে ২০১৮ সালের জুলাই মাসে কবির হোসেন আমাদের দোকান দখলের চেষ্টা করে। জোরপূর্বক দখল করতে না পেরে আদালতে জমির মলিকানা দাবি করে মামলা করেন তারা। একই বছর ২৯ নভেম্বর আদালত ন্যায় বিচারের স্বার্থে ওই জমিতে মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত যারা ভোগ দখলে আছেন তারা ভোগ দখল করবেন বলে আদেশ দেন। তারপর থেকে কিছু দিন তারা থেমে ছিল। কিন্তু হঠাৎ করে গতকাল শুক্রবার ভোরে তারা ২০জনের সংঘবদ্ধ একটি দল আমাদের দোকানের সামনে টিন দিয়ে বেরিকেড সৃষ্টি করে।দোকান লুট করে প্রায় ৫০ লক্ষ টাকার ঔষধ নিয়ে যায়। আমরা পুলিশকে জানালে কবির হোসেনসহ ৪জনকে আটক করে পুলিশ। আমরা ন্যায় বিচার চাই।
দৈবজ্ঞহাটি বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সহ-সভাপতি দিদার আকরাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক বাবুল শেখ বলেন, হঠাৎ করে এভাবে কারও দোকান লুট কোন ভাবে মেনে নেওয়া যায় না। আমরা ব্যবসায়ীরা এর প্রতিবাদের দোকান বন্ধ রেখেছি। মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছি। আমরা এর সুষ্ঠ বিচার চাই।এই ঘটনার বিচার না হলে বাজারের ব্যবসায়ীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগবে বলে দাবি করেন তিনি।
দৈবজ্ঞহাটি ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও বাজার কমিটির সভাপতি পারুল আক্তার বলেন, দীর্ঘ দিন ধরে জিয়াউল হক ও তার ভাই জুলফিকার সরদার এই বাজারে ঔষধের ব্যবসা করে আসছেন। এনিয়ে আগে একবার স্থানীয়ভাবে শালিস মীমাংসার চেষ্টা করা হয়েছে, কিন্তু আদালতে মামলা থাকার কারণে বিষয়টি মীমাংসা সম্ভব হয়নি। হঠাৎ করে আজকে এই দখলের চেষ্টা ও লুটপাটের ঘটনা দুঃখজনক। পুলিশ প্রশাসন তাদের আটক করায় আমি সাদুবাদ জানাই। আদালত পরবর্তীতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করবেন।
মোরেলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কেএম আজিজুল ইসলাম বলেন, দৈবজ্ঞহাটি বাজারে দুটি দোকানে লুটপাটের ঘটনায় আমরা চার জনকে আটক করেছি। আটককৃতদের থানায় রেখে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।