‘বাংলাদেশ আশ্রয় না দিলে বড় ধরনের রোহিঙ্গা গণহত্যা হতো’
দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক
মিয়ানমারের রাখাইনে নিপীড়িত-নির্যাতিত এগারো লাখের বেশি রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশ মানবাধিকার রক্ষার নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন। বলেন, প্রাণভয়ে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশ আশ্রয় না দিলে রাখাইনে বড় ধরনের গণহত্যা ঘটতো। গতকাল রবিবার সকালে ইন্টার কন্টিনেন্টাল হোটেলে মানবাধিকার সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী একথা বলেন।
রোহিঙ্গাদের দ্রুততম সময়ে নিজ দেশে ফেরত না পাঠালে এই অঞ্চলে নানা রকম ঝুঁকি তৈরি হতে পারে বলে আশংকা প্রকাশ করে মন্ত্রী বলেন, ‘সেজন্য রাখাইনে আন্তর্জাতিক তদারকিতে সেফ জোন তৈরির ওপর বাংলাদেশ জোর দিচ্ছে। রোহিঙ্গা সমস্যার স্থায়ী সমাধানে মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য ‘সেফ হেভেন’ বা নিরাপদ এলাকা তৈরির প্রস্তাব নিয়ে কাজ করছে বাংলাদেশ।’
‘রাখাইনে একটি সেফ জোন হবে, যেখানে ভারত, চীন ও আসিয়ানের দেশগুলো রোহিঙ্গাদের দেখাশোনা করবে। কারণ এই দেশগুলোর প্রতি মিয়ানমারের আস্থা রয়েছে। তাছাড়া দেশগুলো রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে আমাদের সাথে আছে।’
স¤প্রতি ভারত সফরের সময় বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজের কাছে মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশে ‘সেফ হেভেন’ করার নতুন প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশ। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে মিয়ানমারের সঙ্গে করা চুক্তির সংশোধনী আনা হবে কি না জানতে চাইলে মোমেন বলেন, ‘সেটি আমি বলতে পারবো না।’
বাংলাদেশের মানবাধিকার প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘মানবাধিকার ইস্যুতে বাংলাদেশ বিশ্বের কাছে রোল মডেল। মানবাধিকারের সবচেয়ে বড় উদাহরণ হচ্ছে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়া। তাদের আশ্রয় না দিলে সেখানে লাখ লাখ রোহিঙ্গা মারা যেতো। এরা যত তাড়াতাড়ি ফেরত যাবে, ততোই মঙ্গল।’
‘মানবাধিকার রক্ষায় আমরা প্রতিশ্র“তিবদ্ধ এবং আমাদের যে উচ্চ প্রবৃদ্ধি হয়েছে তার বড় কারণ হচ্ছে সুশাসনের প্রতিষ্ঠা। দেশে অন্ন-বস্ত্র-বাসস্থান ও অন্যান্য মৌলিক মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা করছে সরকার।’
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও ঢাকার জাতিসংঘ অফিস আয়োজিত ‘বাংলাদেশ ও মানবাধিকার’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তব্য রাখেন জাতিসংঘের বাংলাদেশে আবাসিক প্রতিনিধি মিয়া সেপ্পো।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে ভালো কাজ করে যাচ্ছে। বর্তমানে বাংলাদেশে নতুন যে সরকার ক্ষমতায় এসেছে আশা করছি তারা সার্বজনীন মানবাধিকারের সব ধারা সমুন্নত রাখবে।’