“বসন্ত, মনের ভালোবাসা”
১৩ ফেব্রুয়ারি পহেলা ফাল্গুন। বসন্তের প্রথম দিন। পরদিন ১৪ ফেব্রুয়ারি ‘বিশ্ব ভালোবাসা দিবস’। এই দিনগুলোতে রঙিন হয়ে ওঠে মন। বাহারি সাজে সেজে ওঠে প্রকৃতি ও মানুষ। তাই দুটি দিবসকে সামনে রেখে লিখেছেন রিফাত কান্তি সেন-
‘ফাগুনের আগুন লাগে তোমার হৃদয়ে, বলি হে সখা সেজেছো কেমন নতুনের আগমনে।’ ঋতুরাজ বসন্তে প্রকৃতি কন্যা সাজে নতুন রূপে। গাছে গাছে নতুন পাতার আগমন ঘটে। শিমুল, পলাশ আর কৃষ্ণচূড়ার আবাসে চারিদিক লাল হয়ে যায়। নারীরা বাসন্তি শাড়িতে নিজেকে নতুন রূপে সাজিয়ে তোলে। পুরুষ সাদা পাঞ্জাবি আর শিশুরা রং-বেরঙের পোশাকে সজ্জিত হয়।
বাঙালির ‘বারো মাসে তেরো পার্বণ’ সংস্কৃতির এক অপার নিদর্শন বসন্ত বরণ। ফুল ফুটুক আর না-ই ফুটুক, বসন্ত বরণে বাঙালি সবসময়ই সচেষ্ট। কারণ বসন্তের প্রাকলগ্নে আমের বাগানে দেখা যায় নতুন কলি। ফাল্গুনের প্রথম প্রহরে রক্তিম লালিমা নিয়ে সূর্য প্রকৃতিকে নবরূপে সজ্জিত করে। কোকিলের কুহুকুহু সুরে মুখরিত হয় চারপাশ।
শীতের হিমেল হাওয়ার পরশ শেষে আসে বসন্ত। সঙ্গে সঙ্গে বছর ঘুরে আসে ভালোবাসার সংস্পর্শ। ভালোবাসা শুধুই লোক দেখানো নয়, ভালবাসা আত্মার এক নিবিড় সম্পর্ক। ভালোবাসে না এমন লোক খুব কমই আছে পৃথিবীতে। ভালোবাসা মনের সব অন্ধকারকে দূর করে আলোর সন্ধান দেয়।
ভালোবাসার জন্য কোনো দিবস লাগে না! তবুও আমরা ভ্যালেন্টাইনের প্রেমকাহিনিকে অবলম্বন করে ভালোবাসার দিনক্ষণ পেতে রেখেছি। ভালোবাসা শুধু প্রেমিক-প্রেমিকার মাঝে সীমাবদ্ধ নয়। এটি জগৎজুড়ে এক মায়ার বন্ধন। বাবা-মা,আত্মীয়-স্বজন সবাই ভালোবাসার অংশ। কেউ ভালোবেসে হাসে, কেউ ভালোবেসে হাসায়। ভালোবাসা দিবসে কেউ ছোটে আপনজনের কাছে, কেউ ছুটে যায় ছিন্নমূল শিশুদের কাছে। কেউ ভালোবাসে, কেউ বাসায়।
ভালোবাসার পবিত্রতা রক্ষা করে পূর্ণ হোক সব আশা। হীনম্মন্যতা দূর করে সত্যিকারের ভালোবাসায় নিমজ্জিত হোক তরুণরা। ভালোবাসায় ভরে উঠুক জীবন। এ বছর ১৪ ফেব্রুয়ারি ভালোবাসার নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপিত হোক। বসন্তের রঙে রাঙিয়ে তুলুন জীবন। ভালোবাসুন মাতৃভাষা, দেশ এবং দেশের মানুষ। ভালোবাসুন দেশীয় পণ্য এবং নিজস্ব সংস্কৃতি। ভালোবাসায় ভরে উঠুক সবার জীবন। শুভ হোক আগামীর পথচলা।