বলিভিয়া সংকট: রাজনৈতিক আশ্রয়ে মেক্সিকোতে মোরালেস
নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগে প্রতিবাদ-বিক্ষোভের মুখে বলিভিয়ার প্রেসিডেন্ট পদ থেকে পদত্যাগ করার পর ইভো মোরালেস মেক্সিকোর রাজনৈতিক আশ্রয়ের প্রস্তাব গ্রহণ করেছেন।
এক টুইটে তিনি জানিয়েছেন, বলিভিয়া ছেড়ে যেতে তার কষ্ট হচ্ছে কিন্তু আরও ‘বল ও শক্তি’ নিয়ে তিনি ফিরে আসবেন।
মোরালেস মেক্সিকোর সরকারি একটি বিমানে উঠেছেন বলে মেক্সিকোর পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্সেলো এব্রাদ নিশ্চিত করেছেন।
এক সংবাদ সম্মেলনে মোরালেসকে রাজনৈতিক আশ্রয় দেওয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছিলেন তিনি।
মেক্সিকোতে বামপন্থি সরকার ক্ষমতাসীন এবং তারা বলিভিয়ার ঘটনায় মোরালেসের প্রতি সমর্থন জানিয়েছে।
এর আগে এব্রাদ মোরালেসের পদত্যাগের ক্ষেত্রে সামরিক বাহিনীর জড়িয়ে পড়ার কথা উল্লেখ করে বলিভিয়ার ঘটনাকে ‘অভ্যুত্থান’ বলে বর্ণনা করেছিলেন।
এদিকে বলিভিয়ার সামরিক বাহিনীর প্রধান জেনারেল উইলিয়ামস কালিমান মোরালেসের সমর্থকদের সঙ্গে সংঘর্ষরত পুলিশকে সমর্থন দেওয়ার জন্য সৈন্যদের নির্দেশ দিয়েছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।
সংঘর্ষে প্রায় ২০ জন আহত হয়েছেন বলে স্থানীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
বলিভিয়ার রাজধানী লা পাজে মোরালেসের সমর্থকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। ছবি: রয়টার্স
দেশ ছাড়ার আগে মোরালেস তার সমর্থকদের ‘অন্ধকারের শক্তিগুলোকে’ প্রতিহত করার আহ্বান জানিয়েছিলেন।মোরালেসের পর ভাইস প্রেসিডেন্ট আলভারো গার্থিয়া, সিনেটের নেতা আদ্রিয়ানা সালভাতিয়ারা ও হাউস অব ডেপুটিসের নেতা ভিক্টর বোর্দাও পদত্যাগ করেন।
এতে বলিভিয়ার ক্ষমতার কেন্দ্রে শুন্যতা তৈরি হয়েছে। এর প্রেক্ষিতে লাইনে থাকা পরবর্তী নেতা সিনেটের ডেপুটি প্রধান জেনাইন আনিয়েজ নতুন নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত অন্তর্বতী প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতা গ্রহণ করবেন বলে জানিয়েছেন।
রোববার আঞ্চলিক সংস্থা অর্গানাইজেশন অব আমেরিকান স্টেটস (ওএএস) এক ঘোষণায় নির্বাচনী নিরীক্ষায় ‘পরিষ্কার কারচুপির’ প্রমাণ পেয়েছে জানিয়ে ভোটের ফল বাতিল করার আহ্বান জানায়।
তাদের সঙ্গে একমত হয়ে মোরালেস নির্বাচন কমিশন সংস্কার করার পর নতুন নির্বাচনের ডাক দেওয়ার ঘোষণা দেন।
কিন্তু তার এ ঘোষণা মেনে না নিয়ে রাজনৈতিক নেতারা, সেনাবাহিনী প্রধান ও পুলিশ প্রধান তাকে পদত্যাগের আহ্বান জানান।
এরপর রেরাববার টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এক ভাষণে মোরালেস প্রেসিডেন্টের পদ থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দেন।
প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ নিয়ে কয়েক সপ্তাহ ধরে সরকারবিরোধী বিক্ষোভে বলিভিয়া অস্থির হয়ে ছিল। এ সময় অন্তত তিন জন নিহত ও বহু লোক আহত হয়।