বন্যায় ঝুঁকিতে ৪০ লাখের বেশি মানুষ
দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক
কয়েক দিনের ব্যাপক বৃষ্টিতে বাংলাদেশের উত্তর ও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় ৪০ লাখের বেশি মানুষ খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা ও রোগের ঝুঁকিতে পড়েছে। গতকাল শুক্রবার ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব রেড ক্রস অ্যান্ড রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটিজ (আইএফআরসি) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ আশঙ্কা প্রকাশ করেছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বন্যা ও ভূমিধসের কারণে সড়ক ও গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় কয়েকলাখ মানুষ বিদ্যুৎহীন অবস্থায় আটকে পড়েছে। ৬৬ হাজারের বেশি বাড়িঘর ধ্বংস হয়েছে। খাদ্য ও পরিষ্কার পানির সংকটের সঙ্গে পানিবাহিত রোগ বাড়ার খবরও পাওয়া গেছে।
আইএফআরসির বাংলাদেশ প্রধান আজমত উলাহ বলেন, এসব মানুষ মওসুমি বৃষ্টি, বন্যার প্রকোপ ও ভূমিধসের মধ্যে নাকাল হচ্ছে। বৃষ্টি কমলেও উজান থেকে নদীগুলোর উপচেপড়া প্রবাহে সামনের দিনগুলোতে বন্যার অবনতি ঘটাবে।
বিস্তৃর্ণ কৃষি অঞ্চলে বন্যায় খাদ্য শস্য নষ্ট হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে, যাতে খাদ্য সংকটের হুমকিও তৈরি হয়েছে। এর ফলে শিশু, প্রসূতি মা, গর্ভবতী মা ও বৃদ্ধরা সবচেয়ে ঝুঁকির মুখে পড়বে বলে শংকা প্রকাশ করা হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে।
আইএফআরসি বলছে, বন্যাকবলিত এলাকাগুলোতে বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্টের ৬৭৫ জন স্বেচ্ছাসেবী কাজ করছে। তারা খাবার, সুপেয় পানি, পরিচ্ছনতা সরঞ্জাম এবং বন্যায় বা ভূমিধসে বাড়িঘর হারানো মানুষদের মধ্যে তাঁবু বিতরণ করছে। বন্যাদুর্গতদের এর মধ্যেই আইএফআরসি ৪ লাখ ৫২ হাজার ৪৩৯ সুইস ফ্রাঁ (প্রায় ৩ কোটি ৮৯ লাখ টাকা) ছাড় করেছে।
এদিকে দেশের ২২ পয়েন্টে নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে যমুনা, গঙ্গা ও পদ্মা ব্যতীত দেশের প্রধান নদীগুলোর পানি সমতল হ্রাস পাচ্ছে বলে জানিয়েছে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র। এমন পরিস্থিতিতে আগামী ২৪ ঘণ্টায় দেশের কোথাও কোথাও বন্যার অবনতি হতে পারে। আবার কোথাও উন্নতি হতে পারে।
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদফতর ও ভারতের আবহাওয়া অধিদফতরের তথ্যানুযায়ী, বাংলাদেশের উজানে ভারতের প্রদেশগুলোয় আগামী ২৪ ঘণ্টায় ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা নেই। বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র বলছে, আগামী ২৪ ঘণ্টায় যমুনা নদীর পানি সমতল হ্রাস পেতে পারে এবং ব্রহ্মপুত্র নদের পানি সমতল হ্রাস অব্যাহত থাকতে পারে।
অপরদিকে আগামী ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত গঙ্গা-পদ্মা নদীর পানি সমতল বৃদ্ধি অব্যাহত থাকতে পারে। এ ছাড়া আগামী ২৪ ঘণ্টায় পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদ জামালপুর এবং পদ্মা নদী সুরেশ্বর পয়েন্টে বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে। একই সময়ে টাঙ্গাইল ও সিরাজগঞ্জ জেলায় বন্যা পরিস্থিতি স্থিতিশীল থাকতে পারে।
অপরদিকে, আগামী ২৪ ঘণ্টায় মানিকগঞ্জ, রাজবাড়ী, ফরিদপুর ও মুন্সিগঞ্জ জেলায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে। তবে বগুড়া, জামালপুর, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, নেত্রকোণা, সুনামগঞ্জ ও সিলেট জেলায় বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে।