September 17, 2024
জাতীয়

বঙ্গবন্ধু হত্যার মূল ষড়যন্ত্রকারীদের বিচারে আনতে ‘কমিশন হবে’

দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার ঘটনায় ‘জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রকারী এবং মদদদাতাদের’ চিহ্নিত করে বিচারের জন্য উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন একটি ‘কমিশন’ গঠন করা হবে বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।

তিনি বলেছেন, সপ্তাহ দুয়েকের মধ্যে তিনি প্রধানমন্ত্রী সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা করবেন। কমিশনের খুঁটিনাটি চূড়ান্ত হলে বিষয়টি মন্ত্রিসভার বৈঠকে তোলা হবে। জাতীয় প্রেসক্লাবে মঙ্গলবার ‘শোকের মাস, ষড়যন্ত্রের মাস আগস্ট’ শিরোনামে এক আলোচনা সভায় এ কথা বলেন মন্ত্রী।

তিনি বলেন, আমরা এই কমিশন ইনশাল­াহ গঠন করবই। এই কমিশনটা কিন্তু অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ কাজ করবে। আমি মনে করি এই কমিশনটা শুধু বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যে কারা ছিল তাদেরকে বের করার জন্যই করা উচিত।

মুক্তিযুদ্ধের চার বছরের মাথায় ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট স্বাধীনতার স্থপতি শেখ মুজিবকে সপরিবারে হত্যা করে একদল সেনা সদস্য; আইন করে বিচারের পথও রুদ্ধ করে দেওয়া হয়। সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ফেরার পর বিচারের পথ খোলে; মামলার পর বিচার শুরু হলেও বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় যাওয়ার পর ফের শ্লথ হয়ে যায় মামলার গতি।

আওয়ামী লীগ ২০০৯ সালে পুনরায় ক্ষমতায় ফেরার পর মামলার চূড়ান্ত নিষ্পত্তি করে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ১২ জনের মধ্যে পাঁচজনের ফাঁসি কার্যকর করে। কিন্তু পেছনের ষড়যন্ত্রকারীরা ওই মামলায় বিচারের আওতায় না আসায় তাদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনার দাবি রয়েছে আওয়ামী লীগ নেতাদের মধ্যে।

বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় প্রসিকিউশনের অন্যতম সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন আজকের আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। আলোচনা সভায় তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডে খন্দকার মোশতাক আহমেদ ও জিয়াউর রহমান যে জড়িত ছিলেন সে বিষয়ে যথেষ্ট তথ্য-প্রমাণ আমাদের কাছে এসেছিল। কিন্তু তারা মারা যাওয়ায়, আইনে সুযোগ না থাকায়, আসামির তালিকা থেকে তাদের নাম বাদ দেওয়া হয়।

কিন্তু দেশের মানুষ ও মুক্তিযুদ্ধের পরবর্তী প্রজন্ম ওই হত্যাকাণ্ডের ‘পেছনের খলনায়কদের’ বিচার ও চিহ্নিত করার উদ্যোগ চায় মন্তব্য করে মন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আছে বলেই কমিশন গঠনের দাবি ওঠানো সম্ভব হয়েছে। আমরাও কমিশন গঠনের দাবি ওঠানোর সাহস পেয়েছি। আজকে হত্যাকাণ্ডের পেছনে যাওয়ার সময় এসেছে।

হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যে যারা ছিল তাদেরকে চিহ্নিত করার সুযোগ পেয়েছি। আমরা সেই সুযোগ কী ছেড়ে দেব? আমরা সেই সুযোগ ছেড়ে দেব না। সম্ভাব্য ওই কমিশনের কাজের পরিধি এখনও ঠিক না হলেও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে শিগগিরই এ বিষয়ে আলোচনা করবেন বলে জানান আইনমন্ত্রী।

তিনি বলেন, নিয়ম মাফিক আমাদেরকে এই কমিশন গঠন করে কিছু ক্ষমতা দিতে হবে। সেই ক্ষমতা দেওয়ার আগেই মন্ত্রিপরিষদের সভায় সিদ্ধান্ত হবে যে, এই কমিশনের প্রধান কে থাকবেন, কমিশনের কাজ কী হবে এবং এই কমিশনকে কতদিন সময় দেওয়া হবে। আমি সপ্তাহ দুয়েকের মধ্যেই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সঙ্গে এই ব্যাপারে আলোচনা করব। তারপর এই কমিশন সম্পর্কে বিস্তারিত জানানো হবে।

তথ্য প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসান অনুষ্ঠানে বলেন, জাতির পিতা হত্যার দায় থেকে আমরা মুক্তি পেতে চাই। আমরা অর্ধেক দায় মুক্তি পেয়েছি। যারা হত্যায় সরাসরি অংশ নিয়েছে- শুধু সেই কাপুরুষদেরই বিচার চাই না, যারা ষড়যন্ত্র করেছে তাদেরও বিচার চাই। কলঙ্কিত অধ্যায় থেকে মুক্তি পাওয়ার অপেক্ষার প্রহর গুণছি। কমিশন গঠন করে বঙ্গবন্ধু হত্যার মাস্টারমাইন্ডদের বিচার করা হোক।

স¤প্রীতি বাংলাদেশের আয়োজনে এ আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের আহŸায়ক পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়। সঞ্চালনা করেন সংগঠনের সদস্য সচিব অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহতাব। অন্যদের মধ্যে সাবেক বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক এবং সংসদ সদস্য শফিকুর রহমান আলোচনায় অংশ নেন।

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *