বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ জনগণকে এখনো অনুপ্রাণিত করে : প্রধানমন্ত্রী
দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ দেশকে এগিয়ে নিতে এখনো জনগণকে অনুপ্রাণিত করছে। তিনি বলেন, ‘দেশকে এগিয়ে নিতে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ এখনো আমাদেরকে অনুপ্রেরণা জোগাচ্ছে।’
তিনি সোমবার সকালে ঐতিহাসিক ৭ মার্চ ২০২২ উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে এ কথা বলেন। শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় আয়োজিত অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন।
প্রধানমন্ত্রী আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেছেন, কেউ আর নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস সম্পর্কে বিভ্রান্ত করতে পারবে না, কারণ বিশ্ব প্রযুক্তিগত অগ্রগতির জন্য নতুন প্রজন্মের কাছে এখন সবকিছুই উন্মুক্ত। শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস আর কেউ বিকৃত করতে পারবে না। পারবে না তরুণ প্রজন্মকে বিভ্রান্ত করতে।’
তিনি বলেন, ‘আজকের প্রজন্মের সামনে বিশ্ব আজ উন্মুক্ত। কাজেই তারা আর বিভ্রান্ত হতে পারে না যদিও অতীতের সরকারগুলো ২১ বছর ধরে এটি করেছে। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে, প্রযুক্তির যুগে তাদের (নতুন প্রজন্ম) অন্ধকারে ঠেলে দেয়া সম্ভব হবেনা।’ বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে এবং আরও এগিয়ে যাবে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতার ৭ মার্চের ভাষণ লক্ষ্য অর্জনে সবাইকে উৎসাহিত করবে।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ উপলক্ষে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় রাজধানীর শেরে বাংলা নগরে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক এবং শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন। সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ এমপির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আবুল মনসুর। অনুষ্ঠানের শুরুতে জাতীয় সংগীত পরিবেশন এবং বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ বাজানো হয়।
এদিকে সোমবার দুপুরে ঐতিহাসিক ৭ মার্চ উপলক্ষে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউস্থ দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় গণভবন থেকে ভিডিও কানফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে সভাপতির বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেছেন, মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে বৈশি^ক মন্দা ও দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতিতে তাঁর সরকার দেশের বাজারে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য বাজার মনিটরিং করছে। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বেড়ে গেলে এখানেও সে প্রভাবটা পড়ে, আর কিছু সুবিধাভোগী শ্রেণি রয়েছে এই সুযোগটা নেয়ার জন্য।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দ্রব্যমূল্য নিয়ে একটা কথা এসেছে। দ্রব্যমূল্য কেবল বাংলাদেশে নয়, করোনাভাইরাসের কারণে সারাবিশে^র অর্থনীতি মন্দা। যে কারণে আজকে পৃথিবীর সব দেশে সেই সুদুর আমেরিকা থেকে শুরু করে সবদেশের দ্রব্যমূল্য ভীষণভাবে বেড়ে গেছে।’
তিনি বলেন, ‘এটা একটা অনাকাঙ্খিত ঘটনা, রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমণ করেছে। যার কুফলটা আমরা ভোগ করছি। আমাদের এখানে কিছু জিনিসের দাম বাড়ছে কারণ, আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বেড়ে গেলে স্বাভাবিকভাবে এখানেও তার প্রভাবটা পড়ে।’ তিনি বলেন, ‘তাছাড়াও কিছু লোক এখানে আছেই এই সংকটময় মুহূর্তে ব্যবসা করে তারা দু’পয়সা বেশি কামাই করতে চায়। সেখানে মনিটরিং আমরা করছি।’
এ সময় দেশব্যাপী খাদ্য উৎপাদন বাড়ানোর মাধ্যমেই যে কোন সংকট মোকাবেলায় প্রস্তুত থাকার জন্য দেশের এক ইঞ্চি জমিও যেন অনাবাদি পড়ে না থাকে সে দিকে লক্ষ্য রাখতে সকলের প্রতি তাঁর আহবান পুনর্ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, দেশবাসীকে আমি বলবো খাদ্যে যেন কখনো আমাদের অভাব না হয়। যে যা পারবে কিছু উৎপাদন করবে। নিজের চাহিদা নিজে পূরণের চেষ্টা করবেন। এটা করতে পারলে আমাদের কারো মুখাপেক্ষী হয়ে থাকতে হবে না।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এমপিও বক্তৃতা করেন। আরো বক্তৃতা করেন, আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী এমপি, কৃষিমন্ত্রী ড. মুহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাক, শাজাহান খান এমপি, অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক ও মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, বীর বিক্রম।
এ ছাড়া সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন, শ্রম ও মানব সম্পদ সম্পাদক হাবিবুর রহমান সিরাজ, ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তর মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির ও এসএম মান্নান ও বক্তৃতা করেন। আলোচনা সভা সঞ্চালনা করেন দলের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ এমপি।
দক্ষিণাঞ্চল প্রতিদিন/ জে এফ জয়