বঙ্গবন্ধুর খুনি মাজেদের ফাঁসি যে কোনো দিন: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত আসামি অবসরপ্রাপ্ত ক্যাপ্টেন আবদুল মাজেদ প্রাণভিক্ষার আবেদন নাকচ হয়ে যাওয়ায় এখন যে কোনো দিন তার ফাঁসি কার্যকর করা হতে পারে বলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল জানিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “প্রাণভিক্ষার আবেদন মহামান্য রাষ্ট্রপতি কর্তৃক নাকচ হয়েছে। এখন ফাঁসি ছাড়া আর কোনো কাজ বাকি নেই।”
১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট যে সেনা সদস্যরা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করেছিল, মাজেদ তাদের একজন।
অনেক বাধা বিপত্তি পেরিয়ে সেই হত্যাকাণ্ডের বিচার শেষে ২০০৯ সালের নভেম্বরে সর্বোচ্চ আদালত থেকে ১১ জনের ফাঁসির রায় আসে। তাদের মধ্যে পাঁচ আসামির মৃত্যুদণ্ড ২০১০ সালের ২৮ জানুয়ারি কার্যকর করা হলেও মাজেদসহ ছয়জন পলাতক থাকেন।
দুই দশকেরও বেশি সময় ভারতের পালিয়ে থাকার পর গত মঙ্গলবার সকালে ঢাকার মিরপুর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার হন সাবেক সেনা কর্মকর্তা মাজেদ। তার দণ্ড কার্যকর করতে বুধবার ঢাকার জজ আদালত মৃত্যু পরোয়ানা জারি করে।
রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার সময় বহু বছর আগেই পেরিয়ে যাওয়ায় আবদুল মাজেদের সামনে সেই সুযোগ ছিল না। ফাঁসির দড়ি এড়ানোর শেষ চেষ্টা হিসেবে বুধবার সন্ধ্যায় তিনি রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন করেন।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার দায়ে ফাঁসির রায় মাথায় নিয়ে পলাতক আবদুল মাজেদকে গ্রেপ্তারের পর মঙ্গলবার কারাগারে পাঠানো হয়।
কিন্তু রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বুধবার রাতেই সে আবেদন নাকচ করে দিলে মাজেদের দণ্ড কার্যকর করার পথে সব বাধা কাটে।মাজেদকে রাখা হয়েছে কেরানীগঞ্জে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের কনডেম সেলে। কারাগারের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, নির্দেশ পেলে বুধবার রাতেই দণ্ড কার্যকর করার প্রস্তুতি তাদের ছিল। তবে রাতে আর সে নির্দেশ তারা পাননি।
কবে মাজেদের ফাঁসি কার্যকর করা হবে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বৃহস্পতিবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সময় নির্ধারণ এখনও করিনি। আজ তো সঙ্গত কারণে মনে হয় আমরা করব না (শবে বরাতকে ইঙ্গিত করে)।
“কাল শুক্রবার, কাল হয়ত নাও করতে পারি। ইট ডিপেন্ডস অন… আমরা যে কোনো দিন কার্যকর করতে পারি। পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করে।”
তবে মাজেদের ফাঁসি কার্যকর করার সব ধরনের প্রস্তুতিই কারা কর্তৃপক্ষ নিয়ে রেখেছে বলে জানান মন্ত্রী।
অতিরিক্ত কারা মহাপরিদর্শক কর্নেল মো. আবরার হোসেনও প্রস্তুতি নিয়ে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে একই কথা বলেছেন।
তবে দণ্ড কার্যকর করার আগে সাধারণত পরিবারের সদস্যদের শেষবার দেখা করার সুযোগ দেওয়া হয়। মাজেদের স্ত্রী সালেহা বেগম, চার মেয়ে ও এক ছেলে থাকেন ঢাকা সেনানিবাসের এক নম্বর রোডের একটি বাসায়।
যোগাযোগ করা হলে সালেহা বেগম বৃহস্পতিবার দুপুরে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “কারাগার থেকে কিছুক্ষণ আগে একজন এসে বাসার ঠিকানা, ফোন নম্বর নিয়ে গেছে। এর বেশি আর কিছু জানায়নি।”
কারাগারে গিয়ে মাজেদের সঙ্গে দেখা করতে চান কি না জিজ্ঞেস করলে তার স্ত্রী বলেন, “চিন্তা তো করছিই, কিন্তু দেখা করতে কি দেবে? তারপরও একবার দেখা করার চেষ্টা করব।”