বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে ‘গোপন নথি’ গবেষণার গুরুত্বপূর্ণ দলিল
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বিরুদ্ধে তৎকালীন পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থার ‘গোপন নথি’ বাংলাদেশের রাজনীতি ও ইতিহাস গবেষকদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ দলিল বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বৃহস্পতিবার (০৪ নভেম্বর) স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় লন্ডনে হোটেল ক্ল্যারিজে বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থার গোপন নথি নিয়ে প্রকাশিত ‘সিক্রেট ডকুমেন্টস অব ইন্টেলিজেন্স ব্রাঞ্চ অন ফাদার অব দ্য নেশন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান’এবং ‘মুজিব অ্যান্ড ইন্ট্রোডাকশন’ বই দুইটির প্রকাশনা অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন শেখ হাসিনা।
‘সিক্রেট ডকুমেন্টস অব ইন্টেলিজেন্স ব্রাঞ্চ অন ফাদার অব দ্য নেশন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান’ বইটির আন্তর্জাতিক প্রকাশক ‘টেইলন অ্যান্ড ফ্রান্সিস গ্রুপ’ এবং ‘মুজিব অ্যান্ড ইন্ট্রোডাকশন’ বইটির প্রকাশক নোমাদ পাবলিকেশন।
‘সিক্রেট ডকুমেন্টস অব ইন্টেলিজেন্স ব্রাঞ্চ অন ফাদার অব দ্য নেশন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান’ বইটি প্রথম প্রকাশ করে বাংলাদেশি প্রকাশক হাক্কানি পাবলিসার্স।
সিক্রেট ডকুমেন্টস অব ইন্টেলিজেন্স ব্রাঞ্চ অন ফাদার অব দ্য নেশন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান’ বই প্রকাশে ব্রিটিশ প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান টেইলর অ্যান্ড ফ্রান্সিস গ্রুপের আগ্রহের কারণ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘তারা আমাকে বলেছেন এটার ভেতরে এমন কিছু তারা পেয়েছেন যেটা শুধু বাংলাদেশের জন্য না সারাবিশ্বের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ দলিল। এখান থেকে অনেক কিছু শেখার আছে। এখনও গোয়েন্দা সংস্থায় প্রশিক্ষণের জন্যও এটা কাজে লাগতে পারে। ’
বঙ্গবন্ধুকে পাকিস্তান গোয়েন্দা সংস্থার গোপন নথিতে রাজনীতি ও বাংলাদেশের ইতিহাস নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য আছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এ বই থেকে পুরো ইতিহাসটা পাওয়া যাবে। ’
তিনি বলেন, মানুষ বইটি পড়বে, এটি নিয়ে গবেষনা করবে এবং অনেক কিছু শিখবে, তথ্য সংগ্রহ করবে এবং তারা বাংলাদেশের ইতিহাস সম্পর্কে জানবে, শুধু বাঙালি জাতি নয় সারাবিশ্বের মানুষ। এটা সত্যিই অসাধারণ।
আশা প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ অবস্থার মধ্য দিয়ে আমরা অন্তত বলতে পারি এটা বের হওয়ার পর থেকে আর ইতিহাস বিকৃত কেউ করতে পারেনি, করতে পারবে না।
‘সিক্রেট ডকুমেন্টস অব ইন্টেলিজেন্স ব্রাঞ্চ অন ফাদার অব দ্য নেশন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান’বইটি প্রকাশের প্রেক্ষাপট তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, এসবি থেকে ডকুমেন্টগুলো জোগাড় করলাম। আমার সঙ্গে আমার বান্ধবী বেবি মওদুদসহ আমরা ডকুমেন্টটা নিয়েছি। এখানে প্রায় ৪৫ থেকে ৫০ হাজার পাতার কাগজ আছে। প্রায় ৪৮টি ফাইল। ৪৫ থেকে ৫০ হাজার কাগজ।
বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, ‘আমার ছোট বোন রেহানার সঙ্গে কথা বললাম। আমি তাকে বললাম যেতটুকু পেয়েছি এর মধ্যে অনেক তথ্য। কারণ আমার আব্বার নাম ইতিহাস থেকে সম্পূর্ণ মুছে ফেলা হয়েছে। ভাষা আন্দোলনে ওনার যে কোন অবদান আছে বা স্বাধীনতা আন্দোলনে ওনার যে কোন অবদান আছে সেটা ইতিহাসে নাই। একজন মেজর কোন ড্রামের ওপর দাঁড়িয়ে একটা বাঁশি বাজালো বাংলাদেশ স্বাধীন হয়ে গেলো, এ ছিল ইতিহাস। তো এ বই থেকে পুরো ইতিহাসটা পাওয়া যাবে। আমি এটা প্রকাশ করবো। ’
শেখ হাসিনা তার মা বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিবের অবদানের কথা তুলে ধরে বলেন, ‘যখন আব্বা জেলে থাকতেন আমার মা কাজ করতেন। তবে আমার মার ব্যাপারে বলবো যে উনি সত্যিকার গেরিলা ছিলেন। উনার কোন কর্মকাণ্ড কোনদিন গোয়েন্দারা ধরতে পারেননি। ‘
পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশ হাইকমিশন লন্ডন এর উদ্যোগে ‘বঙ্গবন্ধু ও ব্রিটেন’ শীর্ষক এক চিত্র প্রদর্শনী উদ্বোধন করেন।
অনুষ্ঠান দুটোতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে অন্যান্যের উপস্থিত ছিলেন তার ছোট বোন শেখ রেহানা ও কন্যা সায়মা ওয়াজেদ।