November 25, 2024
আঞ্চলিক

ফেসবুকে যাচ্ছেন খুবির সাবেক শিক্ষার্থী আশফাক সালেহীন

বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকএ পার্টনার ইঞ্জিনিয়ার (Android-L4) হিসেবে ডাক পেয়েছেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী আশফাক সালেহীন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেক্ট্রনিকস এন্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং ডিসিপ্লিনের ২০০৮-০৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।
গতকাল বিকেলে তিনি নিজের ফেসবুকে বিষয়টি নিশ্চিত করে স্টাটাস দেন। তিনি ফেসবুক পোস্টে লিখেন, ‘আমি আজকে ফেসবুক লন্ডন অফিসে পার্টনার ইঞ্জিনিয়ার রোলে অফার পেয়েছি।’ তার এ আসামান্য অর্জনের জন্য মুহূর্তেই খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় মহলে প্রশংসায় ভাসতে থাকেন।
কখন থেকে স্বপ্ন দেখা শুরু করেছিলেন এমন প্রয়্নের জবাবে বলেন৷ খুবিতে পড়া অবস্থায় আমি এতটা আশা করিনি, কারণ তখন এইসব কোম্পানি তে ঢোকার জন্য কি করতে হয় অথবা কিভাবে প্রস্তুতি নিতে হয়, কিছুই জানতাম না। ২০১৩ সালে বিএসসি শেষ করার পর ঠিক করি সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং এ মুভ করবো। এরপর বেশ কয়েক বছর থাইল্যান্ড এর কিছু বড় প্রতিষ্ঠানে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কয়েক বছর চাকরি করি। এক পর্যায়ে আমি উপলব্ধি করি সামাজিক অবস্থানগত দিক দিয়েও একজন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে FAANG এ ঢোকা আমার জন্য অতি জরুরি। আমার লক্ষ্য ছিল ফেইসবুক, গুগল এবং এমাজন এই তিনটি কোম্পানির যে কোনো একটি থেকে অফার আনা।
আশকাক সালেহীন আরও বলেন, আমার পথে বাধা ছিল আমার CSE এর একাডেমিক জ্ঞানের অভাব এবং কখনো কম্পিটিটিভ প্রোগ্রামিং না করা। দীর্ঘ দেড় বছর আমি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং সব রকম সোশ্যাল লাইফ থেকে পুরোপুরি  দূরে ছিলাম। পুরা জীবনটা ডাটা স্ট্রাকচার, এলগোরিদম, লিটকোড আর এলগো এক্সপার্ট এ আটকে ফেলছিলাম। এক বছরে ছয় শতাধিক প্রব্লেম সলভ করেছি। নিজেকে আমার পুনরায় গড়ে তুলতে হয়েছিলো। তবে সবকিছু আমাকে তার মূল্য পরিশোধ করেছে। এই সফলতার আগে আমি ৫ টা ব্যর্থতা দেখছি। প্রথমে একবার ফেসবুক থেকে, তারপর তিনবার এমাজন থেকে, এবং একবার গুগল থেকে রিজেকশনের পর আমি আমি এটি সম্ভব করেছি।
অনুভূতি ব্যক্ত করে তিনি বলেন, একটা অনেক বড় স্বপ্ন পূরণ হলো আমার। ইচ্ছা প্রবল ছিল তাই ঠিক করেছিলাম না হওয়া পর্যন্ত চেষ্টা চালিয়ে যাবো। তার জন্য আমার আপাত প্রতিষ্ঠিত ক্যারিয়ার যদি জলাঞ্জলি দেয়া লাগে তাতেও পিছপা হবো না। শেষ পর্যন্ত যে এই গোলটা এচিভ করতে পেরেছি এতে আমি অনেক খুশি।
তার এ অর্জনের পিছনে তার পরিবারের সদস্যদের অবদানের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আসলে এই অর্জন যতটা আমার ততটা আমার স্ত্রীরও। আমি তার উপর অসম্ভব কৃতজ্ঞ। বারবার রিজেকশনের  পর আমি যখন ক্লান্ত তখন আমি নিজের উপর ভরসা হারালেও সে হারায়নি। আমাকে সর্বোতভাবে উত্সাহ দিয়ে গেছে। আমি তাকে কোন সময় দিতে পারিনি তাও সে হাসিমুখে মেনে নিয়েছে। আমি অবশ্য তার ঋণ শোধ করতে চাইও না।
তাছাড়া এরকম পারিপার্শ্বিকতা থেকে আমাকে এভাবে তৈরি করছেন আমার মা। আমার এই প্রক্রিয়ার সময়ে তার ব্যাকুলতা, এবং প্রতিদিন দোয়ার ঋণও আমি শোধ করতে পারবো না। আমার বাবাও নিজের জন্য কিছু না করে আমাদের পিছনে নিজের সর্বস্ব ব্যয় করেছেন, দোয়া করেছেন।
যারা ভবিষ্যতে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং এ ক্যারিয়ার গড়তে চায় তাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, তাদের উচিত ডাটা স্ট্রাকচার এবং এলগোরিদমের উপরে অনেক জোর দেয়া এবং এই বিষয়ে ভালো কোনো একাডেমিক বই আদ্যোপান্ত পড়া। এরপর কম্পেটিটভ প্রোগ্রামিং এবং কনটেস্ট এ নিয়মিত অংশগ্রহণ করা উচিত।
শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *