ফেনীতে ফেইসবুকে ‘ত্রাণে অনিয়মের’ কথা বলায় মারধরের অভিযোগ
ফেনীতে ‘ত্রাণের অনিয়ম নিয়ে’ ফেইসবুকে পোস্ট দেওয়ায় এক যুবককে পিটিয়ে আহত করার এবং তার ফার্মেসিতে ভাংচুর-লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় এক যুবলীগ নেতার সমর্থকদের বিরুদ্ধে
আহত মো. ওমর (২৯) ফেনী জেনারেল হাসপাতাল চিকিৎসাধীন। তিনি সদর উপজেলার পাঁচগাছিয়া ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ছিদ্দিকুর রহমানের ছেলে। এলাকায় একটি ফার্মেসি আছে তার।
শুক্রবার বিকালে আহত অবস্থায় ফেইসবুক লাইভে এসে নিজের অভিযোগের কথা বলেন ওমর। এরপর বিষয়টি এলাকায় ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেয়।
তবে যার বিরুদ্ধে অভিযোগ, সেই জেলা যুবলীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক আবু সুফিয়ান মারধরের কথা অস্বীকার করে বলেছেন, তার বিরুদ্ধে ‘অপপ্রচার’ হচ্ছে।
ওমর বলেন, “পাঁচগাছিয়া ইউনিয়নের মাথিয়ারা গ্রামে এক হতদরিদ্র বাবা-ছেলে ত্রাণ না পাওয়ায় আমি ফেইসবুকে পোস্ট দিয়েছিলাম। তাতে ক্ষিপ্ত হয়ে যুবলীগ নেতা আবু সুফিয়ানের অনুসারীরা আমাকে ডেকে নেয়। স্থানীয় মুরব্বিদের উপস্থিতিতে আমাকে ফেইসবুকের পোস্টের বিষয়ে জিজ্ঞেস করে।
“এক পর্যায়ে সুফিয়ানের অনুসারী আলমগীর, রাজু, রাজন, হানিফ, আকবর, ইসমাইল, আজাদ, আরাফাত, মানিকসহ ৩০-৪০ জন আমার উপর হামলা করে। আমি প্রাণভয়ে ছুটে আমার দোকানে এসে বাঁচার চেষ্টা করি। পরে তারা আমার দোকানে এসেও ভাঙচুর ও লুটপাট করে, আমাকে মারাত্মকভাবে জখম করে।”
ওমরের অভিযোগ, সরকার ফেনীর অসহায় ও দরিদ্র মানুষদের জন্য ত্রাণ বরাদ্দ দিলেও স্থানীয় কিছু নেতা তা সঠিকভাবে বণ্টন না করে ‘নিজেদের পছন্দের লোকজনকে’ দিচ্ছেন।
“প্রকৃত অসহায় মানুষরা বঞ্চিত হচ্ছে ত্রাণ পাওয়া থেকে। স্থানীয় প্রতিবন্ধী জয়নাল ত্রাণ থেকে বঞ্চিত হওয়ায় আমি তা ফেইসবুকে তুলে ধরে তার জন্য সাহায্যের জন্য আবেদন করি। তা দেখে পৌর যুবলীগ নেতা রফিক ভাইসহ অনেকে জয়নালকে সাহায্য করেছেন।”
তবে মারধরের কথা অস্বীকার করে যুবলীগ নেতা সুফিয়ান বলেন, “ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রমকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য একটা গোষ্ঠী ওমরকে দিয়ে এ ধরনের অপপ্রচার করছে।”
ওমরের দোকানে হামলার বিষয়ে প্রশ্ন করলে সুফিয়ান বলেন, “দোকান ভাঙচুর বা লুটপাটের ঘটনা ঘটেনি, সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন কথাবার্তা।”
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পাঁচগাছিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন মানিক বলেন, “হামলার বিষয়টি আমি শুনেছি। কারা হামলার সাথে জড়িত তা এখনো জানি না। তবে হামলাকারী যেই হোক তার বিচার হওয়া উচিৎ।”
আর ফেনী মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সাজেদুল ইসলাম জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।
“আহতের পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় লিখিত অভিযোগ দিতে বলা হয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ফেনী জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগে চিকিৎসক ডা. আজিজ জানান, ওমরের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তাকে হাসপাতালে ভর্তি রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।