ফিদেল কাস্ত্রোর পর কিউবার প্রথম প্রধানমন্ত্রী মাররেরো
চার দশকেরও বেশি সময় পর কিউবায় প্রথম কোনো প্রধানমন্ত্রীকে নিয়োগ দিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট মিগেল দিয়াজ-কানেল।
পর্যটন বিষয়ক মন্ত্রী ম্যানুয়েল মাররেরো ক্রুজ শনিবার কিউবার নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন বলে জানিয়েছে বিবিসি।
ক্যারিবিয়ান দেশটিতে সর্বশেষ এ পদে ছিলেন কিংবদন্তি বিপ্লবী ফিদেল কাস্ত্রো। ১৯৭৬ সালে তার তত্ত্বাবধানেই প্রধানমন্ত্রী পদটি বিলুপ্ত হয়ে কিউবায় প্রেসিডেন্ট নেতৃত্বাধীন সরকারব্যবস্থা চালু হয়েছিল।
চলতি বছরের শুরুতে পাস হওয়া নতুন সংবিধানে প্রধানমন্ত্রী পদটি ফিরিয়ে আনা হয়।
“প্রজাতন্ত্রের প্রেসিডেন্টের প্রশাসনিক ডান হাত হিসেবে কাজ করবেন সরকারপ্রধান,” ৫৬ বছর বয়সী মাররেরোর দায়িত্ব সম্পর্কে এমনটাই বলেছে কিউবার রাষ্ট্রপরিচালিত সংবাদমাধ্যম কিউবা ডিবেট।
শনিবার ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির ডেপুটিরা সর্বসম্মতিক্রমে মাররেরোর প্রধানমন্ত্রী পদে নিয়োগকে অনুমোদন দেন।
কিউবার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম গ্রানমা মাররেরোকে পর্যটন শিল্পের ‘মূল থেকে উঠে আসা’ রাজনীতিক হিসেবে পরিচয় করিয়ে দিয়েছে। এ পর্যটন খাতই দেশটির বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের অন্যতম প্রধান উৎস।
২০০০ সালে মাররেরো কিউবার সামরিক বাহিনী পরিচালিত গাভিয়াতা ট্যুরিজম গ্রুপের প্রেসিডেন্ট হন; ট্রাম্প প্রশাসন গাভিয়াতার হোটেলগুলোর ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়ে রেখেছে।
ফিদেল কাস্ত্রো ২০০৪ সালে মাররেরোকে দেশটির পর্যটন বিষয়ক মন্ত্রী করেন; এরপর থেকে দ্বীপদেশটির পর্যটন খাতে ব্যাপক অগ্রগতি লক্ষ্য করা গেছে।
প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরও মাররেরো আগের দায়িত্বে বহাল থাকবেন কি না, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
নতুন প্রধানমন্ত্রীর নাম ঘোষণা করে প্রেসিডেন্ট দিয়াজ কানেল বিদেশি বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়টি দেখভালের বিষয়ে মাররেরোর গুণের ভূয়সী প্রশংসা করেন। নতুন প্রধানমন্ত্রীর ‘সততা, কর্মদক্ষতা এবং কমিউনিস্ট পার্টি ও বিপ্লবের প্রতি আনুগত্যের’ ওপরও জোর দেন তিনি।
১৯৫৯ সালের কমিউনিস্ট বিপ্লবের পর ক্ষমতায় এসে ফিদেল কাস্ত্রো নিজেকে প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করেছিলেন। টানা ১৮ বছর এ পদে থাকার পর ১৯৭৬ সালে পদটি বিলুপ্ত করে তিনি কমিউনিস্ট পার্টির প্রধান এবং কাউন্সিল অব স্টেট ও কাউন্সিল অব মিনিস্টার্সের প্রেসিডেন্ট হন।
স্বাস্থ্যের ক্রমাবনতির কারণে ২০০৬ সালে তিনি ভাই রাউল কাস্ত্রোর হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন। কিংবদন্তি এ বিপ্লবী ২০১৬ সালে মারা যান।
দুই বছর পর রাউলও কিউবার প্রেসিডেন্ট পদ থেকে নিজেকে সরিয়ে নেন। ৮৮ বছর বয়সী এ নেতা এখনও কিউবার কমিউনিস্ট পার্টির শীর্ষ পদে আসীন; রাজনৈতিক-প্রশাসনিক যে কোনো সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে তার প্রভাবের বিষয়টিও অজানা নয়।