November 26, 2024
আন্তর্জাতিককরোনা

‘ফাইজারের ভ্যাকসিন উন্নয়নশীল দেশের উপযুক্ত নয়’

মার্কিন ফার্মাসিউটিক্যাল জায়ান্ট ফাইজারের তৈরি করোনা ভ্যাকসিন উন্নয়নশীল দেশে ব্যবহারের উপযোগী নয় বলে জানিয়েছেন পাকিস্তানের এক শীর্ষ বিজ্ঞানী। ভ্যাকসিনটি মাইনাস ৮০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় পরিবহন করতে হয়, তার ওপর ভাইরাসপ্রতিরোধী হতে গ্রহণ করতে হয় অন্তত দু’টি ডোজ। একারণে পাকিস্তানের মতো উষ্ণ আবহাওয়া বিশিষ্ট উন্নয়নশীল দেশে এর সফলতা পাওয়া কঠিন বলে জানিয়েছেন ওই বিজ্ঞানী।

গত সোমবার নিজেদের তৈরি ভ্যাকসিন করোনা প্রতিরোধে ৯০ শতাংশ কার্যকার বলে দাবি করেছে ফাইজার ও জার্মান প্রতিষ্ঠান বায়োএনটেক। সুরক্ষার পরীক্ষাতেও শতভাগ উতরে গেছে সেটি। ছয়টি দেশে পরিচালিত ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে এ ফলাফল মিলেছে বলে জানিয়েছে সংস্থা দু’টি। করোনা মহামারিতে বিপর্যস্ত বিশ্বে ফাইজারের কার্যকর ভ্যাকসিন উদ্ভাবনের খবর নতুন করে আশা জাগিয়েছে।

তবে পাকিস্তানের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি টাস্কফোর্সের প্রধান অধ্যাপক আত্তা উর রহমান বলেছেন, ফাইজারের ভ্যাকসিন নিয়ে পাকিস্তান বা এর মতো উন্নয়নশীল দেশে আনন্দ উদযাপন অপরিণত বুদ্ধিমত্তার পরিচয় মাত্র।

 

সম্প্রতি মার্কিন রেডিও নেটওয়ার্ক ভয়েস অব আমেরিকাকে দেয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ভ্যাকসিনটি মেসেঞ্জার আরএনএ-ভিত্তিক এবং মাইনাস ৮০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় পরিবহন করতে হয়। এটি উন্নয়নশীল দেশের জন্য উপযুক্ত নয়।

বিষয়টি ব্যাখ্যা করে অধ্যাপক রহমান বলেন, বিমানবন্দর থেকে এটি শহর ও দেশজুড়ে পরিবহনের মতো কোল্ড স্টোরেজ অবকাঠামো উন্নয়নশীল বিশ্বে পাওয়া যাবে না।

তিনি আরও বলেন, করোনা রোগীদের তিন সপ্তাহের ব্যবধানে ফাইজারের ভ্যাকসিনের দু’টি ডোজ নিতে হবে। যে পাকিস্তানের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে গ্রীষ্মকালে গড় তাপমাত্রা ওঠে ৪০ থেকে ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস, সেখানে নিম্ন তাপমাত্রায় পরিবহনের আবশ্যকতা বিষয়টিকে আরও কঠিন করে তুলেছে।

তাহলে উপায়?
পাকিস্তানের এ বিজ্ঞানী জানান, তার দেশে চীনের তৈরি দু’টি ভ্যাকসিনের শেষ পর্যায়ের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল চলছে। এই ভ্যাকসিনগুলো স্বাভাবিক তাপমাত্রাতেই পরিবহন করা যাবে।

অধ্যাপক রহমান বলেন, আমাদের ট্রায়াল খুব ভালোভাবে চলছে। আমি যতদূর জানি, ফলাফল খুবই ইতিবাচক। দু’টি ভ্যাকসিনেরই মাইনাস ৮০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পরিবহনের সমস্যা নেই। আশা করি, ভ্যাকসিনগুলো ফাইজারেরটির তুলনায় পাকিস্তানের জন্য বেশি উপযোগী হবে।

জানা গেছে, পাকিস্তানে ট্রায়াল চলমান ভ্যাকসিন দু’টির একটি তৈরি করেছে চীনা বায়োটেক ফার্ম ক্যানসিনোবায়ো। সেটি ইতোমধ্যেই তৃতীয় ধাপের ট্রায়ালে পৌঁছে গেছে। পাকিস্তান ছাড়াও চীন, রাশিয়া, চিলি ও আর্জেন্টিনায় চলছে এর কার্যকারিতা পরীক্ষা।

অধ্যাপক আত্তা উর রহমান জানান, পাকিস্তানে গত সেপ্টেম্বরে শুরু হয়েছে এই ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল। এটি শেষ হতে অন্তত তিন মাস সময় লাগবে। এরপর ট্রায়ালের ফলাফল পর্যালোচনার জন্য চীনে পাঠানো হবে।

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *