ফতুল্লার ‘জঙ্গি আস্তানায়’ বিস্ফোরক, গ্রেপ্তার ২
নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে একটি বাড়ি ঘিরে অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক ও বোমা তৈরির সরঞ্জাম পাওয়ার কথা জানিয়েছে পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট।
এ ঘটনায় দুইজনকে গ্রেপ্তার ও একজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটকের কথা জানিয়ে কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের প্রধান অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক মনিরুল ইসলাম বলেছেন, এরা ‘নব্য জেএমবির সদস্য’। আর ওই বাড়িতে পাওয়া বিস্ফোরকের সঙ্গে সাম্প্রতিক সময়ে ঢাকায় পাওয়া বিভিন্ন বোমার মিল রয়েছে।
সদর উপজেলার ফতুল্লা শিয়াচর এলাকায় তক্কার মাঠ সংলগ্ন এক তলা একটি বাড়ি ঘিরে রোববার মধ্যরাতে কাউন্টার টেররিজম পুলিশ ও জেলা পুলিশের এ অভিযান শুরু হয়।
কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের সহকারী কমিশনার মো. তৌহিদুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ওই বাড়ির ভেতরটা ল্যাবরেটরির মত সাজানো। ভেতরে ইমপ্রোভাইসড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস (আইইডি) রয়েছে। আমাদের বোমা নিষ্ক্রিয়কারী দলের সদস্যেরা সেগুলো ডিফিউজ করতে কাজ করছে।”
ওই বাড়ির মালিক জয়নাল আবেদীন বাংলাদেশ ব্যাংকের অবসরপ্রাপ্ত একজন ডিজিএম। তার দুই সন্তানের মধ্যে বড় ছেলে ফরিদউদ্দিন রুমি ঢাকার আহসানউল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের মেকানিক্যাল ও প্রোডাকশন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের শিক্ষক। আর ছোট ছেলে জামালউদ্দিন রফিক খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) শিক্ষার্থী। রুমির স্ত্রী জান্নাতুল ফোয়ারা অনু অগ্রণী ব্যাংকে চাকরি করেন বলে পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের সদস্যরা আগে থেকেই এই পরিবারের সদস্যদের ওপর নজর রাখছিলেন। রোববার রাতে তারা বাড়িটি ঘিরে ফেলেন এবং সকালে বোমা নিষ্ক্রিয়কারী দল ও সোয়াট সদস্যরা আসার পর অভিযান শুরু হয়।
প্রথমে রোবট বাহন পাঠিয়ে দূর নিয়ন্ত্রত ক্যামেরার মাধ্যমে ভেতরের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হয়। পরে অন্তত তিনটি বিস্ফোরকে নিয়ন্ত্রিত বিস্ফোরক ঘটানো হয়।
পুলিশ সদস্যরা ওই বাড়ির ২০০ গজ দূর থেকে পুরো এলাকা ঘিরে রাখলেও উৎসুক জনতা সড়ক ও আশপাশের বহুতল বাড়ির ছাদে ভিড় করে।
দুপুরে ওই বাড়ির কাছে সবাংবাদিকদের সামনে এক ব্রিফিংয়ে এসে কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের প্রধান মনিরুল বলেন, মিজানুর রহমান নামে নব্য জেএমবির এক সদস্যকে রোববার রাতে গ্রেপ্তার করা হয়। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের পর রাতে ঘিরে ফেলা হয় ফতুল্লার ওই বাড়ি। তখনই রুমিকে গ্রেপ্তার করা হয়।ভোরের দিকে ওই বাড়িতে বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরকের মজুদ থাকার বিষয়ে নিশ্চিত হন কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের সদস্যরা।
মনিরুল বলেন, “আমরা এই দলের আরও কয়েকজনের তথ্য পেয়েছি। তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।”
জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মনিরুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “অভিযান চলছে। আমরা কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটকে সহযোগিতা করছি। অভিযান শেষে বিস্তারিত বলা যাবে।”
সুত্রঃ বিডিনিউজ ২৪