November 30, 2024
আঞ্চলিক

ফকিরহাটে লাগামহীন ঔষধের বাজার, কর্তৃপক্ষ নীরব

 

ফকিরহাট প্রতিনিধি

বাগেরহাটের ফকিরহাট বাজারে হঠাৎ বিভিন্ন ওষুধের দাম লাগামহীন বৃদ্ধি পেয়েছে। একটি চক্র মূল্য বাড়িয়ে চললেও নির্বিকার ওষুধ প্রশাসন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ক্রেতা বলেন, প্রতিদিন চিকিৎসকের নির্দেশ অনুযায়ী খাবারের আধা ঘন্টা আগে ইনস্পেটা কোম্পানির গ্যাসের ওষুধ প্যান্টনিক্স লাগে। গত সপ্তাহে ২০ এমজি ৫ টাকা দিয়ে ক্রয় করেছি। এখন বলে প্রতি ওষুধের পিস নাকি ৬ টাকা। ৪০ এমজি ওষুধের মূল্য ৬ টাকা থেকে ৭ টাকা। কি কারণে ওষুধের মূল্য বৃদ্ধি হলো জানতে চাইলে ইউনাইটেড ফার্মেসির থেকে কোনো উত্তর পাওয়া যাচ্ছে না। মনই চিত্র দেখা যায় ফকিরহাটের বিভিন্ন ফার্মেসিতে।

ফার্মেসির মালিকরা বলেন, এমনিতে ১০% লেস দিয়ে ওষুধ বিক্রয় করি। গত কয়েক মাসে বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানি বেশ কয়েকটা ওষুধের মূল্য বৃদ্ধি করেছে। এর মধ্যে ইনসেপ্টা কোম্পানির প্যান্টনিক্স ও অমিডন আগে ছিলো দুই টাকা পঞ্চাশ পয়সা। বর্তমান তিন টাকা, তারপর একমি কোম্পানির ডন-এ আগে ছিল দুই টাকা পিস, বর্তমান তিন টাকা পিস, স্কয়ার গ্রুপের স্যাকলো আগে ছিল পাঁচ টাকা বর্তমান বৃদ্ধি পেয়েছে ছয় টাকা, তাছাড়া বিভিন্ন জরুরী প্রয়োজনীয় ওষুধের মূল্য বাড়ানো হয়েছে। কেন বাড়ানো হলো জানতে চাইলে, তিনি সঠিক তথ্য দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন। তবে ওষুধের মূল্য বাড়ানোর আগে থেকে কোম্পানির ঔষধ সঙ্কট রয়েছে বলে দাবি করেন। ফকিরহাট বাজারের বিউটি ফার্মেসির মালিক মোঃ আনোয়ার হোসেন এবং কানন ফার্মেসির মালিক মিহির কুমার বলেন, ওষুধের দাম হঠাৎ বেড়েছে, বিশেষ করে গ্যাসের ওষুধ ও প্রেসারের ওষুধের মূল্য বেশি বাড়িয়েছে কোম্পানি। তার মধ্যে বেক্সিমকো কোম্পানির প্রেসারের ওষুধ বাইজোরন আগে ছিল, মাত্র আট টাকা। প্রতি পিস কিন’ চার মাসের ব্যবধানে তা বৃদ্ধি পেয়ে বর্তমান প্রতি পিস ১২ টাকা। তাছাড়া এসকেএফ কোম্পানির গ্যাসের ওষুধ পাউডার তারও মূল্য বাড়ানো হয়েছে এক টাকা করে এবং অপসোনিন কোম্পানির ফিনিক্সও  প্রতি পিসে দুই টাকা বাড়ানো হয়েছে। চোখের ড্রপ অধিকাংশের মূল্য বাড়ানো হয়েছে। অপ্টিমক্স চোখের ড্রপ প্রতি পিস একশ টাকা ছিলো। যা এখন পঞ্চাশ টাকা বাড়ানো হয়েছে, বর্তমান মূল্য একশ পঞ্চাশ টাকা এবং পপুলারের চোখের ড্রপ মক্সিফক্স আগে ছিল একশ টাকা প্রতি পিস, বর্তমান মূল্য হলো একশ চল্লিশ টাকা। দাম বৃদ্ধি পাওয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, যখন কোম্পানিকে বলি কেন মূল্য বাড়ানো হচ্ছে তারা বলে বর্তমান কাঁচামাল অনেক সঙ্কট এবং দাম বেশি তাই কোম্পানির বিষয় এইটুকু। অথচ প্রতিদিন ক্রেতাদের সাথে এই নিয়ে বাকবিতন্ড হচ্ছে। বাগেরহাট জেলা ড্রাগিস্ট অ্যাসোশিয়ানের সভাপতি অবনীশ কুমার চক্রবর্তী বলেন, কাঁচামালের মূল্য যখন বৃদ্ধি পায়, তখন তো ওষুধের মূল্য এমনিতে বৃদ্ধি পায়।

বাগেরহাট ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর এর কার্যালয়ের পরিচালক বলেন, ঔষধের মূল্য বৃদ্ধি করতে হলে অবশ্যই সেই কোম্পানির কারণ আমাদের ডিজি অফিসে দেখানো লাগে। তবে আমরা স্থানীয় পর্যায়ে থাকার কারণে অনেক সময় জানিনা। তবে ঔষধের মূল্য বৃদ্ধির কারণ হিসেবে কোম্পানি তার উৎপাদন খরচ, শ্রমিক বা কর্মচারী খরচ এবং ঔষধ তৈরির কাঁচামাল সাধারণত উল্লেখ করে এবং এ বিষয়ে জনগণ যদি প্রতিবাদ করেন তাহলে হয়তো সরকারি উচ্চ পর্যায়ে হস্তক্ষেপে কিছু হতে পারে। জেলা অফিসের কোনো কিছু করবার থাকেনা। এমতবস্থায় ,জীবন বাঁচানো প্রয়োজনীয় ঔষধ এর মূল্য সহনীয় পর্যায়ে আনতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেন সচেতন মহল।

 

 

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *