প্রাথমিক শিক্ষকদের অনলাইন বদলির কার্যক্রম শুরুর অপেক্ষা
যোগ্য শিক্ষকদের বছরব্যাপী বদলির সুযোগ করে দিতে অনলাইন বদলি কার্যক্রম শুরু করতে যাচ্ছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। এজন্য একটি সফটওয়্যার তৈরি করে ডেমোনেস্ট্রেশন করা হবে।
প্রতিবছরের জানুয়ারি-মার্চে শিক্ষকদের বদলির আগামী মৌসুমের আগেই এই অনলাইন বদলি কার্যক্রম শুরু হতে পারে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (বিদ্যালয়) আলমগীর মুহম্মদ মনসুরুল আলম।
বদলি বাণিজ্য ও হয়রানি এড়াতে চলতি বছর অনলাইনে শিক্ষক বদলির উদ্যোগ নেয় মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, সম্প্রতি এ নিয়ে একটি সফটওয়্যার তৈরি করে তা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের দেখানো হয়েছে। সে অনুযায়ী কর্মকর্তারা বেশকিছু বিষয়ে সংশোধনী ও ইনপুট দিয়েছেন।
অতিরিক্ত সচিব মুহম্মদ মনসুরুল আলম সোমবার (৫ অক্টোবর) বলেন, সফটওয়্যারে শিক্ষকদের যোগ্যতা অনুযায়ী বিভিন্ন অপশন থাকবে। সে সব তথ্য পূরণ করলে অটোমেটিক বদলির তথ্য পাওয়া যাবে। ৪/৫ জন একই স্কুলে একই পদে যাওয়ার আবেদন করলে সফটওয়্যার যাকে যোগ্য মনে করবে তার অনুমোদন আসবে।
একজন শিক্ষক পছন্দ অনুযায়ী একাধিক স্কুলে যাওয়ার আবেদন করতে পারবেন জানিয়ে অতিরিক্ত সচিব বলেন, বদলির ক্ষেত্রে সিনিয়রিটির প্রাধান্য থাকবে।
তিনি বলেন, যে শিক্ষকের বদলি হবেন না তিনি জানতে পারবেন কী কারণে হলো না। যার হয়েছে তিনিও জানতে পারবেন। একাধিক শর্তের মধ্যে কোনোটিতেই যোগ্য না হলে তাকে বঞ্চিত হতে হবে।
অধিদপ্তর থেকে মন্ত্রণালয়ে সফটওয়্যারের ডেমোনেস্ট্রেশন দেখানো হয়েছে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, আমরা কিছু সংশোধনীসহ তথ্য ইনপুট দিতে বলেছি।
অনলাইনে এই আবেদন প্রক্রিয়ায় একটা নির্দিষ্ট সময় দেওয়া হবে জানিয়ে তিনি বলেন, বদলির জন্য অন্তত তিনদিন সময় দেওয়া হবে। এই সময়ের মধ্যে আবেদন প্রক্রিয়া শেষ করতে না পারলে আর বদলি হবে না। স্বয়ংক্রিয়ভাবে এসব বিষয় ইনপুট দেওয়া থাকবে।
তিনি বলেন, ন্যূনতম কতজন শিক্ষক থাকলে আবেদন করতে পারবে না, এটা উল্লেখ করা থাকবে। আগের মতো মিউচ্যুয়াল বদলির সুযোগ হয়তো রাখা হবে না।
জালিয়াতি এড়াতেও ব্যবস্থা থাকবে জানিয়ে তিনি বলেন, আবেদনকারীকে একটি আইডি ও পাসওয়ার্ড দিয়ে আবেদন করতে হবে। আবেদনকারী তার আপডেট নিজেই জানতে পারবেন।
কবে থেকে এই প্রক্রিয়ায় বদলি শুরু হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা তো সফটওয়্যারের কাজ। একটু সময় লাগবে।
আগামী বছরের বদলির সময়ের আগেই অনলাইন বদলি শুরুর আশা করে বলেন, দ্রুত কাজ করছি।
বর্তমানে প্রতিবছরের জানুয়ারি-মার্চ পর্যন্ত ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে শিক্ষকরা থানা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে বদলির অবেদন করেন। এই বদলি নিয়ে মন্ত্রণালয় পর্যন্ত তদবির আসে। ওই তিনমাস দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে শিক্ষকরা পছন্দের জায়গায় বদলির জন্য ধর্না দেন।
অনলাইনে জানুয়ারি-মার্চ পর্যন্ত বদলির সীমা থাকবে কিনা- প্রশ্নে অতিরিক্ত সচিব মনসুরুল আলম বলেন, এটা পলিসি ডিসিশন। যেহেতু অনলাইনে সেহেতু এই বারটা মনে হয় থাকবে না।
এদিকে শিক্ষক বদলির নীতিমালা সংশোধনীও চলছে জানিয়ে এই কর্মকর্তা বলেন, এটির জন্য কিছুটা সময় লাগবে।
এরআগে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন জানান, চলতি বছরের অক্টোবর থেকেই অনলাইনে শিক্ষক বদলি কার্যক্রম শুরু হতে পারে।
কিন্তু করোনা ভাইরাসের কারণে এই প্রক্রিয়ায় কিছুটা বিলম্ব হচ্ছে বলে জানান মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।