প্রথম ধাপে ১০১ উপজেলায় ভোট করার চিন্তা ইসি’র
দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক
প্রথম ধাপে ১০১ উপজেলা পরিষদের ভোট করার পরিকল্পনা করছে নির্বাচন কমিশন; আর সেই ভোটের দিন ধরা হচ্ছে ১০ মার্চ। প্রথম ধাপে ভোট করতে রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগের ১০১ উপজেলার তালিকা কমিশন সভায় উপস্থাপনের জন্য তুলছে ইসি সচিবালয়।
নির্বাচন কমিশন সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ ইতোমধ্যে জানিয়েছেন, তিনটি পদে (চেয়ারম্যান, সাধারণ ও সংরক্ষিত নারী ভাইস চেয়ারম্যান) ভোটের জন্য পঞ্চম উপজেলা পরিষদের তফসিল ৩ ফেব্রুয়ারি ঘোষণা করা হবে। রোববার সিইসি কে এম নূরুল হুদার সভাপতিত্বে কমিশনের সভা আহ্বান করা হয়েছে।
ওই সভার আলোচ্যসূচিতে দুটি বিষয় রয়েছে- একাদশ সংসদের সংরক্ষিত মহিলা আসনের নির্বাচন এবং পঞ্চম উপজেলা পরিষদের তফসিল ঘোষণা। এবার ৪৯২টি উপজেলার মধ্যে ৪৮০টিতে পাঁচ ধাপে ভোট হবে। এর মধ্যে মার্চে চার ধাপের ভোট হবে, শেষ ধাপের ভোট হবে রোজার পর।
ইসি কর্মকর্তারা জানান, যেসব উপজেলার প্রথম সভা ২০১৪ সালের ২২ মার্চ অথবা তার আগে হয়েছে, অর্থাৎ ২০১৯ সালের ২১ মার্চের মধ্যে যেসব উপজেলার মেয়াদোত্তীর্ণ হবে, এমন শতাধিক উপজেলার নির্বাচন প্রথম ধাপে করা যেতে পারে বলে প্রস্তাব রাখা হয়েছে।
তারা জানান, উপজেলা পরিষদ ভোটের তফসিলের জন্য ইসির সব প্রস্তুতি শেষ করা হয়েছে। উপজেলাগুলোর নামসহ চূড়ান্ত তালিকা অনুমোদন করা হবে কমিশন সভায়।
রংপুর বিভাগ: পঞ্চগড় জেলার সদর, আটোয়ারী, বোদা, দেবীগঞ্জ ও তেঁতুলিয়া; দিনাজপুর সদর, বীরগঞ্জ, কাহারোল, বিরল, বোচাগঞ্জ, খানসামা, চিরিরবন্দর, পার্বতীপুর, ফুলবাড়ী, নবাবগঞ্জ, বিরামপুর, হাকিমপুর ও ঘোড়াঘাট; নীলফামারী জেলার সদর, ডোমার, ডিমলা, জলঢাকা, সৈয়দপুর ও কিশোরগঞ্জ; কুড়িগ্রাম সদর, জেলার ভুরুঙ্গমারী, ফুলবাড়ী, উলিপুর, নাগেশ্বরী, রাজারহাট, রাজিবপুর, চিলমারী ও রৌমারী।
রাজশাহী বিভাগ: সিরাজগঞ্জ সদর, বেলকুচি, চৌহালী কাজিপুর, রায়গঞ্জ, মাহজাদপুর, তাড়াশ ও উলাপাড়া; জয়পুরহাট সদর, পাঁচবিবি, আক্কেলপুর, কালাই ও ক্ষেতলাল।
ময়মনসিংহ বিভাগ: জামালপুর সদর, সরিষাবাড়ী, মেলান্দহ, ইসলামপুর, বকশীগঞ্জ, দেওয়ানগঞ্জ ও মাদারগঞ্জ; নেত্রকোনা সদর বারহাট্টা, দুর্গাপুর, খালিয়াজুরী, কলমাকান্দা, কেন্দুয়া, মদন, মোহনগঞ্জ, পূর্বধলা।
সিলেট বিভাগ: সুনামগঞ্জ সদর, ছাতক, দোয়ারাবাজার, জামালগঞ্জ, শালা, ধর্মপাশা, বিশ্বম্ভরপুর, তাহিরপুর ও জগন্নাথপুর; হবিগঞ্জ সদর বাহুবল, মাধবপুর, চুনারঘাট, নবীগঞ্জ, আজমিরীগঞ্জ, বানিয়াচং ও লাখাই।
চট্টগ্রাম বিভাগ: রাঙ্গামাটি সদর, বাঘাইছড়ি, লংগদু, নানিয়ারচর, বরকল, জুড়াছড়ি, কাউখালী, কাপ্তাই, রাজাস্থলী, বিলাইছড়ি; বান্দরবান সদর, রোয়াংছড়ি, রুমা, থানচি, লামা, আলীকদম, নাইক্ষ্যংছড়ি; খাগড়াছড়ি সদর, মহালছড়ি, পানছড়ি, মাটিরাঙ্গা, রামগড়, মানিকছড়ি,লক্ষিছড়ি, দীঘিনালা; কক্সবাজার জেলার চকরিয়া।
ইসি কর্মকর্তারা জানান, বিভিন্ন জটিলতার কারণে ১২টি উপজেলায় এ বছর ভোট হবে না। সর্বশেষ ২০১৪ সালের মার্চ-মে মাসে ছয় ধাপে উপজেলা নির্বাচন হয়েছিল। আইনে মেয়াদ শেষের পূর্ববর্তী ১৮০ দিনের মধ্যে ভোট করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
১৯৮৫ সালে উপজেলা পরিষদ চালু হওয়ার পর ১৯৯০ ও ২০০৯ সালে একদিনেই ভোট হয়েছিল। ২০১৪ সালে ছয় ধাপে ভোট করেছিল তৎকালীন ইসি। এবার উপজেলা ভোটেও ব্যবহার হবে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন। জেলার সদর উপজেলায় পুরোপুরি ইভিএম ব্যবহার করা হবে।
সংসদ নির্বাচনের ফল প্রত্যাখ্যানের পর দলীয় প্রতীকে উপজেলা ভোটেও অংশ না নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি। ইসি সচিবের ভাষ্য, স্থানীয় সরকারের এই ভোটে কে এল আর কে এল না, তা ইসির বিবেচ্য বিষয় নয়।
শূন্যপদের বিষয়েও সিদ্ধান্ত : একশ একটি উপজেলার পাশাপাশি চেয়ারম্যান বা ভাইস চেয়ারম্যান পদ শূন্য হয়েছে এমন উপজেলা পরিষদে উপনির্বাচনও ১০ মার্চ করার প্রস্তাব রেখেছে ইসি সচিবালয়। পদত্যাগ অথবা মৃত্যুর কারণে অর্ধ শতাধিক উপজেলা উপনির্বাচন করার মতো রয়েছে বলে ইসি কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়। তারা বলছেন, এসব উপনির্বাচন প্রথম ধাপে করা হবে না অন্য ধাপে নেওয়া হবে, সে সব বিষয়ে ৩ ফেব্র“য়ারি কমিশন সভায় চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে।