November 24, 2024
আন্তর্জাতিকশীর্ষ সংবাদ

প্রথম ধাপে বাংলাদেশ থেকে ৬২ জন রোহিঙ্গা নাগরিককে নেবে যুক্তরাষ্ট্র

আগামী ৮ ডিসেম্বর (বৃহস্পতিবার) প্রথম ধাপে বাংলাদেশ থেকে ৬২ জন রোহিঙ্গা নাগরিককে নেবে যুক্তরাষ্ট্র। ওইদিন আনুষ্ঠানিকভাবে এই প্রক্রিয়া শুরু হবে। দেশটি বছরে ৩০০ থেকে ৮০০ রোহিঙ্গা নেবে।

মঙ্গলবার (৬ ডিসেম্বর) পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন সাংবাদিকদের এই তথ্য জানান।

রাজধানীর বেইলি রোডে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের জনসংখ্যা, শরণার্থী ও অভিবাসন বিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী জুলিয়েটা ভ্যালস নয়েসের সঙ্গে বৈঠক শেষে মন্ত্রী সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।

যুক্তরাষ্ট্র রোহিঙ্গাদের নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করার বিষয়টিকে কীভাবে দেখছেন জানতে চাইলে আব্দুল মোমেন বলেন, দেশটি দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে রোহিঙ্গা নিচ্ছে। তারা নিজ দেশের মানুষকে দেখিয়ে বলবে, দেখো, আমরা বাংলাদেশ থেকে রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে আশ্রয় দিয়েছি। কিন্তু কতসংখ্যক রোহিঙ্গা নিচ্ছে, সেটি তারা বলবে না। তারা নিজ দেশের জনগণকে বলবে, দেখো, আমরা রোহিঙ্গাদের মানবিক সাহায্য করেছি।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমি মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে জানতে চাইলাম, তোমরা কতসংখ্যক রোহিঙ্গা নেবে? জবাবে তিনি বললেন, ৬২ জনের তালিকা করা হয়েছে। প্রতিবছর ৩০০ থেকে ৮০০ রোহিঙ্গা নেওয়া হবে। তখন আমি বললাম, এই সংখ্যা কিছুই না। তখন তিনি বললেন, এটা শুরু।

ড. মোমেন আরও বলেন, মিয়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা নাগরিকদের নিয়ে আমরা বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ও সংস্থার সঙ্গে কথা বলি। যখনই কোনো বড় দেশের বড় লোকদের সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়, তখনই আমাদের দেশ থেকে কিছু রোহিঙ্গা নেওয়ার অনুরোধ করি। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও জাপানসহ অনেক দেশকেই আমরা এ অনুরোধ করেছি।

যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি বর্গমাইলে ৪০ জন মানুষ বসবাস করে উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, অন্যদিকে বাংলাদেশে প্রতি বর্গমাইলে বসবাস করে তিন হাজার ২০০ জন। আমি তাকে বললাম, তোমাদের দেশে যে জায়গা আছে, তাতে এক লাখ রোহিঙ্গা নেওয়া যায়। জবাবে তিনি বললেন, সারা বিশ্ব থেকে তারা এক লাখ ২৫ হাজার রোহিঙ্গা নেবে। এর মধ্যে বাংলাদেশ থেকে নেবে বছরে ৩০০ থেকে ৮০০ জন।

রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধান শুধু প্রত্যাবাসনের মাধ্যমেই সম্ভব বলে মনে করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, আমি মনে করছি, যাক নিলেই ভালো; রোহিঙ্গারা যদি সুন্দর জীবন পায়। তবে রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধান শুধু প্রত্যাবাসনে। যুক্তরাষ্ট্র এখন যাদের নিয়ে যাচ্ছে, তাতে উত্তেজিত হওয়ার কিছু নেই। ১২ লাখ রোহিঙ্গার মধ্যে মাত্র ৩০০ জন নেবে, এই সংখ্যা কিছুই নয়; বরং দুশ্চিন্তা আছে। কারণ, মিয়ানমার থেকে আরও ছয় লাখ রোহিঙ্গা আশার আশঙ্কা রয়েছে। আমাদের সতর্ক ও সাবধান থাকতে হবে।

সাক্ষাৎ শেষে জুলিয়েটা ভেলস নয়েস সাংবাদিকদের বলেন, রোহিঙ্গাদের সমর্থন এবং পুনর্বাসন করতে পারায় যুক্তরাষ্ট্র গর্বিত। রোহিঙ্গাসহ বিশ্বব্যাপী শরণার্থীদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা বাইডেন সরকারের অগ্রাধিকার। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের বাইরেও অন্যান্য দেশে রোহিঙ্গা পুনর্বাসনের সুযোগ তৈরিতে কাজ করছে মার্কিন সরকার। একইসঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গেও কাজ করছে ‍যুক্তরাষ্ট্র।

অপর এক সাক্ষাতে বিকেলে জাপানি রাষ্ট্রদূতের কাছেও রোহিঙ্গা পুনর্বাসনের আবেদন জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *