প্রতিহিংসার রাজনীতি ছেড়ে অর্থনীতিতে মন দিন: মোদীকে মনমোহন
ভারতে দেখা দিয়েছে অর্থনৈতিক সঙ্কট। জিডিপি বৃদ্ধির হার ৫ শতাংশে নেমে আসায় এবার দীর্ঘমেয়াদী মন্দার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং।
বর্তমান সরকারের সমালোচনা করেছেন তিনি। ভারতের আর্থিক সংকটের জন্য ‘সব ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সরকারের অব্যবস্থা’কে দায়ী করেছেন দেশের অন্যতম অর্থনীতিবিদ মনমোহন।
তিনি বলেন, “দেশজুড়ে অর্থনৈতিক সংকেট দেখা দিয়েছে। এভাবে ক্রামাগত জিডিপি হ্রাসের ভার ভারত বাইতে পারবে না। মানুষ সৃষ্ট এই অর্থনৈতিক সংকট থেকে দেশকে বাঁচাতে আমি কেন্দ্রীয় সরকারকে প্রতিহিংসার রাজনীতি ছেড়ে বুদ্ধিমান ও বিচক্ষণ মানুষদের পরামর্শ নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।”
দু’দিন আগে ভারতে সরকারিভাবে চলতি অর্থবর্ষের প্রথম ত্রৈমাসিকের জিডিপি’র রিপোর্ট প্রকাশের পর সরকারকে এ পরামর্শ দিলেন মনমোহন।
গাড়ি শিল্পসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সম্প্রতি ভারতে কয়েক লাখ মানুষ চাকরি হারিয়েছেন। তা নিয়েও নরেন্দ্র মোদীর তীব্র সমালোচনা করে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘মোদী সরকারের ভুল নীতির জন্যই এই ব্যাপক বেকারত্ব। শুধুমাত্র গাড়ি শিল্পেই সাড়ে তিন লাখ মানুষ কাজ হারিয়েছেন। অন্যান্য ক্ষেত্রেওএকই পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে, যাতে সাধারণ কর্মীরা চরম ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।’’
‘‘কৃষক ফসলের ন্যায্য দাম পাচ্ছেন না। গ্রামাঞ্চলে সাধারণ মানুষের আয় কমেছে। যে মূল্যবৃদ্ধির হার কমা নিয়ে বড়াই করে বেড়ায় মোদী সরকার, কৃষিজীবী মানুষকে তার চরম মূল্য দিতে হচ্ছে। দেশের অর্ধেক মানুষের উপর দারিদ্রের বোঝা চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে।’’
২০১৩ সালের মার্চের পর এবারই (২০১৯-২০ অর্থবছর) প্রথম ভারতে জিডিপি বৃদ্ধির হার এত কম হয়েছে, সেবার জিডিপি বৃদ্ধির হার ছিল ৪ দশমিক ৩ শতাংশ। অথচ তিন মাস আগেই এ হার ছিল ৫ দশমিক ৮ শতাংশ। আর ২০১৮ সালের ৩০ জুন জিডিপি বৃদ্ধির হার ছিল ৮ শতাংশ।
আনন্দবাজার পত্রিকা জানায়, দীর্ঘ টানাপড়েনের পর সম্প্রতি বাড়তি সঞ্চয় থেকে কেন্দ্রকে ১ দশমিক ৭৬ লক্ষ কোটি টাকা দিতে রাজি হয়েছে রিজার্ভ ব্যাংক।
বড় ধরনের বিপর্যয় সামাল দিতে রিজার্ভ ব্যাংক ওই অর্থ গচ্ছিত রাখে। তাতে ভাগ বসানোয় ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় সরকারের তীব্র সমালোচনা করেছেন অর্থনীতি বিশেষজ্ঞরা।
এ বিষয়ে একই সুরে কথা বলেছেন মনমোহনও। দেশের প্রতিষ্ঠানগুলির স্বায়ত্ত্বশাসনের ওপর আঘাত হানা হচ্ছে বলে অভিযোগ তোলেন তিনি।