প্রতারণার ভিত্তিহীন অভিযোগে বিস্মিত স্মিথ
বোর্ডার-গাভাস্কার ট্রফির সিডনি টেস্টটি ছিল রোমাঞ্চকতায় ভরপুর। মাঠের খেলায় দৃঢ়তা ও ধৈর্য্যের চূড়ান্ত পরীক্ষা দিয়ে ম্যাচটি ড্র করে নিয়েছে ভারত। ম্যাচের চতুর্থ ইনিংসে মাত্র ৫ উইকেট হারিয়ে তারা ব্যাটিং করেছে ১৩১ ওভার। এর মধ্যে শেষদিনের কঠিন পিচে মাত্র ৩ উইকেট হারিয়ে কাটিয়ে দিয়েছে ৯৭ ওভার।
ভারতের এই বীরত্বগাথার সঙ্গে আরও দুইটি ঘটনা আলোচিত হচ্ছে জোরালোভাবে। প্রথমটি ভারতের অফস্পিনিং অলরাউন্ডার রবিচন্দ্রন অশ্বিন ও অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক টিম পেইনের মধ্যকার স্লেজিং কাণ্ডকে ঘিরে। নিজের ভুল বুঝতে পেরে অসি অধিনায়ক টিম পেইন ক্ষমা চেয়েছেন অশ্বিনের কাছে।
ফলে প্রথম ঘটনাটি খুব একটা বড় হয়নি। তবে অন্য ঘটনাটি বেশ আলোচিত। স্ট্যাম্প ক্যামেরায় দেখা গেছে ভারতের ইনিংসের একপর্যায়ে রিশাভ পান্তের নেয়া ব্যাটিং গার্ডের চিহ্ন মুছে দিচ্ছেন স্টিভেন স্মিথ। এ ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়তেই শুরু হয় স্মিথের মুন্ডূপাত।
অনেকে সরাসরি প্রতারক বলতে থাকেন স্মিথকে, অনেকে আবার স্পিরিট অব দ্য গেমের হন্তারকও বলেন তাকে। কেউ কেউ আবার আইসিসির কাছে দাবি তোলেন, স্মিথকে নিষিদ্ধ করার জন্য। সমালোচকদের এ তালিকায় ছিলেন ভারতের সাবেক অধিনায়ক ভিরেন্দর শেবাগও।
এ ঘটনায় রীতিমতো হতাশ ও বিস্মিত বর্তমান সময়ের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান স্মিথ। কেননা তার মতে, পপিং ক্রিজে তিনি কোনো অসৎ উদ্দেশ্যে কিছু করেননি। বরং নিজের অভ্যাশবশতই পপিং ক্রিজের মধ্যে দাগ দেয়ার মতো করেছিলেন। যা তিনি প্রতি ম্যাচেই করে থাকেন।
অস্ট্রেলিয়ার নিউজ কর্পোরেশনকে স্মিথ বলেছেন, ‘এ জিনিসটা আমি আমাদের বোলিংয়ের সময় প্রতি ম্যাচেই করে থাকি। এতে বোঝা যায় ব্যাটসম্যানরা আমাদের বোলারদের কীভাবে খেলছে। এরপর আমি সেন্টারে দাগও দেই সবসময়। এটা হতাশাজনক ও লজ্জার বিষয় যে ম্যাচের চেয়ে এসব ঘটনা বড় করে দেখা হচ্ছে।’
অধিনায়ক টিম পেইন ও কোচ জাস্টিন ল্যাঙ্গারকেও পাশে পেয়েছেন স্মিথ। পেইন সাক্ষী হিসেবে দাঁড়িয়েছেন স্মিথের পক্ষে। তিনিও বলেছেন, প্রতি ম্যাচে বা প্রতি দিনে অন্তত ৫-৬ বার এমনটা করে থাকেন স্মিথ। যা নিয়মিত খেলা দেখা কারও কাছে নতুন কিছু নয়। এছাড়া অসি কোচের মতে, এ ঘটনায় স্মিথের কোনো দোষ নেই।
পেইন বলেছেন, ‘আপনি যদি স্টিভেন স্মিথকে টেস্ট খেলতে দেখে থাকেন, তাহলে জানার কথা, এটা সে প্রতিদিনই ৫-৬ বার করে থাকে। সে সবসময় উইকেটে দাঁড়িয়ে শ্যাডো ব্যাটিং করে। আমরা সবাই জানি, স্মিথের নিজস্ব কিছু অভ্যাস আছে। তার মধ্যে একটা এমন সেন্টারে দাগ দেয়া। তার (স্মিথ) মাথায় অন্য কোনো উদ্দেশ্য ছিল না।’
ল্যাঙ্গারের ভাষ্য, ‘স্মিথের ব্যাপারে যা কিছু বলা হচ্ছে, পুরোপুরি হাস্যকর। সিডনির উইকেট কংক্রিটের মতো শক্ত। পান্তের ব্যাটিং গার্ড মুছতে স্মিথের ১৫ ইঞ্চি স্পাইক লাগবে। অথচ মানুষ কত সব কথা শুরু করে দিয়েছে। আমি আমার জীবনে এমন ফালতু কথা শুনিনি। এ বিষয়ে স্মিথ শতভাগ নির্দোষ।’