পোড়ানোর জন্য মার্কিন ও ইসরায়েলি পতাকা বানায় ইরানের কারখানা
ইরানি প্রতিবাদকারীরা পোড়াবে তার জন্য ইরানের সবচেয়ে বড় পতাকা তৈরির কারখানায় মার্কিন, ব্রিটিশ ও ইসরায়েলি পতাকা বানানো হয়; এই পতাকা বানিয়েই কারখানাটির ব্যবসা রমরমা হয়ে উঠছে।
রয়টার্স জানায়, চাহিদা সর্বোচ্চ থাকাকালে এক মাসে কারখানাটি প্রায় দুই হাজার মার্কিন ও ইসরায়েলি পতাকা বানিয়ে থাকে আর বছরে ১৫ লাখ বর্গফুটেরও বেশি পতাকা বানায়।
ইরানের রাজধানী তেহরানের দক্ষিণপশ্চিমে খোমেইন শহরের এই কারখানাটির পুরুষ ও নারী কর্মীরা পতাকাগুলোতে হাতছাপ দেওয়ার পর সেগুলো শুকানোর জন্য সারি দিয়ে ঝুলিয়ে রাখে।
৩ জানুয়ারি বাগদাদ বিমানবন্দরে মার্কিন ড্রোন হামলায় শীর্ষ ইরানি সামরিক কমান্ডার কাসেম সোলেইমানি নিহত হওয়ার পর প্রতিশোধ নিতে ইরাকে মার্কিন বাহিনীর ঘাঁটিতে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইরান। এরপর যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে উত্তেজনা কয়েক দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ মাত্রায় পৌঁছে যায়।
ইরানে রাষ্ট্রসমর্থিত সমাবেশে ও প্রতিবাদগুলোতে বিক্ষোভকারীরা নিয়মিত ইসরায়েলি, মার্কিন ও ব্রিটিশ পতাকা পোড়ায়।
পতাকা কারখানা দিবা পারচামের মালিক কাসেম ঘানজানি বলেন, “আমেরিকান ও ব্রিটিশ জনগণের সঙ্গে আমাদের কোনো সমস্যা নেই। আমাদের সমস্যা তাদের সরকারগুলোর সঙ্গে। আমাদের সমস্যা তাদের ভুল নীতিধারী প্রেসিডেন্টদের সঙ্গে।
“আমেরিকা ও ইসরায়েলের জনগণ জানে তাদের সঙ্গে আমাদের কোনো সমস্যা নেই। বিভিন্ন সমাবেশে লোকজন এই দেশগুলোর পতাকা পোড়ায় শুধু তাদের প্রতিবাদ দেখানোর জন্য।”
নিজের নামের প্রথম অংশ জানাতে না চাওয়া কারখানাটির একজন কোয়ালিটি কন্ট্রোল ম্যানেজার রেজায়ি বলেন, “জেনারেল সোলেইমানির হত্যাকাণ্ডের মতো যুক্তরাষ্ট্রের কাপুরুষোচিত কর্মকাণ্ডের তুলনায় এসব (পতাকা পোড়ানো) সামান্য ঘটনা। তাদের বিরুদ্ধে করার মতো শুধু এটিই আছে।”
কট্টরপন্থিদের জন্য মার্কিনবিরোধী মনোভাব সবসময়ই ইরানের ইসলামি বিপ্লবের কেন্দ্রীয় অংশ আর ইরানের শাসকরা ধারাবাহিকভাবে যুক্তরাষ্ট্রকে ‘বড় শয়তান’ আখ্যা দিয়ে নিন্দা জানিয়ে আসছে।
এসব সত্ত্বেও গত নভেম্বরে দেশটির শীর্ষ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে অনেক ইরানি এমন শ্লোগানও দিয়েছে, “আমাদের শত্রু যুক্তরাষ্ট্র নয়, আমাদের শত্রু আছে এখানেই।”
এরপর চলতি মাসে ইউক্রেইনীয় উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত করার কথা স্বীকার করার পর তেহরানের রাস্তায় নেমে আসা তরুণ প্রতিবাদকারীরা রাস্তায় আঁকা মার্কিন পতাকায় পা ফেলতে অস্বীকার করেছিল, জানিয়েছে রয়টার্স।