পেঁয়াজ নিয়ে ফের লঙ্কাকাণ্ড, সুযোগ নিচ্ছেন বিক্রেতা
পেঁয়াজ নিয়ে গতবছরের তিক্ত অভিজ্ঞতা ভোলেনি কেউ। নেতা-মন্ত্রীদের আশ্বাসে আশা ছিল এবার অন্তত নিয়ন্ত্রণে থাকবে নিত্যপ্রয়োজনীয় এ পণ্যটির দাম।
কিন্তু ভারত রপ্তানি বন্ধ ঘোষণা করার দিনেই লঙ্কাকাণ্ড বাঁধিয়ে দিলেন অসাধু ব্যবসায়ীরা। ৫০-৬০ টাকার পেঁয়াজ রাতারাতি হয়ে গেলো ৮০-১০০ টাকা। টিসিবির ট্রাকসেল ছাড়া এই অযাচিত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এখনো পর্যন্ত দেখা যায়নি সরকারি কোনো উদ্যোগ।
বাংলাদেশের বাজারে ভারতের পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ ঘোষণা মাত্রই ক্রেতারাও নড়েচড়ে বসতে থাকেন। গতবছর ৩শ টাকা পর্যন্ত পেঁয়াজ কিনে খেতে হয়েছে। তাই সময় থাকতে ক্রেতারা বাজারমুখী হন সোমবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা থেকেই। তিন থেকে ১০ কেজি পর্যন্ত পেঁয়াজ কিনতে দেখা যায় অনেক ক্রেতাকে।
আর এই সুযোগে বিক্রেতাও দাম বাড়িয়েছেন ধাপে ধাপে। রাত গড়াতেই ভারতীয় আমদানি করা পেঁয়াজের দাম ঠেকেছে ৫০ টাকা থেকে ৮০ টাকায়। আর দেশি পেঁয়াজ ৬০ থেকে ১০০ টাকায়।
বিক্রেতারা বলছেন, সংকটের মধ্যে সবাই বেশি নিলে দাম বাড়বে স্বাভাবিক। আর ক্রেতার বলছেন, এখন পেঁয়াজ না নিলে দাম আরও বাড়িয়ে দেবেন বিক্রেতারা।
মঙ্গলবার (১৫ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর রামপুরা, মালিবাগ, মালিবাগ রেলগেট বাজার, শান্তিনগর, সেগুনবাগিচা, ফকিরাপুল, মতিঝিল টিঅ্যান্ডটি কলোনি বাজার ও খিলগাঁও কাঁচা বাজার ঘুরে এ চিত্র দেখা যায়।
বর্তমানে এসব বাজারে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে ১০০ টাকা কেজিতে। আর আমদানি করা ভারতীয় পেঁয়াজে দাম বেড়েছে কেজিতে ৩০ টাকা পর্যন্ত। বর্তমানে আমদানি করা পেঁয়াজ এসব বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা কেজি দরে।
দাম বাড়ার কথা শুনে রামপুরা বাজারে পেঁয়াজ কিনতে এসেছেন হামিদা। পরিবারে তিন সদস্য হলেও তিনি আট কেজি পেঁয়াজ কিনেছেন। তিনি বলেন, এর আগে দাম বাড়তে বাড়তে ২শ পেরিয়ে যায়। এবারও হতে পারে তেমন। তাছাড়া পেঁয়াজ সব সময় প্রয়োজন তাই নেওয়া।
খিলগাঁও বাজার থেকে পাঁচ কেজি পেঁয়াজ কেনেন পপি। তিনি বলেন, বাসায় কিছুটা আর এগুলো দিয়ে এখন দু’মাস চলে যাবে। কেন এত পেঁয়াজ একসঙ্গে কিনলেন, এমন প্রশ্ন করতেই হেসে উত্তর তার, দাম বাড়বে। তিনি বলেন, একদিন পার হলো এতেই ৩০ টাকা বেড়েছে। এক সপ্তাহ পার হলে কত টাকা হবে জানি না। দাম বাড়বে এ আশঙ্কা শুধু আমার একা না, দেখছেন না অনেকেই পেঁয়াজ কিনতে বাজারে এসেছেন। একবারতো ২৫০ টাকা হয়ে গেছিল।
তবে পেঁয়াজের দাম বাড়ার জন্য ক্রেতাকে দুষছেন বিক্রেতারা। হাফিজুল নামে ব্যবসায়ী বলেন, এবার আমাদের পেঁয়াজ আমদানি চাহিদার তুলনায় কম হয়েছে। আবার খাতুনগঞ্জে জোয়ারের পানিতে পেঁয়াজ পচে নষ্ট হয়ে গেছে। এর মধ্যে দেশের বাজারে পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধের ঘোষণা ভারতের। আবার ক্রেতারাও হুজুগে বেশি বেশি পেঁয়াজ কিনছেন, এতে বাজারে এর প্রভাব পড়েছে। বলা যায়, ক্রেতারাই আজকের খুচরা বাজার চড়া করেছেন।
ঘটনা যাই ঘটুক শেষ পর্যন্ত ভোগান্তি সেই সাধারণ মানুষেরই।