পেঁয়াজের সিন্ডিকেটে আ’লীগের লোক : রিজভী
দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক
ক্ষমতাসীন দলের লোকেরাই পেঁয়াজ বাজারে ‘সিন্ডিকেট’ করছে মন্তব্য করে বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভী প্রশ্ন ছুড়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালের দিকে। গতকাল শুক্রবার নয়া পল্টনের বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এক বিক্ষোভ মিছিল শেষে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে তিনি বলেন, পেঁয়াজের সন্ডিকেটের বিরুদ্ধে শুদ্ধি অভিযান নেই কেন?
পেঁয়াজের বাজারদর তুলে ধরে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রিজভী বলেন, গতকাল ছিল দুইশ টাকা, আজকে আড়াইশ টাকা, কাল হয়ত হয়ে যাবে তিনশ টাকা। এটা ট্রিপল সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে জনগণকে মাটির সাথে মিশিয়ে আরেকটা হয়ত কিছু করতে পারে। আমাদের প্রশ্ন, পেঁয়াজের সিন্ডিকেটে কারা? ওরা তো আওয়ামী লীগের লোক, ক্ষমতাসীন দলের লোক।
সারাদেশে শুদ্ধি অভিযান চলবে বলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সা¤প্রতিক মন্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে রিজভী বলেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, অভিযান এখনো থামেনি। কই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, আপনার অভিযান ওই সিন্ডিকেটের দিকে ধাবিত হয় না কেন? কারণ ওরা আপনার চাইতেও ক্ষমতাশালী। ওদের গায়ে আপনি হাত দিতে পারবেন?
সরকারের সমালোচনা করতে গিয়ে পেঁয়াজের আকাশচুম্বি দামকেই ‘একমাত্র সাফল্য’ হিসেবে বর্ণনা করেন রিজভী। তিনি বলেন, আমরা শেখ হাসিনার আমলের কোনো দিকে বাংলাদেশের কোনো অর্জন দেখি না। কোনো জায়গায়, কী অলিম্পিক, কী অন্যান্য খেলাধুলোয় আন্তর্জাতিকভাবে চ্যাম্পিয়ন হতে পারেনি। কিন্তু একটা জায়গায় চ্যাম্পিয়ন হয়েছে; পেঁয়াজ। ডাবল সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বাংলাদেশ।
খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযুদ্ধ প্রজন্মের উদ্যোগে আয়োজিত এ বিক্ষোভ সমাবেশে রিজভী আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে বর্ণনা করেন রাজনীতির মাঠের ‘চারণ কবি’ হিসেবে।
আপনারা দেখেছেন, আগে চারণ কবি ছিল না? যারা মাঠে-ময়দানে গান গেয়ে বেড়াতেন। ওবায়দুল কাদের সাহেব কিন্তু আওয়ামী সরকারের চারণ কবি। দেখবেন আজকে ব্রিজের নিচে, কালকে মহাসড়কের পাশে, আরেক জায়গায় রোডের পাশে। ওবায়দুল কাদের সাহেব মাঝেমধ্যে একেকটা করে বাণী ছোড়েন। ’এই বাণী, এই কবিতা’ দিয়ে বিএনপির প্রতিবাদ থামানো যাবে না বলেও মন্তব্য করেন দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব।
‘বিএনপি আন্দোলন করতে জানে না’ বলে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের সা¤প্রতিক এক বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে মহানগর বিএনপির সভাপতি হাবিব উন নবী খান সোহেল বলেন, ওবায়দুল কাদের সাহেব, আন্দোলন আমাদেরকে শেখাবেন না। আন্দোলন নামের যে স্কুলের আপনারা ছাত্র, আমরা সেই স্কুলের শিক্ষকতা করার যোগ্যতা রাখি।
খালেদা জিয়ার মুক্তি জন্য ‘শিগগিরই কঠিন আন্দোলন শুরু হবে’ মন্তব্য করে তিনি বলেন, এমন আন্দোলন শুরু হবে রাজপথে কোনো গাড়ি-ঘোড়া চলবে না, সমস্ত অফিস-আদালত বন্ধ থাকবে। প্রয়োজনে সারা বাংলাদেশকে আমরা অচল করে দিয়ে আন্দোলন করব। ওবায়দুল কাদের সাহেব, এমন আন্দোলনের কর্মসূচি আমরা দেব, এমন আন্দোলন করব, আপনি আপনার বাসার বেডরুম থেকে ড্রইংরুম পর্যন্ত যেতে পারবেন না।
জাতীয়তাবাদী মুক্তিযুদ্ধ প্রজন্মের বিক্ষোভ মিছিলটি নয়া পল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে শুরু হয়ে কাকরাইলের নাইটিঙ্গেল রেস্তোরাঁ মোড় ঘুরে আবার বিএনপি কার্যালয়ের সামনে শেষ হয়।
সংগঠনের সভানেত্রী বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শ্যামা ওবায়েদের নেতৃত্বে অন্যদের মধ্যে আবদুস সালাম আজাদ, কাইয়ুম চৌধুরী, ঢাকা মহানগর দক্ষিনের কাজী আবুল বাশার, সাইফুল ইসলাম পটু, মুক্তিযুদ্ধ প্রজন্মের এম ইউসুফ আলী, সাইফুল ইসলাম ও ওবায়দুর রহমান অটল বিক্ষোভে অংশ নেন।