পুলিশের ভুল ভাঙল, মুক্তি পাবেন সেই আজিজ
দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক
অবশেষে যশোরের চৌগাছার নিরপরাধ আব্দুল আজিজ কারাগার থেকে মুক্তি পেতে চলেছেন। গতকাল শনিবার চৌগাছা থানার ওসি রিফাত খান রাজিব জানান, দুইজনের নিজের ও বাবার একই নাম হওয়ায় ভুলটি হয়েছে। আমরা আসামি আজিজের আইনজীবীর সাথে আমরা কথা বলেছি। রোববার আদালতে এ বিষয়ে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।
আসামি আজিজের আইনজীবী শাহিনুর রহমান জানান, পুলিশ তার সাথে ভুলের বিষয়ে কথা বলে নিশ্চিত হয়েছে। গত ৯ ডিসেম্বর যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার এক ডাকাতি মামলার প্রকৃত আসামি আহাদ আলী কারিগরের ছেলে আব্দুল আজিজের বদলে আহাদ আলী দফাদারের ছেলে আব্দুল আজিজকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়।
২০০৯ সালের ২২ অক্টোবর যশোরের বাঘারপাড়ার নারিকেলবাড়িয়া গ্রামে নবকুমার সাহার বাড়িতে ডাকাতি হয়। ওই ঘটনায় নবকুমারের অজ্ঞাত আসামিদের নামে করা মামলায় ২০১১ সালের ৩০ মার্চ অভিযোগপত্র দেন তদন্ত কর্মকর্তা এসআই গাজী আব্দুল কাইয়ুম। সেখানে ৭ নম্বর আসামি চৌগাছা উপজেলার সিংহঝুলি গ্রামের আহাদ আলী কারিগরের ছেলে আব্দুল আজিজ।
এ মামালার প্রকৃত আসামি আজিজ ২০১২ সালের ৫ মার্চ জামিনে মুক্তি পাওয়ার পর নিয়মিত আদালতে হাজিরা দিতে থাকেন। তবে বছর দেড়েক আগে কাতারে চলে যান তিনি। যথা নিয়মে হাজির না হওয়ায় গত ৭ নভেম্বর আদালত তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে জেলা জজ আদালত।
পরোয়ানা অনুযায়ী চৌগাছা থানার এএসআই আজাদ এক আজিজকে গ্রেপ্তার করতে গিয়ে আরেক আজিজকে তুলে নিয়ে আসেন। এদিকে জজ আদালত অবকাশকালীন বন্ধ থাকায় পুলিশ ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আব্দুল আজিজকে হাজির করে। ওই আদালত কারাগারে পাঠালে নিরপরাধ আব্দুল আজিজ কারাবাস শুরু হয়।
এদিকে, গ্রেপ্তার আজিজের স্ত্রী জলি বেগম অভিযোগ করেন, আমরা অনুরোধ করে পুলিশকে বলি, আমার স্বামী দিনমজুরি করে সংসার চালায়। তার নামে কোনো মামলা নেই। তবু পুলিশ তাকে নিয়ে যায়। এখন পুলিশের ভুলেই আমার স্বামী দোষ না করেও জেল খাটছে।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে এর আগে এএসআই আজাদ বলেছিলেন, ওয়ারেন্ট এবং ওই ব্যক্তির জাতীয় পরিচয়পত্র ভালোভাবে যাচাই-বাছাই করেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারের সময় তিনিই স্বীকার করেছেন তার নামে একটি মামলা ছিল যা তিনি মিটিয়ে ফেলেছেন। গ্রেপ্তারের সময়ও তার পরিবার বলেনি যে সে মামালার আসামি না।
গ্রেপ্তার আজিজ যদি মামলার আসামি না হন তাহলে তাকে আদালতে প্রমাণ করতে হবে। নাম-ঠিকানায় মিল থাকার কারণে আমাদের কিছুই করার নেই।
স¤প্রতি অন্য এক মামলায় নামের মিল থাকায় ভুল ব্যক্তিকে গ্রেপ্তারের দায়ে আদালতে হাজিরে হয়ে নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়েছেন কুমিলার ব্রাহ্মণপাড়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মামোনুর রশিদ।