পুলিশকে চড় মেরে আটক যুব মহিলা লীগ নেত্রী
দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক
গাজীপুর মহানগরে ট্রাফিক পুলিশকে চড় মারার অভিযোগে যুব মহিলা লীগের এক নেত্রীকে আটক করেছে পুলিশ। গতকাল শনিবার দুপুরে জেলার চান্দনা চৌরাস্তা মোড় এলাকায় জাগ্রত-চৌরঙ্গীর মূর্তির উত্তর পাশে এ ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছে পুলিশ। এ ঘটনায় আটক রুহুন নেছা রুনা গাজীপুর মহানগর যুব মহিলা লীগের আহ্বায়ক। তিনি গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ৩১, ৩২ ও ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত নারী আসনের কাউন্সিলরও।
ঘটনার বিবরণ দিয়ে গাজীপুর মহানগর পুলিশের ট্রাফিক ইন্সপেক্টর শাহাদৎ আলী জানান, শনিবার দুপুরে রুহুন নেছা প্রাইভেট কার চালিয়ে চান্দনা চৌরাস্তা মোড় এলাকায় জাগ্রত-চৌরঙ্গীর মূর্তির উত্তর পাশ দিয়ে ডানে ইউটার্ন নিতে যান।
সে সময় মহাসড়কে কাজ চলার কারণে ওই এলাকায় দড়ি বেঁধে ‘রেশনিং পদ্ধতিতে’ ঢাকা-ময়মনসিংহ রুটের গাড়ি চলতে দেওয়া হচ্ছিল। রুহুন নেছা রুনা ওই দড়ি ঠেলে তার গাড়ি ডান দিকে ইউটার্ন করানোর চেষ্টা করেন বলে জানান তিনি।
এ সময় সেখানে কর্তব্যরত ট্রাফিক পুলিশ কনস্টেবল আশিকুর তাকে যেতে বলে বাধা দিলে তিনি খেপে যান। তিনি গাড়ি থেকে নেমে নিজেকে কাউন্সিলর পরিচয় দিয়ে পুলিশ কনস্টেবল আশিকুরের গালে চড় মারেন। এ পরিস্থিতি দেখে অপর কনস্টেবল মো. হাসানুর এগিয়ে গেলে তাকেও রুহুন নেছা রুনা চড় মারেন।
এরপর সেখানকার ট্রাফিক পুলিশ বক্স থেকে কয়েকজন পুলিশ গিয়ে রুহুন নেছা রুনাকে আটক করে বাসন থানা খবর পাঠান। এরপর দুপুর আড়াইটার দিকে তাকে থানায় নিয়ে আসা হয়। তবে যুব মহিলা লীগনেত্রী ও কাউন্সিলর রুহুন নেছা বাসন থানায় আটক অবস্থায় চড় মরার ভিন্ন কারন জানালেন।
প্রাইভেট কারে এক অনুষ্ঠানে যাওয়ার পথে মহানগরের চান্দনা চৌরাস্তা মোড় এলাকায় ইউটার্ন নিতে যান তিনি। এ সময় পুলিশ তাকে ডান দিকে ইউটার্ন নিতে নিষেধ করে বলেন তিনি। এ সময় তিনি নিজের পরিচয় দিয়ে পুলিশকে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করলেও তাকে ওই পথে যেতে দেয়নি বলে জানান এ নেত্রী।
পরে ওই পথের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় তিনি দেখেন-তাকে বাধা দেওয়ার ওই পথে এলামেলোভাবে অন্য গাড়ি চলাচল করছে। এ সময় তাকে বাধা দেওয়ার পথটি দিয়ে অন্য গাড়ি যেতে দেওয়ার কারণ জানতে চাইলে পুলিশ তার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে বলে দাবি করেন তিনি।
এক পর্যায়ে পুলিশ তার ‘বুকের কাছে গিয়ে অশালীন আচরণ করে’ দাবি করে ‘নিজেকে রক্ষা করতে গিয়ে’ ওই পুলিশ কনস্টেবলকে চড় মারেন বলে স্বীকার করেন তিনি। তবে কাউন্সিলর রুনার সঙ্গে পুলিশের অশালীন আচরণের কথা অস্বীকার করে বাসন থানার ওসি একেএম কাউসার চৌধুরী বলেন, উনিই কর্তব্যরত পুলিশের গায়ে চড় মেড়েছেন। এরপর তাকে আটক করে থানা হেফাজতে রাখা রয়েছে। এ ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানায় পুলিশ। রুহুন নেছা রুনার রাজনৈতিক পরিচয় নিশ্চিত করেন গাজীপুর জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক আলতাফ হোসেন।
স¤প্রতি যুব মহিলা লীগের আরেক নেত্রী শামীমা নূর পাপিয়া ওরফে পিউ ঢাকার ওয়েস্টিন হোটেলে ‘যৌন কারবার’সহ নানা অপকর্মের দায়ে গ্রেপ্তার হয়ে আলোচনায় আসেন। তার দাপুটে চালচলনের নানা কাহিনি গণমাধ্যমে প্রকাশ পায়। ২০১৪ সালে পাপিয়া ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন যুব মহিলা লীগের নরসিংদী জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক পদ পান এবং গ্রেপ্তারের পর তাকে বহিষ্কার করা হয়।