পুরো রাজধানী লকডাউনের নির্দেশনা চেয়ে রিট
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে ঢাকা শহরকে পুরোপুরি লকডাউন করার নির্দেশনা চেয়ে হাই কোর্টে রিট আবেদন করা হয়েছে
বৃহস্পতিবার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের ভার্চুয়াল হাই কোর্ট বেঞ্চে রিটটি দাখিল করেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। রিটের বাদী সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. মাহবুবুল ইসলাম।
রোববার রিট আবেদনটির শুনানি হতে পারে জানিয়ে মনজিল মোরসেদ বলেন, “রিটে লকডাউনের নির্দেশনা চাওয়ার পাশাপাশি কোভিড-১৯ আক্রান্ত সঙ্কটাপন্ন রোগীদের জন্য পর্যাপ্ত ‘হাই ফ্লো নেজাল ক্যানোলা (এইচএফএনসি) এর যোগান, প্রাপ্যতা নিশ্চিত করার নির্দেশনাও চাওয়া হয়েছে।”
বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রকোপ শুরু পর সারা দেশে ২৬ মার্চ থেকে অফিস আদালত ও যানবাহন চলাচল বন্ধ রেখে শুরু হয় লকডাউনের বিধিনিষেধ। এরপর ধীরে ধীরে বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ শিথিল করে ৩১ মে থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বাদে প্রায় সবকিছুই ‘সীমিত’ আকারে খুলে দেওয়া হয়েছে।
কিন্তু দেশে সংক্রমণ আর মৃত্যু বাড়ছে প্রতিদিনই। এ অবস্থায় ১ জুন সরকারের উচ্চপর্যায়ের এক সভায় সংক্রমণ বিবেচনায় বিভিন্ন এলাকাকে লাল, হলুদ ও সবুজ এলাকায় ভাগ করে এলাকাভিত্তিক বিধিনিষেধ আরোপের সিদ্ধান্ত হয়। সে অনুযায়ী ঢাকার পূর্ব রাজাবাজার এলাকা মঙ্গলবার রাত ১২টার পর থেকে অবরুদ্ধ রাখা হয়েছে।
করোনাভাইরাস মহামারীর চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের সভাপতি শিশু বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক মোহাম্মদ সহিদ উল্লাহকে সভাপতি করে গত ১৮ এপ্রিল ১৭ সদস্যের ‘জাতীয় টেকনিক্যাল পরামর্শক কমিটি’ গঠন করে সরকার।
গত ৮ জুন কমিটির দেওয়া সুপারিশ তুলে ধরে রিট আবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকা শহরকে সম্পূর্ণ লকডাউন করতে হবে। আর তা না হলে মৃত্যু মেনে নিতে হবে। ‘এলাকাভিত্তিক লকডাউন’ কোনো সুফল বয়ে আনবে না। হলুদ জোন, লাল জোন মিলেমিশে আছে।
“বারবার পরামর্শ ও তাগিদ দেওয়ার পরও এখন পর্যন্ত ‘হাই ফ্লো নেজাল ক্যানোলা’র যোগান, প্রাপ্যতা নিশ্চিত করা হয়নি। ব্যাপক হারে চিকিৎসকরা কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হচ্ছেন এবং মৃত্যু হচ্ছে। তাদের সুরক্ষা, চিকিৎসা নিশ্চিত না হলে চিকিৎসা ব্যবস্থা ভেঙে পড়বে।
“তাই পরামর্শক কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতালে অক্সিজেন সরবরাহ ছাড়াও সার্বিক সুবিধাসহ কোভিড-১৯ আক্রান্ত চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীদের চিকিৎসার জন্য দ্রুত প্রস্তুত করতে হবে।”
পরামর্শক কমিটির এ ধরনের সুপারিশ থাকার পরও সরকার ঢাকা শহরকে পুরোপুরি লকডাউন ঘোষণা করা হচ্ছে না।
“কোভিড-১৯ আক্রান্ত সঙ্কটাপন্ন রোগীদের জন্য ‘হাই ফ্লো নেজাল ক্যানোলা’ যোগান, প্রাপ্যতা নিশ্চিত করা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব হলেও সেটিও করা হচ্ছে না। মৃত্যু ঝুঁকি বেড়েই চলেছে। ফলে পরামর্শক কমিটির সুপারিশগুলো গণ্য করে আদালত প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিক,” বলা হয়েছে রিট আবেদনে।
এর আগে করোনাভাইরাসের বিস্তার বন্ধ করতে সারাদেশে আক্রান্ত ও ঝুঁকির মাত্রার ভিত্তিতে যতটা বড় এলাকায় সম্ভব, জরুরিভাবে লকডাউন করার সুপারিশ করেছে জাতীয় কমিটি।
বুধবার কমিটির নবম সভা থেকে এই সুপারিশ আসে।