পুরুষ স্বজন ছাড়া দূরপথে নারীদের ভ্রমণ নিষিদ্ধ করল তালেবান
আফগান নারীরা সড়কে দূরপথে কোথাও ভ্রমণ করতে চাইলে তাদের সঙ্গে পরিবারের কোনও পুরুষ সদস্য থাকতে হবে। তাহলেই কেবল তারা যানবাহনে চড়তে পারবেন বলে জানিয়েছে তালেবান।
আফগানিস্তানে ইসলামিক নিয়ম-কানুন বাস্তবায়নের দায়িত্বে থাকা তালেবান মন্ত্রণালয় রোববার নারীদের জন্য এই নির্দেশনা জারি করেছে।
তালেবান গত ১৫ অগাস্ট আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখলের পর এ পদক্ষেপের মধ্য দিয়ে দেশটিতে নারী অধিকারের ওপর আরেকদফায় খড়গ নেমে এল।
নতুন তালেবান শাসনে এখনও কাজে ফেরার অপেক্ষায় আছেন অনেক আফগান নারী। মেয়েদের বহু মাধ্যমিক স্কুল বন্ধ হয়ে আছে। আর এসবের মধ্যেই এল নারীদের চলাফেরা নিয়ে এই নতুন নির্দেশনা।
এতে বলা হয়েছে, ৪৫ মাইলের (৭২ কিলোমিটার) বেশি দূরে ভ্রমণ করতে চাওয়া নারীদের সঙ্গে পরিবারের ঘনিষ্ঠ কোনও পুরুষ সদস্য থাকতে হবে। নাহলে তাদেরকে গাড়িতে তোলা যাবে না।
নতুন এই নিয়মের প্রতিক্রিয়ায় রাজধানী কাবুলের এক নারী বিবিসি-কে বলেন, “আমার খুবই খারাপ লাগছে। আমি স্বাধীনভাবে বাইরে যেতে পারব না। আমার সন্তান যদি অসুস্থ হয় কিংবা আমার স্বামী যদি সঙ্গে যেতে সক্ষম না হয় তাহলে আমি কি করব?”
“তালেবান আমাদের আনন্দ কেড়ে নিয়েছে…আমি স্বাধীনতা, খুশি দুইই হারিয়েছি”, বলেন তিনি।
তালেবানের নির্দেশনায় নারীদের মুখ ঢাকা না থাকলে কিংবা হিজাব পরা না থাকলে তাদেরকে গাড়িতে তোলা মানা করা হয়েছে। একইসঙ্গে গাড়িতে গান বাজানোও নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ) বলেছে, নতুন এই কড়াকড়ি নারীকে বন্দি বানানোর পথে বাড়তি আরও একটি ধাপ।
এইচআরডব্লিউ’র নারী অধিকার বিষয়ক সহযোগী পরিচালক হিদার বার বলেছেন, “তালেবানের নির্দেশনা নারীদের স্বাধীনভাবে কোথাও চলাচল করতে পারার সুযোগ বন্ধ করে দিয়েছে। এমনকী বাড়িতে সহিংসতার শিকার হলেও তারা পালিয়ে কোথাও যেতে পারবে না।”