পুরান ঢাকায় আক্রান্ত অর্ধ শতাধিক, মৃত্যু ৮ জনের
ঢাকায় নভেল করোনাভাইরাস রোগী বাড়তে থাকার মধ্যে ঘনবসতিপূর্ণ পুরান ঢাকার এলাকাগুলোতে অর্ধ শতাধিক ব্যক্তি আক্রান্ত হয়েছেন, তাদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে আটজনের।
পুরান ঢাকার ১০টি থানা এলাকার মধ্যে শুধু শ্যামপুরে এখনও কেউ আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি।
বাকি নয় থানা মিলিয়ে মোট ৬৬ জন আক্রান্ত হওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে। সবচেয়ে বেশি রোগী শনাক্ত হয়েছে বংশাল ও চকবাজার থানা এলাকায়, ১১ জন করে। এরপরে রয়েছে ওয়ারি ও হাজারীবাগ থানা, ১০ জন করে আক্রান্ত হয়েছে এসব থানা এলাকায়।
মৃতদের মধ্যে সূত্রাপুরে তিনজন, চকবাজারে দুজন এবং ওয়ারি, লালবাগ ও গেন্ডারিয়ার একজন রয়েছেন।
অতি সংক্রামক এই ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে পুরান ঢাকার তিন শতাধিক ভবন ‘লকড-ডাউন’ করা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট থানাগুলোর পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
রোববারও বেশ কয়েকজন করোনাভাইরাস রোগী শনাক্ত হওয়ার তথ্য দিয়েছেন তারা।
বংশাল থানার ওসি শাহীন ফকির বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, রোববারও আলী নেকীর দেউরিতে একজন করোনাভাইরাস রোগী পাওয়া গেছে। ওই এলাকার ২২টি ভবন ইতোমধ্যে ‘লকড ডাউন’ করা হয়েছে।
এখন পর্যন্ত এই থানা এলাকায় ১১ জন কোভিড-১৯ রোগী পাওয়া গেছে জানিয়ে ওসি বলেন, ভাইরাসের বিস্তার রোধে শতাধিক ভবন অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে।
চকবাজার থানার ওসি মওদুত হাওলাদার বলেন, রোববারও নুর ফাত্তাহ লেনে একজন নভেল করোনাভাইরাস আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছে। এখন পর্যন্ত খাজেদ দেওয়ান লেন, উর্দু রোড, ওয়াটার ওয়াস্ক রোডে মোট ১১ জন রোগী পাওয়া গেছে। তাদের মধ্যে দুইজন মারা গেছেন, সুস্থ্ হয়েছেন তিনজন।
ওয়ারি থানা এলাকায় ১০ শনাক্ত এবং তাদের মধ্যে একজনের মৃত্যু হয়েছে বলে ওসি আজিজুল হক জানিয়েছেন।
হাজারীবাগ থানা এলাকায়ও ১০ জন কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হওয়ার কথা জানিয়েছেন ওসি ইকরাম আলী মিয়া। এখানে এখনও কারও মৃত্যু হয়নি। এলাকার অন্তত ১০টি বাড়ি অবরুদ্ধ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
কোতয়ালি থানার ওসি মিজানুর রহমান জানান, তার থানা এলাকায় এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন পাঁচজন। এদের বাইরে চারজন রয়েছেন সন্দেহজনক। এখনও কারও মৃত্যু হয়নি।
মৃত্যু হয়েছে সবচেয়ে বেশি সূত্রাপুরে, যদিও সেখানে আক্রান্তের সংখ্যা অন্যান্য জায়গার চেয়ে কম সাতজন।
সূত্রাপুর থানার ওসি কাজী ওয়াজেদ আলী এলাকার বেশ কয়েকটি ভবন অবরুদ্ধ করে রাখার তথ্য জানিয়েছেন।
গেন্ডারিয়া থানার ওসি মো. সাজু মিয়া জানান, এই এলাকায় চারজন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। তাদের মধ্যে মারা গেছেন একজন।
লালবাগ থানার পরিদর্শক (অপারেশন) আসলাম উদ্দিন বলেন, রোববারও জেএন সাহা রোডে একজন করোনাভাইরাস আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছে। এলাকাবাসী আগে থেকেই ওই এলাকায় চলাচল সীমিত করেছে।
লালবাগ থানা এলাকায় সাতজনের নভেল করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে এবং তাদের মধ্যে একজনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানান তিনি।
ঘনবসতিপূর্ণ কামরাঙ্গীরচরের আবু সাইদের ভিটায় ৪৫ বছর বয়সী এক সবজি বিক্রেতা আক্রান্ত হয়েছেন বলে থানার ওসি মো. মশিউর রহমান জানিয়েছেন।
এদিকে মিরপুরের পশ্চিম শেওড়াপাড়ায় একজন টেলিভিশন সাংবাদিক আক্রান্ত হওয়ায় একটি ভবন অবরুদ্ধ করা হয়েছে বলে মিরপুর থানার ওসি মোস্তাজিজুর রহমান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, তার থানা এলাকায় এখন পর্যন্ত নয়জন কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়েছেন।
শ্যামপুর থানা এলাকায় এখনও কারও করোনাভাইরাস ধরা পড়েনি বলে ওসি মফিজুল আলম জানিয়েছেন।
গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে যে ১৩৯ জনের নভেল করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে, তাদের মধ্যে অর্ধেকই ঢাকার বাসিন্দা বলে আইইডিসিআর জানিয়েছে।