পি কে হালদারসহ পাঁচজন তিনদিনের রিমান্ডে
বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদ অর্জন ও অর্থ পাচারের অভিযোগ পালিয়ে যাওয়া প্রশান্ত কুমার হালদার ওরফে পিকে হালদারকে তিনদিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছেন ভারতের ব্যাঙ্কশাল স্পেশাল সিবিআই আদালত।
শনিবার গভীর রাতে তিনিসহ গ্রেফতার অপর চারজনকে রিমান্ডে নেওয়া হয়।
তাদের সঙ্গে গ্রেফতার নারীকে জেলে পাঠানো হয়েছে।
এর আগে শনিবার দুপুরে ভারতের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) কর্তৃক গ্রেফতার হন পিকে হালদার ও তার পাঁচ সহযোগী। পিকে হালদারের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জন এবং মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগ রয়েছে।
জানা গেছে, গ্রেফতারের পর পি কে হালদারসহ ছয়জনকে ব্যাঙ্কশাল সিবিআই আদালতে হাজির করা হয়। পরে তাদের তিনদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনার অশোকনগরে গা ঢাকা দিয়েছিলেন বাংলাদেশি আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও ব্যাংকের শীর্ষ কর্মকর্তা প্রশান্ত কুমার (পি কে) হালদার । তিনি শিবশংকর হালদার নামে নিজেকে ভারতীয় নাগরিক হিসেবে পরিচয় দিতেন বলেও জানা গেছে।
ভারতে অবস্থানের জন্য তিনি ভোটার কার্ড, আধার কার্ড, প্যান কার্ড, রেশন কার্ডসহ দেশটির বিভিন্ন নথি বানিয়েছিলেন। নিয়মিত ভোট দিতেন, নিযুক্ত ছিলেন সরকারি চাকরিতেও। কিন্তু শনিবার ভারতের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ইডি) হাতে ধরা পড়েন তিনি।
রোববার (১৫ মে) ভারতীয় সময় দুপুর ১২টার দিকে কলকাতার আদালতে তোলার কথা রয়েছে পিকে হালদারসহ তার সঙ্গে গ্রেফতার ব্যক্তিদের। তবে, ভারতে এদিন ছুটির দিন হওয়ায় আসামিদের বিশেষ আদালতে তোলা হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ইডি জানিয়েছে, উত্তর ২৪ পরগনা অশোকনগরে বসবাস করতেন প্রশান্ত কুমার হালদার, তার ভাই গনেশ হালদার, ইমাম হোসেন, স্বপন মৈত্র, উত্তম মৈত্র ও আমানা সুলতানা। আমানা সার্লি হালদার নামধারণ করে সেখানে বসবাস করতেন। তাকেই জেলে পাঠানো হয়েছে। কিন্তু, তাকে কতদিন জেলে রাখা হবে; জানা যায়নি।
ব্যাংক জালিয়াতির ঘটনায় পিকে হালদারের বিষয়ে ২০১৯ সালে রেড অ্যালার্ট জারি করেছিল বাংলাদেশ সরকার। ভারতীয় গোয়েন্দা দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এ সময়ের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে কানাডা, কখনও কলকাতা; আবার কখনো উত্তর ২৪ পরগনা যাতায়াত করেছেন পিকে হালদার। এর মধ্যেই তিনি ভারতীয় নথিগুলো তৈরি করেন। নাম পাল্টে হয়ে যান শিব শংকর হালদার। এ নামে কয়েকবার তিনি বাংলাদেশেও যাতায়াত করেন।
চলতি বছরের মার্চের শেষে যশোরের বেনাপোল হয়ে উত্তর ২৪পরগনা অশোকনগরে চলে যান পিকে হালদার। তখনই ভারতীয় গোয়েন্দাদের নজরে আসেন তিনি। তার ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে অর্থ আত্মসাতের বিষয়টি নিশ্চিত হয় গোয়েন্দা সদস্যরা। আর্থিক বিষয় হওয়ায় দেশটির ইডি’র কাছে এ সম্পর্কিত নথি পাঠায় গোয়েন্দা দপ্তর। তাদের তদন্তের ধারাবাহিকতায় গ্রেফতার হন পিকে হালদার ও তার সহযোগীরা।