পাপিয়ার দুই সহযোগী ফের রিমান্ডে
দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক
নরসিংদীর জেলা যুব মহিলা লীগের বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক শামীমা নূর পাপিয়ার দুই সহযোগীকে ফের তিন দিন করে রিমান্ডে নেওয়ার অনুমতি দিয়েছেন আদালত। রবিবার ঢাকা মহানগর হাকিম আশেক ইমাম রিমান্ডের এ আদেশ দেন। আসামিরা হলেন- সাব্বির খন্দকার ও শেখ তায়্যিবা নূর। এর আগে এ মামলায় আসামিদের ৫ দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
বিমানবন্দর থানার মামলায় তদন্ত কর্মকর্তা র্যাব-১ এর সহকারী পুলিশ সুপার মো. সালাউদ্দিন গত ১১ মার্চ পাপিয়া, তার স্বামী মফিজুর রহমান ওরফে সুমন চৌধুরীসহ এ দুই আসামির ১০ দিন করে রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করেন। ওই দিন আদালত পাপিয়া ও তার স্বামীর রিমান্ড মঞ্জুর করেন। কিন্তু এ দুই আসামিকে কারাগার থেকে আদালতে হজির না করায় রিমান্ড শুনানি পিছিয়ে যায়।
রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, পাপিয়া ও তার স্বামীকে দেশীয় ও বিদেশি মুদ্রার উৎস সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তারা সন্তোষজনক জবাব দিতে পারেননি। পাপিয়া, সুমন ও সাব্বির তায়্যিবার সহযোগিতায় ও পরস্পর যোগসাজসে জ্ঞাতসারে জাল মুদ্রা বাজারজাত করার উদ্দেশ্যে বহন, বিপুল পরিমাণ সংঘবদ্ধ অপরাধলব্ধ অর্থ পাচারের উদ্যোগ গ্রহণ করে অপরাধ করেছে মর্মে সাক্ষ্য প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে। আসামিদের নাম-ঠিকানা যাচাই, জাল টাকাসহ বিপুল পরিমাণ অবৈধ অর্থ ও বৈদেশিক টাকার উৎসের অনুসন্ধান, জাল টাকা তৈরিতে এবং দেশের অর্থ পাচারের কাজে জড়িত সংঘবদ্ধ অপরাধী চক্রের সদস্যদের শনাক্তকরণ, অবস্থান নির্ণয় ও গ্রেফতার, অপরাধ জগতে আসার কারণ এবং পেছনের শক্তির সন্ধান, অবৈধ মাদক ও অস্ত্রের ব্যবহার, চোরাচালান, অর্থের বিনিময়ে জমির দখল-বেদখল, অনৈতিক ব্যবসাসহ নানাবিধ অপরাধমূলক কাজের তথ্য-উপাত্ত উৎঘাটন ও যাচাই-বাছাই করণ ও উদ্ধার বিদেশি পিস্তল ও গুলি কীভাবে ক্রয়-বিক্রয় করে থাকে, পিস্তল কোথায় কী ধরনের কাজে ব্যবহৃত হয়, পিস্তল চোরাচালানের মাধ্যম/রুট এবং চোরাচালান চক্রের সদস্যদের শনাক্তকরণের জন্য রিমান্ড প্রয়োজন।
এর আগে, পাপিয়া ওরফে পিউসহ ওই চারজনকে ২২ ফেব্রæয়ারি ঢাকার শাহজালাল বিমানবন্দর এলাকা থেকে গ্রেফতার করে র্যাব। সে সময় তাদের কাছ থেকে সাতটি পাসপোর্ট, ২ লাখ ১২ হাজার ২৭০ টাকা, ২৫ হাজার ৬০০ টাকার জাল নোট, ৩১০ ভারতীয় রুপি, ৪২০ শ্রীলঙ্কান রুপি ও সাতটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।
র্যাবের পক্ষ থেকে বলা হয়, পাপিয়া গুলশানের ওয়েস্টিন হোটেলের ‘প্রেসিডেনশিয়াল স্যুইট’ ভাড়া নিয়ে ‘অসামাজিক কার্যকলাপ’ চালিয়ে যে আয় করতেন, তা দিয়ে হোটেলে বিল দিতেন কোটি টাকার উপরে। ওয়েস্টিনের ওই প্রেসিডেনশিয়াল স্যুইট এবং ইন্দিরা রোডে পাপিয়াদের দুটি অ্যাপার্টমেন্টে অভিযান চালিয়ে একটি বিদেশি পিস্তল, ২০ রাউন্ড গুলি, পাঁচ বোতল মদ, ৫৮ লাখ ৪১ হাজার টাকা, পাঁচটি পাসপোর্ট ও কিছু বিদেশি মুদ্রা উদ্ধার করার কথা জানায় র্যাব। পরে পাপিয়াসহ গ্রেফতার চারজনের বিরুদ্ধে বিমানবন্দর থানায় জাল মুদ্রা উদ্ধারের একটি মামলা হয়। এছাড়া অস্ত্র ও মদ উদ্ধারের ঘটনায় রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় আরও দুটি মামলা করা হয় পাপিয়া ও তার স্বামীর বিরুদ্ধে।