পানি-বিদ্যুতের বাড়তি দাম মানুষ মানবে না: ফখরুল
বিদ্যুৎ-পানির দাম বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত থেকে সরকারকে সরে আসার আহ্বান জানিয়েছে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, অন্যথায় গণআন্দোলনের তোড়ে সরকার ভেসে যাবে।
পানি-বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রতিবাদে মঙ্গলবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক মানববন্ধন কর্মসূচিতে তিনি বলেন, “আপনারা দেখেছেন পানির দাম কমপক্ষে দশবার বেড়েছে এবং সেই পানি মুখে দেওয়া যায় না, খাওয়া যায় না। বিদ্যুতের দাম আগে আট বার বেড়েছে। কারণ কী? এই যে কুইক রেন্টাল পাওয়ার প্ল্যান্টের নামে তারা যে সমস্ত লুট করেছে, প্রতিদিন লুট করছে তার ভর্তুকি দেওয়ার জন্য জনগণের পকেট কেটে বিদ্যুতের দাম বাড়াচ্ছে।
“যখন দ্রব্যমূল্য বাড়ছে, চালের দাম বাড়ছে, পেঁয়াজের দাম বাড়ছে, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বাড়ছে, লবণের দাম বাড়ছে, কাপড়ের দাম বাড়ছে, বাড়ি ভাড়া বাড়ছে তখন বিদ্যুতের দাম বাড়িয়ে, পানির দাম বাড়িয়ে নিম্নবিত্ত, মধ্যবিত্ত মানুষকে কটা চরম অসহায়ত্বের মধ্যে ফেলে দিয়েছে এই সরকার।”
সরকারি দলের জনগণের দুঃখ-দুদর্শা বোঝার ক্ষমতা নেই মন্তব্য করে ফখরুল বলেন, “তাদের সাধারণ সম্পাদক বলছেন, বিদ্যুতের দাম অতি সামান্য বৃদ্ধি পেয়েছে। তিনি জনগণকে বলেছেন তারা যেন এটা মেনে নেয়। জনগণ মেনে নেবে না। আপনারা গত ১২ বছর ধরে জনগণের ওপর যে অত্যাচার-নিপীড়ন-নির্যাতন-হত্যার স্টিম রোলার চালাচ্ছেন জনগণ কখনই তা মেনে নেবে না।”‘পুতুল সরকার’
সরকারের পররাষ্ট্রনীতির সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, “এরা নতজানু সরকার, পুতুল সরকার। তাদেরকে দিয়ে জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণ হবে না। আমাদের স্বাধীনতার এই মাসে আমরা বলতে চাই, এই স্বাধীনতাকে তারা (সরকার) রক্ষা করতে পারবে না, এই স্বাধীনতাকে তারা বিক্রি করে দিচ্ছে।”
তিনি বলেন, “আপনারা দেখবেন আমাদের পররাষ্ট্রনীতিকে, তারা সর্বনাশ করে ফেলেছে। এই যে রোহিঙ্গা সমস্যা আজ পর্যন্ত সরকার এই সমস্যার সমাধান করতে পারে নাই, পৌনে দুই বছর হয়ে গেল। অবশ্য অনেকে বলে রোহিঙ্গা সমস্যা তারা নিজেরাই জিইয়ে রেখেছে। এটা দিয়ে তাদের লাভ হয়। পশ্চিমা বিশ্বের একটা সমর্থন পাওয়া যায়, এইড আসে, সাহায্য আসে, সেটা থেকে কিছু ভাগ-বাটোয়ারাও পাওয়া যায়।”
“অন্যদিকে আজকে আমার সীমান্তে মানুষ হত্যা করা হয়, সেই হত্যা বন্ধ করবার জন্য কোনো কার্যকরী ব্যবস্থা তারা গ্রহণ করেনি। সীমান্ত দিয়ে যে নদীগুলো ভারত থেকে আমাদের দেশে এসেছে সেই নদীগুলোর পানির কোনো ব্যবস্থা আমরা এখন পর্যন্ত পাইনি। তিস্তা নদীর পানির ব্যবস্থা করতে পারেনি। অথচ ফেনী নদীর পানি আমরা দিয়ে দিয়েছি, কানেকটিভি দিয়েছি, পোর্ট ব্যবহার করতে দিয়েছি। সবকিছু দিয়েছি।”
এ সময় তিনি খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিও তোলেন।
মানববন্ধনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান বলেন, “এই সরকার বিদ্যুৎ-পানি-গ্যাসের দাম বাড়িয়েছে। তারা হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট করেছে, মানি লন্ডারিং করেছে, তারা দুর্নীতির মাধ্যমে দরিদ্র জনগণের ট্যাক্সের টাকা সরিয়ে নিয়েছে। যে প্রজেক্ট করতে ১০০ কোটি টাকা লাগে, মেগা প্রজেক্টের নামে সেই প্রজেক্ট তারা এক হাজার কোটি টাকার বানিয়েছে। বাকী ৯০০ কোটি টাকা কাদের পকেটে যাচ্ছে জনগণ সেটা জানতে চায়।”মানববন্ধনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান, কেন্দ্রীয় নেতা এজেডএম জাহিদ হোসেন, হাবিবুর রহমান হাবিব, খায়রুল কবির খোকন, ফজলুল হক মিলন, মীর সরফত আলী সপু প্রমুখ বক্তব্য দেন।