পাটে লোকসান শুনতে চাই না: প্রধানমন্ত্রী
বাংলাদেশের পাটজাত পণ্যকে কীভাবে লাভজনক করা যায়, সেই পথ খোঁজার তাগিদ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেছেন, “পাট এমন একটি পণ্য যে তার কিছুই ফেলা যায় না। সেটার কেন লোকসান হবে। আমরা লোকসান শুনতে চাই না। এটাকে লাভজনক কীভাবে করা যায়, কীভাবে করতে হবে- সেটা দেখতে হবে।”
জাতীয় পাট দিবস উপলক্ষে বুধবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, “আমাদের দেশের প্রয়োজন কী, চাহিদাটা কত- সেটাও আমাদের বের করতে হবে। নতুন নতুন পণ্য বের করে অবশ্যই এটাকে আমরা লাভজনক করতে পারব। এটা আমি বিশ্বাস করি।”
প্রধানমন্ত্রী বলেন, কৃষিজাত পণ্য হিসেবে পাট পণ্য একটি প্রণোদনা পেতে পারে। আবার রপ্তানিমুখী পণ্য হিসেবেও পাটজাত পণ্য প্রণোদনা পেতে পারে। পাটজাত পণ্যের রপ্তানি কীভাবে বাড়ানো যায়, সেদিকে নজর দিতে হবে।
“পরিবেশবান্ধব পণ্য হিসেবে একে ব্র্যান্ডিং করতে হবে। তাহলে বিরাট মার্কেট আমরা পেয়ে যাব এবং এতে পাট থেকে আরও ব্যাপকভাবে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা যাবে।”
বিএনপির আমলে পাটশিল্পকে নিরুৎসাহিত করার কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, তিনি ‘হতাশ পার্টির’ সঙ্গে নেই; সব সময় তিনি আশাবাদী।
“আগে যাদের পাটের মিল ছিল তারা হতাশ ছিলেন। এখন আবার আস্তে আস্তে তারা উৎসাহিত হচ্ছেন। আমি চাই আরও উদ্যোক্তা এগিয়ে আসুক।”যেসব পাটকল এখনো পরিত্যক্ত অবস্থায় আছে, প্রাইভেট-পাবলিক পার্টনারশিপের মাধ্যমে সেগুলো চালানোর কথাও অনুষ্ঠানে বলেন সরকারপ্রধান।
পাটপণ্যের রপ্তানি বাড়াতে নতুন বাজার খোঁজার পাশাপাশি পাটের বহুমুখী ব্যবহার নিশ্চিত করার তাগিদ দিয়ে তিনি বলেন, “এই সোনালী আঁশ আমাদের বাঁচিয়ে রাখতে হবে। পাটকে আরও কীভাবে আমরা কাজে লাগাতে পারি সেই চেষ্টা করে যাচ্ছি।”
বাংলাদেশের ইতিহাসে পাটের গুরুত্বের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “পাট আমাদের এমন একটা পণ্য, যুগ যুগ ধরে যার জন্য সংগ্রাম হয়েছে। মহান মুক্তিযুদ্ধে বা ৭০ এর নির্বাচনেও পাট ও পাট পণ্যের কথা এসেছে।
“৭৫ এর পর যা হয়েছে তা সবচেয়ে দুর্ভাগ্যজনক। সেই সময় যারা ক্ষমতায় এসেছিল.. যারা সংবিধান লংঘন করে অবৈধভাবে ক্ষমতায় এসেছিল.. তাদের মধ্যে একটা বৈমাত্রেয় আচরণ পাটের প্রতি ছিল। তারা যেন পাট শিল্পটাকে ধ্বংস করার জন্য উঠেপড়ে লেগেছিল। অথচ এটা ছিল বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের পথ।”
শেখ হাসিনা বলেন, “পাট ও পাটপণ্যকে আমাদের টিকিয়ে রাখতে হবে এ কারণে যে, এর সাথে কৃষক জড়িত। আমাদের দেশের মানুষের ভাগ্য জড়িত।”পাট ও বস্ত্র মন্ত্রী গাজী গোলাম দস্তগীর, পাট ও বস্ত্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান মির্জা আজমসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।