May 6, 2024
জাতীয়লেটেস্টশীর্ষ সংবাদ

পাটকলগুলো সরকারিভাবে চালু না করার পরামর্শ

দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক
দেড় বছর আগে রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলগুলো বন্ধের সময় পুনরায় চালু করার প্রতিশ্রুতি সরকারের পক্ষ থেকে দেওয়া হলেও সরকারিভাবে চালুর কোনো প্রয়োজন দেখছে না সংসদীয় একটি কমিটি। সংসদের অনুমিত হিসাব কমিটি বলেছে, এসব পাটকল চালু করে ‘সরকারের অর্থ অপচয়ের যৌক্তিকতা নেই’। সোমবার সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের প্রকল্প নিয়ে আলোচনা হয়। করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে ২০২০ সালের ১ জুলাই লোকসানে থাকা দেশের রাষ্ট্রায়ত্ত সব পাটকল বন্ধ করে দেয় সরকার।
সরকারের তরফ থেকে বলা হয়, ধারাবাহিকভাবে লোকসানে থাকা এসব রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলের পুঞ্জীভূত দেনা বাড়তে থাকায় বন্ধ করা ছাড়া উপায় ছিল না। বন্ধ পাটকলগুলো পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপের (পিপিপি) আওতায় আধুনিকায়ন করে ছয় মাসের মধ্যে নতুন করে চালু করার পরিকল্পনার কথা তখন বলা হয়েছিল। তবে সম্প্রতি পাঁচটি পাটকল ইজারা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় বিজিএমসি।
শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটি এর আগে আধুনিকায়ন ও সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে পাটকলগুলো সচল করার সুপারিশ জানিয়েছিল। কিন্তু অনুমিত হিসাব কমিটির ভিন্ন পরামর্শের ব্যাখ্যায় এই কমিটির সভাপতি আব্দুস শহীদ বলেন, নতুন করে সরকারিভাবে পাটকল চালু হবে কী হবে না, এই নিয়ে অনেক প্রশ্ন এসেছে। আমরা বলেছি, এগুলো চালু হবে কি না, সেটা সরকারের সিদ্ধান্তের বিষয়। তবে আমরা মনে করি, যেগুলো লাভজনক নয়, তা চালু করে সরকারের অর্থ অপচয় করার কোনো যৌক্তিকতা নেই।
এই সংসদীয় কমিটির বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন কমিটির সদস্য নূর-ই-আলম চৌধুরী, ইউসুফ আব্দুল্লাহ হারুন, এবি তাজুল ইসলাম, আহসান আদেলুর রহমান, ওয়াসিকা আয়শা খান ও খাদিজাতুল আনোয়ার। এই বৈঠক নিয়ে সংসদ সচিবালয়ের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বৈঠকে সরকারিভাবে পরিচালিত বস্ত্র কল পরিচালনার বিষয়েও সতর্কতা অবলম্বনের নির্দেশনা দেওয়া হয়।
অনুমিত হিসাব কমিটির সোমবারের বৈঠকে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন প্রকল্প নিয়েও আলোচনা হয়। গ্রামীণ সড়কে ব্রিজ-কালভার্ট নির্মাণ নিয়ে কমিটির সভাপতি শহীদ বলেন, প্রকল্পে ১৫ মিটার অর্থাৎ ৪৫ ফুট সেতু নির্মাণের কথা বলা হয়েছে। কিন্তু যে জায়গায় সেতু হচ্ছে সেখানকার রাস্তা আছে ছয় ফুট। রাস্তার সঙ্গে সামঞ্জস্য নেই। এজন্য আমরা পরিসংখ্যান ব্যুরোর সহযোগিতা নিয়ে একটি কারিগরি রিপোর্ট করে দুই মাসের মধ্যে কমিটিতে পাঠাতে বলেছি। দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে মুজিবকেল্লার নির্মাণ কাজে অগ্রগতি কম হওয়ায়ও হতাশা প্রকাশ করেছে সংসদীয় কমিটি।
কমিটির সভাপতি শহীদ বলেন, ছোট ছোট হলেও কিছু প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে ফিজিবিলিটি স্টাডি না করে। আমাদেরও মনে হয়েছে এগুলো জনস্বার্থে কার্যকর হবে না। কিছু প্রকল্পের বাস্তবায়নকাল শেষ হলেও কিন্তু বাস্তবায়ন পাঁচ শতাংশ হয়নি। মন্ত্রণালয়ও যুক্তি দেখিয়েছে। তারা বলেছে, এগুলো প্রয়োজন ছাড়াই সিদ্ধান্ত হয়েছে। আমরা রিওয়ার্ড ও পাশিনমেন্টের সুপারিশ করেছি। বলেছি কেউ দোষ করলে তাকে শাস্তির আওতায় আনতে, আবার কেউ ভালো কাজ করলে তাকে পুরস্কৃত করতে।
কমিটি দুর্যোগ মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় পর্যায়ের কর্মকর্তাদের যানবাহন দেওয়ার সুপারিশ করেছে। এর পক্ষে যুক্তি দেখিয়ে শহীদ বলেন, এসি ল্যান্ড, ইউএনও, কৃষি কর্মকর্তারা গাড়ি পেলে তারা পাবেন না কেন? তারা তো সারা দিনই কাজ করেন।

দক্ষিণাঞ্চল প্রতিদিন/ জে এফ জয়

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *