পাকিস্তান সমর্থিত সন্ত্রাসীদের হাতে কাশ্মীরিরা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত
ভারতে শান্তি বিঘ্নিত করতে নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলওসি) বরাবর অব্যাহতভাবে ইসলামাবাদ সহিংসতাকে প্ররোচিত করেছে বলে অভিযোগ করেছেন খোদ পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের প্রবাসী রাজনৈতিক নেতাকর্মীরা।
জম্মু ও কাশ্মীরের জনগণ যখন ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিলের প্রথম বার্ষিকী পালন করছে; এমন সময়ে লন্ডনে আয়োজিত এক ওয়েবিনারে এই অভিযোগ করেছেন পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের প্রবাসী নেতারা।
ইউনাইটেড কাশ্মীর পিপলস ন্যাশনাল পার্টির (ইউকেপিএনপি) চেয়ারম্যান সরদার শওকত আলী কাশ্মীরি বলেন, পাকিস্তানের তথাকথিত কাশ্মীরিদের পক্ষের সংগ্রামে খোদ কাশ্মীরিরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত ও তারাই সর্বাধিক পরাজিত হয়েছে।
শওকত আলী কাশ্মীরি আরও বলেন, ১৯৬৫ সালে পাকিস্তান ‘অপারেশন জিব্রাল্টার’ শুরু করে। পাকিস্তানি গেরিলা সেনারা কাশ্মীরে অনুপ্রবেশ করে এবং এর ফলে শেষ পর্যন্ত পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হয়। সেই যুদ্ধে পাকিস্তান জঘন্যভাবে পরাজিত হয় এবং কাশ্মীরজয়ে ব্যর্থ হয়। এরপর ১৯৮৮ সালে আবার পাকিস্তান ‘অপারেশন টোপ্যাক’ নিয়ে আসে।
তিনি আরও বলেন, এই সমস্ত যুদ্ধ মূলত জম্মু ও কাশ্মীরের জনগণের বিরুদ্ধে ছিল এবং সন্ত্রাসবাদকে এই প্রক্রিয়ায় জোর করে প্ররোচিত করা হয়েছিল। ১৯৮৮ সাল থেকে কাশ্মীরে যা কিছু সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চলছে তার সবই ‘অপারেশন টোপ্যাক’-এর অংশ।
আজ পাকিস্তান আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদের কেন্দ্রস্থল হয়ে উঠেছে এবং বহুবার, তাদের নেতারা প্রকাশ্যে স্বীকার করেছেন যে, তারা সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলিকে প্রশিক্ষণ দেয় এবং তাদের সম্পদ হিসাবে ব্যবহার করে। আর সমস্ত কিছুই রাষ্ট্রের সামরিক একনায়কদের তত্ত্বাবধানে করা হয়।
পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের আরেক রাজনৈতিক কর্মী নাসির আজিজ খান ওয়েবিনারে বলেন, এটা একটা ‘ওপেন সিক্রেট’ বিষয় কোথায় জঙ্গি ও চরমপন্থি দলগুলি প্রশিক্ষণ নেয়। পাকিস্তানের সাবেক রাষ্ট্রপতি ও সামরিক স্বৈরাচার পারভেজ মোশাররফ নিজেই স্বীকার করেছেন যে, তারা এই গোষ্ঠীগুলিকে প্রশিক্ষণ দিয়েছে এবং সীমান্তের ওপাড়ে পাঠিয়েছি।
এমনকি পারভেজ মোশাররফ এটাও উল্লেখ করেছিলেন যে, পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা ও বৈদেশিক নীতিতে বেসামরিক সরকারের কোন কর্তৃত্ব নেই, সরকার সেনাবাহিনী দ্বারা পুরোপুরি নিয়ন্ত্রিত এবং এটা গত ৭৩ বছর ধরে চলে আসছে।
বহু বছর ধরেই জম্মু ও কাশ্মীর এবং গিলগিত বাল্টিস্তান অঞ্চলে সন্ত্রাসবাদ, চরমপন্থা ও ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা ছড়িয়ে দেওয়া পাকিস্তানের শয়তানি কর্মসূচির শীর্ষে রয়েছে।
তবে পরিহাসের বিষয় হলো, পাকিস্তান সীমান্তে সন্ত্রাসবাদকে সামরিক, আর্থিক ও যৌক্তিক সমর্থন দিয়ে আসছে কাশ্মীরি জনগণের পক্ষে স্বাধীনতা সংগ্রামের নামে।
২০১৯ সালের ৫ আগস্ট থেকে জম্মু ও কাশ্মীর ভারতের কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হয়ে উঠেছে, শান্তি ও উন্নয়নই সেখানকার যুবকদের নতুন মন্ত্র। তবে জম্মু ও কাশ্মীরে অস্থিতিশীলতা তৈরি করতে পাকিস্তান সর্বতোভাবে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।