পাকিস্তানে আবাসিক এলাকায় উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত, নিহত অন্তত ৭৬
করাচির আবাসিক এলাকায় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের (পিআইএ) একটি উড়োজাহাজ বিধস্ত হয়ে অন্তত ৭৬ জনের মৃত্যু হয়েছে
পিআইএর মুখপাত্র আবদুল সাত্তারের বরাত দিয়ে দেশটির ইংরেজি সংবাদমাধ্যম ডন জানিয়েছে, লাহোর থেকে ছেড়ে আসা ফ্লাইট পিকে ৮৩০৩ করাচির জিন্নাহ ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টে নামার সময় কাছের একটি আবাসিক এলাকায় বিধ্বস্ত হয়।
এয়ারবাস এ-৩২০ উড়োজাহাজটিতে ৯১ জন যাত্রী এবং ৮ জন ক্রু ছিলেন। এ দুর্ঘটনায় অন্তত ৭৬ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন প্রাদেশিক স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা।
অন্তত দুইজন যাত্রী বেঁচে গেলেও আরও অনেকের মৃত্যুর আশঙ্কা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তারা।
দুর্ঘটনার পরপরই সেনাবাহিনীর উদ্ধারকর্মীরা সেখানে পৌঁছে কাজ শুরু করেছে বলে পাকিস্তান আইএসপিআরের তরফ থেকে জানানো হয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আসা ভিডিও ও ছবিতে দেখা গেছে, ওই আবাসিক এলাকার ওপর দিয়ে কালো ধোঁয়া উড়ছে। ঘটনাস্থলে ছুটে যাচ্ছে অ্যাম্বুলেন্স। সেখানে বেশ কয়েকটি বাড়ি ধ্বংস হয়েছে।
উড়োজাহাজটি মডেল কলোনি নামে পরিচিত ওই আবাসিক এলাকার যে যায়গায় বিধ্বস্ত হয়েছে, সেখানে ধ্বংসস্তুপের ছবি এসেছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলোতে।
পাকিস্তান বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেছেন, উড়োজাহাজটি অবতরণের ঠিক আগে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে চাকা খুলতে পারছিল না।
পিআইএ’র প্রধান নির্বাহী এয়ার ভাইস মার্শাল এরশাদ মালিক জানান, পাইলট ট্রাফ্রিক কন্ট্রোল রুমে ওই যান্ত্রিক ত্রুটির কথা জানিয়েছিলেন। এরপর এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলের সঙ্গে উড়োজাহাজটির সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
সিন্ধু প্রদেশের স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা বলেছেন, যেসব মরদেহ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে, তারা সবাই ওই উড়োজাহাজের আরোহী ছিলেন, না আবাসিক এলাকার বাসিন্দারাও আছেন- তা জানা যায়নি।
উড়োজাহাজটি কি কারণে বিধ্বস্ত হল তাও এখনো নিশ্চিত করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। করোনাভাইরাসের মহামারীতে বেশ কিছুদিন বন্ধ রাখার পর পাকিস্তানে বাণিজ্যিক ফ্লাইট শুরু হওয়ার কয়েক দিনের মধ্যেই এ দুর্ঘটনা ঘটল।
এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, বিকট শব্দ শুনে তিনি বাড়ির বাইরে বেরিয়ে গিয়েছিলেন। কমপক্ষে চারটি বাড়ি তিনি পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে হয়ে যেতে দেখেছেন। প্রচুর আগুন ও ধোঁয়া উড়ছিল। প্রতিবেশীদের বাড়িঘরেই আগুন জ্বলতে দেখার কথা বলেছেন তিনি।
২০১০ সালে ইসলামাবাদে প্রাইভেট এয়ারলাইনস এয়ারব্লুর এক বিমান দুর্ঘটনায় ১৫২ যাত্রীর সবাই নিহত হন। পাকিস্তানের ইতিহাসে সেটি ছিল সবচেয়ে প্রাণঘাতী দুর্ঘটনা।
এরপর ২০১২ সালে রাওয়ালপিণ্ডিতে খারাপ আবহাওয়ার মধ্যে বোয়িং ৭৩৭-২০০ দুর্ঘটনায় উড়োজাহাজটির ১২১ জন যাত্রী ও ৬ ক্রুর সবাই নিহত হন।
২০১৬ সালে পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের উড়োজাহাজ ইসলামাবাদে যাওয়ার পথে তাতে আগুন ধরে বিস্ফোরণ ঘটে, নিহত হন ৪৭ জন।