পাইলটকে ভারতে হস্তান্তর, স্বাগত জানাতে মানুষের ঢল
দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক
আটক ভারতীয় বিমান বাহিনীর উইং কমান্ডার অভিনন্দন বর্তমানকে ওয়াগা সীমান্তে ভারতের হাতে তুলে দিয়েছে পাকিস্তান। তাকে স্বাগত জানাতে সীমান্তে ভিড় করেছে কয়েকশ’ মানুষ। স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত হয়ে উঠেছে সীমান্ত এলাকা। সবাই অধীর আগ্রহে অভিনন্দনের সীমান্ত পেরিয়ে ফিরে আসার অপেক্ষায় আছেন।
আনন্দবাজার পত্রিকা জানিয়েছে, শুক্রবার বিকেল সাড়ে চারটা নাগাদ পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর একটি গাড়িবহরে করে ওয়াঘা সীমান্তে নিয়ে আসা হয় অভিনন্দনকে। সেখানে অভিনন্দনের ডাক্তারি পরীক্ষার পর ভারতের হাতে তুলে দেওয়া হয় তাকে।
অভিনন্দনকে ফিরিয়ে দিতে পাকিস্তান কর্তৃপক্ষ এদিন সকালে ইসলামাবাদ থেকে সড়কপথে তাকে লাহোরে নিয়ে যায়। সেখান থেকেই তাকে নেওয়া হয় ওয়াগা-আতারি সীমান্তে। এরপর অমৃতসর হয়ে দিলিতে ফেরার কথা রয়েছে অভিনন্দনের।
ছেলেকে আনতে ওয়াগা সীমান্তে সকালেই পৌঁছেছেন অভিনন্দনের বাবা অবসরপ্রাপ্ত এয়ার মার্শাল এস বর্তমান এবং মা শোভা বর্তমান। ভারতীয় বিমান এবং সেনা বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তারাও সীমান্তে পৌঁছেছেন। অভিনন্দনের দেশে ফেরাকে ঘিরে চূড়ান্ত সতর্কতা জারি করা হয়েছে সেখানে।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী শুক্রবার অভিনন্দনের প্রশংসা করে বলেছেন, প্রত্যেক ভারতীয়ের গর্ব করা উচিত যে বাহাদুর উইং কম্যান্ডার অভিনন্দন তামিলনাড়–র ছেলে। তিনি আরো বলেন, গত কয়েকদিনের ঘটনাবলী আমাদের জাতিকে একে অপরের আরো কাছে এনেছে। দেশ যেভাবে আমাদের সশস্ত্র বাহিনীকে সমর্থন করেছে তা অসাধারণ এবং এজন্য আমি প্রতিটি ভারতীয় নাগরিককে কুর্নিশ করছি।
পাকিস্তান বুধবার ভারতীয় বিমানবাহিনীর একটি বিমান ভূপাতিত করার দাবি করার পর বিমানটির উইং কমান্ডার অভিনন্দনকে আটক করে। অভিনন্দনের একটি ভিডিও প্রকাশ করে পাকিস্তানের আইএসপিআর। এরপর ভারত সরকার এক বিবৃতিতে তাকে দ্রুত এবং নিরাপদে ফিরিয়ে দেওয়ার আহŸান জানায়।
এই পরিপ্রেক্ষিতে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয় প্রথমে জানায়, অভিনন্দনকে ফিরিয়ে দিলে যদি সংঘাত এড়ানো যায় তাহলে তারা তাকে ফেরত দেবে। পরে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানও শান্তির বার্তা দিতে পাইলটকে শুক্রবারেই মুক্তি দেওয়ার ঘোষণা দেন।
একটি মাত্র সিদ্ধান্ততেই নাটকীয় মোড় নিয়েছে কাশ্মীর ইস্যু। অভিনন্দনকে ফেরানোর সিদ্ধান্তে যেন রাতারাতি ‘হিরো’ হয়ে উঠেছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। স্যোশাল মিডিয়ায় অনেকেই তার প্রসংশা করছেন। ইমরানকে ‘প্রকৃত রাষ্ট্রনায়ক’ হিসেবেও বর্ণনা করেছেন অনেকে। অন্যদিকে নানা প্রশ্ন আর সমালোচনা ঝড়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর অবস্থা হয়েছে ভিলেনের মতোই।
গত কয়েকদিনে যে যুদ্ধ যুদ্ধ অবস্থা চলেছে আর এ নিয়ে মানুষের যে উচ্ছ¡াস দেখা গেছে তা ভারতে লোকসভা ভোটের আগে মোদীর ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) জনসমর্থন বাড়ারই লক্ষণ বলে মনে করা হচ্ছিল। কিন্তু এখন পরিস্থিতি যেভাবে ভিন্ন মোড় নিল তাতে নিজ দেশেই মোদীকে সমালোচনার শিকার হতে হচ্ছে। ক্ষমতা আঁকড়ে রাখার চেষ্টায় আসন্ন নির্বাচনে ভোট বাগাতে যুদ্ধের রাজনীতির অভিযোগ করা হচ্ছে তার বিরুদ্ধে।