পাইপলাইন ভালো, ভবিষ্যৎ নিয়ে হতাশ নন পাপন
ঘরের মাঠে আফগানিস্তানের মত নবাগত টেস্ট প্লেইং দেশের কাছে লজ্জ্বাজনক হারের পর সবাই লা জবাব হয়ে গিয়েছিল। বাংলাদেশের ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ যে অন্ধকারে, সেটাও অনেকে রায় দিয়ে ফেলেছিলেন।
এরপর করোনার থাবা, দীর্ঘ বিরতির পর আবারও খেলা শুরু হলো। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে ৩-০ ব্যবধানে জিতলেও টেস্টে গিয়ে নিশ্চিত জয়ের ম্যাচ হেরে আবারও সমালোচনার জন্ম দিলো টাইগাররা। শেষ পর্যন্ত সিরিজ হোয়াইটওয়াশ। এরপর নিউজিল্যান্ড গিয়ে সেখানে তুলোধুনো হয়ে আসা, তুমুল সমালোচনার তীরে বিদ্ধ হচ্ছিল বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা।
এরই মধ্যে শ্রীলঙ্কার মাটিতে শুরু হওয়া টেস্ট সিরিজ সেই সমালোচনার লাগাম কিছুটা হলেও টেনে ধরতে সক্ষম হয়েছে। তামিম, শান্ত, মুমিনুল, মুশফিকদের দুর্দান্ত ব্যাটিং বরং প্রশংসা পালেই হাওয়া লাগিয়ে দিলো।
যে কারণে দেখা গেলো বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনেরও সুর চওড়া। আজ কুর্মিটোলা জেনালের হাসপাতালে সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে দলের অতীত-বর্তমান-ভবিষ্যৎ নিয়ে কথা বলেছেন বিসিবির বিগ বস।
সেখানেই নাজমুল হাসান পাপনের মুখে আশাবাদী উচ্চারণ, বাংলাদেশ ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ অনেক ভালো। কারণ, পাইপলাইনে অনেক ক্রিকেটার রয়েছে। এরাই বাংলাদেশের ক্রিকেটকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাবে।
এক প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে নাজমুল হাসান পাপন বলেন, ‘ইনফ্যাক্ট আমার কাছে ভাল লাগছে অন্য জিনিস। আমরা যদি নিউজিল্যান্ড সিরিজটি দেখি…, তাহলে হারার পরেও যদি জিজ্ঞেস করি কার খেলা ভাল লেগেছে? তবে অবশ্যই আমি বলব নাইম শেখ, আফিফ, শেখ মেহেদি, শরিফুল, তাসকিন। দেখেন যতগুলো নাম বলছি এক তাসকিন ছাড়া সবাই নতুন।’
শ্রীলঙ্কা টেস্টের উদাহরণ দিয়ে পাপন বলেন, ‘এই শ্রীলঙ্কা টেস্টটাও যদি দেখেন আপনারা, এখন যদি বলি সবচেয়ে ভাল পারফরম্যান্স কার? অবশ্যই সবাই বলবে শান্তর। এই যে আমাদের তরুণ প্রজন্ম তারা যেভাবে খেলছে আমার মনে হয় তাদের ভবিষ্যত ভাল। এর মধ্যে কিন্তু অনেকেই প্রথমবারের মত নিউজিল্যান্ডে গেছে।’
নিউজিল্যান্ডে কিছু কৌশলগত সিদ্ধান্তের কারণে এভাবে দল হেরেছে বলে মনে করেন পাপন। তিনি বলেন, ‘আমরা মন খারাপ করে ফেলি হারল কেন? হারার বিষয়ে বলেছি, অনেকগুলো কারণ আছে। অবশ্যই কৌশলগত সিদ্ধান্তগুলো আমাদের মত হয়নি। কৌশলে অবশ্যই সমস্যা ছিল এবং কম্যুনিকেশন গ্যাপ ছিল।’
আফগানিস্তানের কাছে হারের বিষয়টা নিয়ে ক্ষুব্ধ পাপন নিজেও। তিনি বলেন, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের কথা যদি বলি…, আফগানিস্তান নিয়ে কথাই বলতে চাই না। ওইটা নিয়ে কথাই বলা যায় না। আপনাদের সাথে আমি একমত।’
তাহলে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে এভাবে টেস্ট হারের ব্যাখ্যা কী? জবাবে বিসিবি সভাপতি বলেন, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের কথা যদি বলি, ওদের দেশে গিয়ে আমর ওডিআই, টি-টোয়েন্টি জিতে আসলাম, ট্রাইনেশনে ওদের সাথে চ্যাম্পিয়ন হলাম। বিশ্বকাপে গিয়ে বিশ্বকাপের ইতিহাসে সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জিতে এলাম। এখানেও আমরা ওয়ানডেতে ৩-০ তে অনায়াসেই জিতলাম। টেস্টে হেরে গেছি। টেস্টে নিসন্দেহে বাংলাদেশ দুর্বল।’
পাপান জানালেন, তারা কখনো বলেন নাই যে, ‘আমরা টেস্টেও ভাল হয়েছি। তবে হওয়ার কথা ছিল। আপনাদের বলেছিলাম ২০১৯ এর আমরা টেস্টের ওপরে মনোযোগ দিব।’
পাপনের দাবি বাংলাদেশের পাইপলাইন বেশ সমৃদ্ধ। যে কারণে বাংলাদেশ ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ বেশ ভালো। তিনি বলেন, ‘দ্বিতীয়বার নির্বাচিত হওয়ার পরে বলেছিলাম পাইপলাইন ঠিক করব। অনুর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ দেখেছেন এবং বয়সভিত্তিক খেলাগুলো হচ্ছে। অতএব, অবশ্যই আমাদের পাইপলাইন ভাল।’
নিজেদের পরবর্তী লক্ষ্যের কথা জানিয়ে বিসিবি সভাপতি বলেন, ‘পরবর্তী লক্ষ্য হল, কিভাবে টেস্টে ভাল করা যায়। গত প্রায় দেড়টা বছর কোভিডের কারণ সবকিছু এলোমেলা হয়ে গেল। যে প্রোগ্রাম করেছিলাম কিছুই করতে পারিনি। কিন্তু আমি হতাশ নই। আমাদের যে প্রতিভাধর ক্রিকেটার আছে, টেস্টে ভাল না হওয়ার কারণ নাই। কোভিড ভাল হলে আমরা ভাল করব।’